বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

উপলক্ষ্য

শ্রীমদ্‌ভগবদ্‌গীতায় সাক্ষাৎ ভগবান বলেছেন! কাকে বলেছেন? অর্জুনকে বলেছেন, এই হল উপলক্ষ্য। উপলক্ষ্যটি সকলেই জানেন। মহাভারতের যুগে কুরুক্ষেত্রের সংগ্রামে অর্জুন কৌরবদের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন বলে কৃতসংকল্প হয়েছেন। যাঁরা তাঁর জ্ঞাতি, যাঁরা তাঁর স্বজন তাঁদের সঙ্গে তিনি যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন, এই ইচ্ছায় তিনি কুরুক্ষেত্রের সমরাঙ্গনে আসতে চাইছেন। সেই কুরুক্ষেত্রের সমরাঙ্গনে তিনি যখন আসতে চাইলেন তখন তাঁর সারথ্য করেছিলেন স্বয়ং শ্রীভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাই শ্রীকৃষ্ণকে তিনি অনুরোধ করেছিলেন:
সেনয়োরুভয়োর্মধ্যে রথং স্থাপয় মেহচ্যুত।
“দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে আমার রথকে স্থাপন করো।”
এই অনুরোধ করেছিলেন বলেই সেই কুরুক্ষেত্রের সমরাঙ্গনে রথকে নিয়ে এলেন সারথি। কোথায় নিয়ে এলেন? এ নিয়ে গীতায় নানারকম ব্যাখ্যা আছে। কেউ কেউ যৌগিক ব্যাখ্যা করেছেন, কেউ কেউ মনে করেন কুরুক্ষেত্রের যে যুদ্ধ এটা কোনো ঐতিহাসিক বা বাস্তব ক্ষেত্রের যুদ্ধের কথা গীতা এখানে উল্লেখ করছে না; এটা হল আন্তর-যুদ্ধ, অর্থাৎ প্রত্যেক হৃদয়ের ক্ষেত্রে অসুর ও দেবতার যে যুদ্ধ, সেইটিই এখানে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধরূপে কল্পিত হয়েছে। সে যাই হোক, একটা যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবেশ এখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এ হল একটা সংগ্রামভূমি অর্থাৎ কুরুক্ষেত্র। আবার ধর্মক্ষেত্রও বটে। সেই ধর্ম ও সংগ্রামের পটভূমিকায় গীতার আরম্ভ। সংগ্রামের পটভূমিকা কেন? জীবনে দ্বন্দ্ব আছে, সেটা আমরা যেভাবেই নিই! বাস্তবের দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পাই, অন্তরের দিকে দৃষ্টি দিয়েও দেখতে পাই, দুদিক দিয়েই প্রত্যেক মানুষের জীবন দ্বন্দ্বময়! জীবন মানেই হল দ্বন্দ্ব, জীবন মানেই হল সংগ্রাম। সেই জীবনসংগ্রামের মধ্যে আমরা কী খুঁজছি? শান্তি খুঁজছি। সেই জীবনসংগ্রামে আমরা কী করে শান্তি বা সমতা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, সেই শান্তি বা সমতার বাণীকেই আমরা অন্বেষণ করছি। কিন্তু সেই অন্বেষণ করব কোথায়, কার কাছে? যিনি সেই শান্তির বাণী ঠিক ঠিক আমাদের শোনাতে পারেন, যথার্থ শান্তি এনে দিতে পারেন আমাদের জীবনে, তাঁরই কাছে আমাদের যেতে হবে। তিনিই হলেন আমাদের পরম আশ্রয়স্থল স্বয়ং শ্রীভগবান। সেই দুর্লভ সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন অর্জুন। সেই সমরাঙ্গনে দাঁড়িয়ে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন শ্রীভগবানের কাছেই, এই জীবনসংগ্রামের বা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মধ্যে পথ চেয়েছিলেন, শান্তি খুঁজেছিলেন। গীতার এই পটভূমিকাটি সেইজন্য বিশেষভাবে আমাদের অনুধাবন করা প্রয়োজন। প্রথম অধ্যায়টি আমরা সাধারণত ভালো করে লক্ষ্য করি না; মনে করি প্রথম অধ্যায় শুধুমাত্র বর্ণনামূলক, সেটা পড়বার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু কয়েকটি জিনিস অন্তত বিশেষ করে এখানে লক্ষ্য করবার প্রয়োজন আছে। প্রথম হচ্ছে যিনি শ্রোতা, তাঁর কী রকম অবস্থা।
গোবিন্দগোপাল মুখোপাধ্যায়ের ‘গীতার কথা’ থেকে 

31st     March,   2024
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ