বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

দু’ পার থেকে নির্বিচারে পাথর, বোম বৃষ্টি,
মাঝনদীতে ২৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রইল হাতির দল

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: হাতি খেদানো নিয়ে দুই জেলার মধ্যে লড়াই, আর সেই লড়াইয়ের ফল ভুগতে হল একদল হাতিকে। ২৪ ঘণ্টা ধরে কংসাবতী নদীতেই আটকে রইল হাতির দল। হাতির দলকে কখনও এপারের লোক তাড়া করল তো কখনও ওপারের লোকজন। হাতি খেদাতে নদীর দুই পাড় থেকেই ছোঁড়া হল ইট, পাটকেল, আগুনের গোলা থেকে শুরু করে পটকা। ভয়ে নদীর একগলা জলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাল হাতিরা। আর এই দৃশ্য দেখে কার্যত হাত গুটিয়ে বসে রইল দুই জেলার বনদপ্তর। বনদপ্তরের এই ভূমিকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পশুপ্রেমীদের মধ্যে। 
গত প্রায় দু’ সপ্তাহ ধরে দলমা থেকে আসা প্রায় ৮০টি হাতির দল মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদরা রেঞ্জ এলাকায় ছিল। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে তারা জঙ্গলের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছিল। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত্রে প্রায় ৩০টি হাতির একটি দল ধেরুয়ার আমগোবরা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া যাওয়া জন্য চাইপুরে কাঁসাই নদীতে নামে। কিন্তু মানিকপাড়া এলাকার মানুষ ও হুলাপর্টির দল হাতিকে জঙ্গলে প্রবেশে বাধা দেয়। পুজোর সময় কেউই নিজের এলাকায় হাতি প্রবেশ করিয়ে পুজোর আনন্দ মাটি করতে রাজি নন। এমনিতেই গত কয়েক মাস ধরে দুই জেলাতেই ব্যাপক অত্যাচার চালিয়েছে হাতির দল। জমির ধান কিংবা কাঁচা আনাজ নষ্ট থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও কম ঘটেনি। সে কারণেই হাতির স্বাভাবিক গতিপথে ওপারের মানুষজন প্রথম বাধা দেয় বলে অভিযোগ। হাতির দলকে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে ফিরিয়ে দিতে নির্বিচারে ঢিল ছোঁড়া হতে থাকে তাদের লক্ষ্য করে। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেখা যাচ্ছে, হাতি ও হাতির বাচ্চাদের উপর নির্বিচারে অত্যাচার চালানো হচ্ছে। মুহুর্মুহু ইট, পাথর, বোমা ধেয়ে আসছে তাদের দিকে। 
এদিকে হাতির দল ভয় পেয়ে মেদিনীপুরের ধেরুয়ার দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলেও বাধাপ্রাপ্ত হয়। এপারেও হাতি খেদাতে হুলাপার্টির সঙ্গে দাঁড়িয়েছিল প্রচুর মানুষ। তারাও একইভাবে হাতির উপর লাগাতার অত্যাচার চালাতে থাকে। ভয় পেয়ে অসহায়ের মতো নদীতেই দাঁড়িয়ে থাকে হাতির দল। টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা হাতির দল ওভাবেই দাঁড়িয়ে থাকার পর টনক নড়ে বনদপ্তরের। দুই জেলার ডিএফও শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন। তারপর হাতিগুলিকে কোথায় পাঠানো যেতে পারে সেই পরিকল্পনা করতে থাকেন তাঁরা। অবশেষে হাতিগুলিকে নিজেদের জঙ্গলে নিতে রাজি হন ঝাড়গ্রামের ডিএফও। তিনি হুলাপার্টির দলকে আগুন নিভিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। হাতিগুলি মধ্যরাতে মানিকপাড়ায় প্রবেশ করে। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পুজোর মুখে ফের হাতির তাণ্ডব শুরু হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। হাতিদের স্বাভাবিক গতিপথে বাধা ও নির্বিচারে অত্যাচারের ব্যাপারে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন পশুপ্রেমীরা। বনদপ্তর কেন আগেভাগে কেন ব্যবস্থা নিল না সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। এ বিষয়ে মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও সন্দীপ বেরোয়াল বলেন, স্থানীয়দের ওই সময় নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে গিয়েছিল। তবে আমরা চেষ্টা করেছি হাতির স্বাভাবিক গতিপথ ঠিক রাখার। সবাইয়ের বোঝা উচিত যে হাতি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। তাদের উপর অত্যাচার ও স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দেওয়া অপরাধ।   নিজস্ব চিত্র

2nd     October,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ