বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিদেশ
 

ল্যুভরে আলাদা ঘর পাচ্ছে মোনালিসা

মৃণালকান্তি দাস: মোনালিসা! চিত্রকর্ম ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছে স্বতন্ত্র কিছু। এর হাসির রহস্য সন্ধানে যুগ যুগ ধরে চলছে কত বিশ্লেষণ। পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত প্রতিকৃতি এই মোনালিসা। যেখানে যেতেন, সেখানেই ছবিটি সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন এর স্রষ্টা লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। অনেক গবেষক ধারণা করেন, এটি লিসা দেল জিওকোন্দো নামে ইতালির একজন অভিজাত মহিলার প্রতিকৃতি।
মোনালিসা প্রদর্শিত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় জাদুঘর ফ্রান্সের প্যারিসের ল্যুভরে। সেখানকার ‘স্টেট রুমে’ অন্যান্য চিত্রকর্মের সঙ্গে কাচঘেরা অবস্থায় প্রদর্শিত হচ্ছে সেই ছবি। কিন্তু জাদুঘরটিতে প্রতিদিন যে দর্শনার্থী হয়, তার ৮০ ভাগেরই ভিড় লেগে থাকে শুধু এই এক ছবির সামনেই। জাদুঘরে সংখ্যার বিচারে রোজ দর্শনার্থীর সংখ্যা ২৫ হাজারের মতো! এর ৮০ শতাংশ বা ২০ হাজার দর্শনার্থীর ভিড় থাকে মোনালিসার সামনে। এই তথ্য স্বয়ং ল্যুভর জাদুঘরের কর্তা লোরঁস দে কার-এর দেওয়া। জাদুঘরটিতে বছরে কতসংখ্যক দর্শনার্থী আসেন, তার একটি পরিসংখ্যান বোঝা যাবে গত বছরের সংখ্যার দিকে তাকালেই। ২০২৩ সালে ল্যুভরে প্রবেশের সুযোগ পাওয়া দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ।
মোনালিসাকে আলাদা কক্ষে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ইন্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন লোরঁস দে কার। তিনি জানান, দর্শনার্থীদের একটি অংশ শুধু মোনালিসাকে দেখতে ল্যুভরে এসে থাকেন। মোনালিসার সঙ্গে ছবি তুলতে চান। কিন্তু ভিড়ের কারণে সকলের পক্ষে মোনালিসার কাছে যাওয়া সম্ভব হয় না। লোরঁস দে কার জানিয়েছেন, দর্শকদের এই সমস্যা মেটাতে মোনালিসাকে আলাদা রুমে স্থানান্তর করা ছাড়া এই মুহূর্তে বিকল্প কোনও সমাধান নেই।
১৫০৩ থেকে ১৫০৬ সালের মধ্যে মোনালিসার ছবিটি এঁকেছিলেন ভিঞ্চি। ১৫০৫ সালে তাঁর ডান হাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মোনালিসার অঙ্কন অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে বলে গবেষকদের ধারণা। ১৫১৬ সালে ৬৪ বছর বয়সে ভিঞ্চি যখন ইতালি থেকে ফ্রান্সে আসেন, সেই সময় ফ্রান্সের রাজা প্রথম ফ্রান্সিস চার হাজার স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে ভিঞ্চির কাছ থেকে মোনালিসাকে সংগ্রহ করেন। রাখেন ভার্সাইয়ের রাজপ্রাসাদে। এরপর প্রথম ফ্রান্সিসের জামাতা নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মোনালিসাকে নিয়ে যান টুইলিরাইসে, নিজের শয়নকক্ষে। ১৮২১ সালে নেপোলিয়নের মৃত্যুর পর ছবিটি উপহার দেওয়া হয় ল্যুভর জাদুঘরকে। সেই থেকে মোনালিসা ল্যুভরেই আছে। মাঝে ১৯১১ সালে ল্যুভর থেকে একবার চুরি হয়েছিল মোনালিসা। এই ঘটনার জন্য বিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো ও কবি গিয়ম অ্যাপোলিনেয়ারকে দায়ী করা হয়। তাঁদের আদালতে হাজিরও করা হয়। পরে অবশ্য তাঁরা নির্দোষ প্রমাণিত হন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে মোনালিসার সন্ধান মেলে। মোনালিসা আবার ল্যুভরে ফেরে ১৯১৩ সালে। মোনালিসার চুরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ভিনসেনজো পেরুগিয়া নামে ল্যুভরের একজন কর্মচারী। তিনি ছিলেন ইতালির নাগরিক। তিনি মনে করতেন, ইতালির নাগরিক ভিঞ্চি। এই অমর সৃষ্টি ইতালিরই সম্পদ। তাই এটি ইতালিতেই ফিরিয়ে নেওয়া হোক।
মোনালিসাকে আলাদা রুমে স্থানান্তর করা হলে লোরঁস দে কারের নামও বসবে ইতিহাসের পাতায়। অবশ্য ইতিমধ্যে তিনি ইতিহাস গড়েছেনও। জাদুঘরটির ২০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মহিলা প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে। ২০২১ সালের মে মাসে তিনি জাদুঘরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

2nd     May,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ