বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

দু’বছর বন্ধ থাকার দুবরাজপুরের 
লাঠি মেলাকে ঘিরে বাড়তি উৎসাহ

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: প্রায় দু’বছরের বিধিনিষেধের বাধা টপকে একাদশীর দিন শতাব্দী প্রাচীন দুবরাজপুরের কৃষ্ণনগরের লাঠি মেলাকে ঘিরে বাড়তি উন্মাদনা দেখা যায়। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে বৃহস্পতিবার একাদশীর দিন এই লাঠি মেলা বসে কৃষ্ণনগরে। একসময় বর্গিদের হামলা থেকে বাঁচতে বাড়িতে লাঠি রাখার চল ছিল বলে জানা যায়। সেই লাঠি কেনাবেচার জন্য কৃষ্ণনগর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা এই মেলা বসাতেন। শতাব্দী প্রাচীন সেই মেলাকে ঘিরে এবার বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখা যায়। আর এই মেলাতেই পার্শবর্তী এলাকার দুর্গা প্রতিমাগুলিকে নিরঞ্জনের জন্য আনা হয়। মেলাতে লাঠি বিক্রির জন্য আসেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা আর দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে আসেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা। সারি সারি ভাবে মেলার মাঠে রাখা থাকে দুর্গা প্রতিমাগুলি। মেলাতে আগত মানুষজন তা ঘুরে ঘুরে দেখেন। দুই সম্প্রদায়ের এই শতাব্দী প্রাচীন সম্পর্ক রক্ষার ঐতিহ্য এবারও একই ভাবে দেখা যায়।
দুবরাজপুরের এই কৃষ্ণনগর গ্রামের একদিনের এই সম্প্রীতির মেলাকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উৎসাহ থাকে। যশপুর, কান্তোড়, লোহাগ্রাম, পছিয়াড়া, সালুঞ্চি সহ স্থানীয় এলাকার ১০ থেকে ১২টি দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য কৃষ্ণনগর মেলা প্রাঙ্গণে জমায়েত হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর এই মেলা ২৭১ বছরে পা রাখল। একসময় বীরভূমের নানা জায়গায় বর্গি আক্রমণ হতো। প্রায় প্রতিদিনই লুট হতো গ্রামের পর গ্রাম। বর্গিদের হামলা থেকে রক্ষা পেতে গৃহস্থরা বাড়িতে লাঠি, বাঁশ সংগ্রহ করে রাখত। অনেকসময় উপযুক্ত লাঠি না পাওয়াই অনেকেই অসুবিধায় পড়তেন। দুবরাজপুরের স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির উদ্যোগে পরে এখানে লাঠিমেলার চল শুরু হয় বলে জানা যায়। একাদশীর দিন মায়ের নিরঞ্জনের মুহূর্তে এই লাঠি মেলার রেওয়াজ আজও রয়ে গিয়েছে। লাঠির প্রয়োজন না থাকলেও এক-দু’টো লাঠি কিনে নিয়ে যান অনেকে। দু’বছর করোনার কারণে সেভাবে জাঁকজমক সহকারে মেলা হয়নি। এবার বিধিনিষেধ না থাকায় মেলাকে ঘিরে বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা দেখা যায়। শতাব্দী প্রাচীন লাঠি মেলা ও সম্প্রীতির প্রতিমা নিরঞ্জন মেলাতে বহু মানুষের সমাগম হয়। 
স্থানীয় প্রবীণ নাগরিক কিরীটিভূষণ রক্ষিত বলেন, কৃষ্ণনগরের এই লাঠি মেলার উৎপত্তি বর্গির উপদ্রব থেকে বাঁচতেই। ছোট থেকেই আমি এই মেলা দেখে আসছি। এই মেলা শুধু লাঠি মেলা নয়, এই মেলা সম্প্রীতির মেলা। বলা চলে এটিও শতাব্দী প্রাচীন কার্নিভাল। এলাকার দুর্গাপ্রতিমাগুলি মেলাতে কয়েক পাক ঘুরিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়। তা দর্শনার্থীরা এসে দেখেন। এবারও বহু সমাগম ঘটেছে। যশপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ রফিক বলেন, শতাব্দী প্রাচীন এই মেলায় হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনস্থল। একদিকে দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জন, অন্যদিকে লাঠি কেনাবেচা চলে। গত দু’বছর সেভাবে আয়োজন করা যায়নি। এবার বাড়তি উচ্ছাসে তা হয়েছে।

7th     October,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ