বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সম্পাদকীয়
 

কাঁপুনি বাড়ছে ক্ষমতার আসনের

ফের খবরের শিরোনামে ‘ব্যাপম’ কেলেঙ্কারির রাজ্য। যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে ঢালাও সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের নানা পদাধিকারীকে। ‘উজ্জ্বল’ নামগুলি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি), জনজাতি সুরক্ষা মঞ্চ, ভারতীয় জনতা যুব মঞ্চ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) প্রভৃতির সঙ্গে যুক্ত। চাকরিগুলি দেওয়া হয়েছে মধ্যপ্রদেশ রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে গ্রাম স্বরাজ অভিযান প্রকল্পে। গেরুয়া বাহিনীর রত্নদের চাকরি পাইয়ে দিতে যোগ্য প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ে ডেকেও তা বাতিল করা হয় ‘অনিবার্য কারণ’ দেখিয়ে। কংগ্রেসের বক্তব্য, পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে ব্লক এবং জেলা কো-অর্ডিনেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবেদনপত্র আহ্বান করে সেন্টার ফর আন্ত্রেপ্রেনরশিপ ডেভেলপমেন্ট এবং যোগ্য প্রার্থীদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে তারাই ইন্টারভিউতে ডাকে। কিন্তু সেই ইন্টারভিউ আচমকাই বাতিল করে দেওয়া হয়। প্রার্থীরা বার বার যোগাযোগ করেও সদুত্তর পাননি। তাঁদের একটাই আশ্বাস দেওয়া হয়, ‘সময়মতো আবার ডাকা হবে।’ কিন্তু গত মার্চে ফাঁস হয়ে যায় যে, ইতিমধ্যেই বেআইনিভাবে ৯০ জনকে ওই চাকরিতে নিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে। ওইভাবে নিয়োগ চলছে এখনও। স্বভাবতই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন যোগ্য প্রার্থীরা। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। 
স্বভাবতই বিপাকে সরকার এবং বিজেপি। কারণ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন আসন্নপ্রায়। অথচ শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব হাটের মাঝে হাঁড়ি ভেঙে যাওয়ার মতোই এখন সেখানে। গোটা গেরুয়া শিবির মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মধ্যে বিভক্ত। ভোট যত এগিয়ে আসছে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি বস্তুত নেমে আসছে কলতলায়। কারণ ‘মামাজি’ এখনও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চান এবং তরুণ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও মুখ্যমন্ত্রী পদের জোরালো দাবিদার। সমস্যাটি অবশ্য সযত্নে বিজেপিরই তৈরি করা। এই জায়গায় হুবহু মিল কর্ণাটকের সঙ্গে। ২০১৮ সালের ভোটের ফলাফলে পরিষ্কার ছিল যে, মধ্যপ্রদেশের মানুষ সেখানে বিজেপি সরকার চায়নি। নরেন্দ্র মোদির পার্টিকে তারা প্রত্যাখ্যানই করেছিল। কিন্তু ক্ষমতার বাইরে থাকা যে বিজেপির পক্ষে পোষায় না। মানুষের মন পাওয়াটা অনেক পরিশ্রম ও কাঠখড় পোড়ানোর ব্যাপার। অতএব ভোটারদের সঙ্গে বেইমানি এবং তাঁদের চাওয়া-পাওয়ার বিরুদ্ধাচারণ করার রাস্তাই বেছে নেয় নেতৃত্ব। ২০১৮ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ের পর কমল নাথকে মুখ্যমন্ত্রী করে সরকার গড়ে কংগ্রেস। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াসহ ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেন। এই কুখ্যাত অপারেশন লোটাসের পিছনে কেন্দ্রীয় ক্ষমতা এবং মোটা টাকার খেলা ছিল বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ। গেরুয়া শিবিরের নষ্টামি সফল হতেই কংগ্রেস সরকার পড়ে যায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন কমল নাথ। অনৈতিকভাবে, বর্ধিত সংখ্যার জোরে সরকার তৈরি করে বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী হন শিবরাজ সিং চৌহান। 
মামাজি সরকার চালান বটে কিন্তু কোনওভাবেই স্বস্তিতে নয়। সিন্ধিয়ার দীর্ঘশ্বাস ও শ্যেনদৃষ্টি যুগপৎ পড়তে থাকলে স্বস্তির সুযোগ কই। পার্টির দিল্লির কর্তারা আজও তাঁদের সন্ধি করে দিতে পারেননি। ভোটের আগে সুযোগটার সদ্ব্যবহার করার জন্য কংগ্রেস যে উঠে পড়ে লেগেছে, মোদিরা তা বিলক্ষণ জানেন। তার উপর কর্ণাটকে মোদির স্বপ্ন চুরমার করে দেওয়ার পর রাহুলের কাঁধে আজ ভীমের শক্তি। তাঁর ভীমরবের মধ্যেই, দুঃসময়ে এক বড়সড় কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ল বিজেপি সরকার। মোদিরা ভয় পাচ্ছেন ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনেও ভরাডুবির। সেটা হলে দিল্লিতে রাজ করেও, মোদি-শাহের সামনে দিল্লিই বহু দূর হয়ে যাবে চব্বিশে। বিজেপির পক্ষে ব্যাপারটা স্বখাত-সলিলে ডুবে মরার চেয়ে কম কিছু হবে না।

17th     May,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ