বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

শব্দ

আদ্যাশক্তি ওঙ্কার-প্রণবই হলেন মহাবিশ্বের সাবিত্রীশক্তি বা জননী। এভাবে ‘সৃষ্টির মূলে আছে ওই আকাশের স্পন্দ। স্পন্দটি কারণে শক্তিরূপ, সূক্ষ্মে ভাবরূপ আর স্থূলে শব্দস্বরূপ, যে শব্দ অর্থের দ্যোতক। সব মিলিয়ে স্পন্দটি হল ‘ওম’—যেন বীণার তারে ঝঙ্কারের মত তোমার সত্তায় একটা ঝঙ্কার।’ —শ্রী অনির্বাণ। শ্রী অনির্বাণ আবার বলেছেন, ‘ওম্‌ হল পরমদেবতার আত্মঘোষণা—তাঁর অস্তিত্বের স্পন্দন জীবের কাছে। এই ওম্‌ই আবার Voice হয়ে ফুটছে জীবের কণ্ঠে, প্রকৃতির বিচিত্র শব্দতরঙ্গে।...সবার জবাবে দেবতা বলে চলেছেন—‘ওম্‌।’ মহাকাশে মহাপ্রকৃতিরূপা মহাশক্তি লীন হয়ে বিরাজ করেন। তখন শিবশক্তি অভিন্ন—শিব আত্মারাম মহা সমাহিত। কিন্তু যে মুহূর্তে ‘অহং বহুস্যাং প্রজায়েয়’ আমি বহু হয়ে জন্মাব—এই ইচ্ছার স্পন্দন শিবের অন্তঃসমুদ্রের গভীরতম প্রদেশে জাগে, তখনই যেন পৃথক সত্তারূপে শিবের শক্ত্যংশরূপা অদিতি বা আদ্যাশক্তির আবির্ভাব ও ক্রিয়া সুরু। মহান্ধকার মহাশীতল মহাস্তব্ধ মহাকাশে শক্তির অদৃশ্য অব্যক্ত প্রচণ্ড আলোড়ন চলতে থাকে। মহাকাশের কোথায় কখন কিভাবে মহাশক্তির এই ক্রিয়া সুরু হবে, তা বলা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। মহাকাশের অংশবিশেষ মহাশক্তি নিজ সত্তাকে ক্রমে প্রচণ্ডরূপে সংহত একমুখী ও ক্ষুদ্রপরিসর করে তোলেন। সে এক অদৃশ্য অসীম চাপ ও তাপময় শক্তি, ভাণ্ডার। এভাবেই আবির্ভূত হয় মহাকাশে বিশ্বসৃষ্টির মহাবীজ—যার নাম হল cosmic egg বা মহাজাগতিক অন্ড। প্রচণ্ড চাপ-শক্তির প্রভাবে ঐ মহাজাগতিক অন্ডে ঘটে হঠাৎ মহাবিস্ফোরণ (big bang)। যে তাপ ছিল মহাকাশে অদৃশ্য ও অব্যক্ত তা ব্যক্ত ও দৃশ্য হয়ে পড়ে। যেন একটু ঘর্ষণের প্রকোপে বারুদের স্তুপটি দপ্‌ করে জ্বলে উঠে অথবা অন্ডটির খোলা ভেঙ্গে বিশ্বরূপী মহাকায় শিশুটির ঘটে বাইরের অঙ্গনে আবির্ভাব। জন্মক্ষণে তার তাপ ও তেজ হয় দশ হাজার কোটি ডিগ্রি কেলভিন এবং মুহূর্মুহু লাফিয়ে লাফিয়ে মহাকাশে ঘটে সেই মহাগ্নির কোটি কোটি মাইল বিস্তার। মহাপ্রকৃতির সেই মহাগ্নিময় মূর্ত্তিই হলেন ওঙ্কার-প্রণবের সাক্ষাৎ জ্যোতির্মূত্তি—যে জ্যোতি তাপ তেজ হল যাবতীয় জ্যোতিষ্কের আদি সূচনা। বিশ্ব বা গ্যালাক্সির জন্ম এভাবেই। এভাবেই ওঙ্কারজননী বিশ্বপ্রসবিনী। এজন্যেই তাঁর নাম সবিতা বা আদ্যাজননী। এই ওঙ্কারপ্রণবই অখণ্ডনীয়া আদ্যাশক্তি অদিতির মহাজ্যোতির্মূত্তি। গ্যালাক্সি থেকে নক্ষত্রপুঞ্জ, নক্ষত্ররাজি, নীহারিকা ইত্যাদির আবির্ভাব; পরিশেষে গ্রহ উপগ্রহ ইত্যাদি। এই মহাতেজ মহাজ্যোতিই হলেন প্রণব-ওঙ্কার যার কথা বলতে গিয়ে উপনিষদে ঋষি বারবার ঘোষণা করলেন:—
ন তত্র সূর্য্যো ভাতি ন চন্দ্রতারকম্‌
নেমা বিদ্যুতো ভান্তি কুতো২য়মগ্নিঃ।
তমেব ভান্তমনুভাতি সর্বং
তস্য ভাসা সর্বমিদং বিভাতি।।
—তারকা সূর্য্য চন্দ্র বিদ্যুৎ পৃথিবী অগ্নি ইত্যাদি সেই মহাতেজ মহাজ্যোতির কাছে কিছুই না। 
অযাচকের ‘আকাশব্রহ্ম’ থেকে

10th     September,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ