বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

২০ বছর পর ফের ভোটের ইস্যু জলসঙ্কট, বেঙ্গালুরুর মতোই অবস্থা হবে কি হায়দরাবাদের, উঠছে প্রশ্ন

সুদীপ্ত রায়চৌধুরী, হায়দরাবাদ: বছর একুশ আগের কথা। তখনও অন্ধ্রপ্রদেশ ভাগ হয়নি। খরা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল রাজ্যজুড়ে। ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে অন্যতম নির্বাচনী ইস্যুই ছিল জলসঙ্কট।
এরপর অন্ধ্র ভাগ হয়ে জন্ম নিয়েছে তেলেঙ্গানা। কিন্তু পরিস্থিতিতে বদল আসেনি। অবস্থা এমনই যে, ২০ বছর পর ফের ভোটের ইস্যু হয়ে উঠেছে জলসঙ্কট। আগামী দিনে হায়দরাবাদের অবস্থাও বেঙ্গালুরুর মতো হবে কি না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। জলসঙ্কট অবশ্য তেলেঙ্গানায় নতুন কোনও বিষয় নয়। ফি বছর গরম বাড়তেই ভূগর্ভের জলস্তর নেমে যায়। কিন্তু ভালো বর্ষার কারণে ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু এবারে বৃষ্টি এখনও পর্যন্ত প্রায় হয়নি। বাঁধ, জলাধার প্রায় শুকিয়ে এসেছে। সেচের জল না মেলায় শুকিয়ে যাচ্ছে ফসল। অভাব দেখা দিয়েছে পানীয় জলেরও। ফলে ভোট রাজনীতির রং লেগে গিয়েছে এই সঙ্কটের গায়ে।
তেলেঙ্গানায় এখন ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। প্রতিপক্ষ রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন শাসকদল বিআরএস বর্তমানে বেশ দুর্বল। তাতে অবশ্য প্রচারে কোনও খামতি নেই। টিম কেসিআরের দাবি, এই জলসঙ্কট প্রাকৃতিক নয়, ম্যানমেড। ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার রাজ্যের জলসম্পদ ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারেনি। গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের কাছে আরও একধাপ এগিয়ে তারা বলছে, এই ঘটনাই প্রমাণ রাজ্যের জন্য কংগ্রেস কতটা অশুভ। ক্ষমতায় আসতেই রাজ্যজুড়ে খরা দেখা দিয়েছে।
খরা মোকাবিলায় বাঁধ থেকে জল ছাড়ার জন্য দাবি তুলেছে বিজেপি। ফসল নষ্টের জন্য কৃষকদের ক্ষতিপূরণের চেয়েও তারা সরব। যদিও বিজেপি ও বিআরএস রাজ্যের জলসঙ্কটকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বলেই অভিযোগ কংগ্রেস নেতৃত্বের। হাত শিবিরের দাবি, তারা ক্ষমতায় এসেছে গত ডিসেম্বরে। তখন বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। বিআরএসের জন্যই রাজ্যের এই পরিস্থিতি। হায়দরাবাদের কংগ্রেস নেতা অরবিন্দ রেড্ডির কথায়, বিরোধীদের প্রচারের কোনও ইস্যু নেই। বিজেপির মোদি গ্যারান্টির ভাঁওতা মানুষ ধরে ফেলেছে। আর বিআরএস দলটাই প্রায় নেই। মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডিও— ‘রাজ্যের জলাধারগুলি প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে সেচের বদলে পানীয় জল সরবরাহের দিকে বেশি জোর দিতে হচ্ছে। জুন মাসে বর্ষা না আসা পর্যন্ত এই জল দিয়ে আমাদের চালাতে হবে।’ পরিবেশবিদদের আশঙ্কা অবশ্য অন্য। তাঁদের মতে, বেঙ্গালুরুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কংক্রিটের জঙ্গল তৈরি হচ্ছে হায়দরাবাদেও। ২০১৬ সালে তেলেঙ্গানা সরকার একটা নতুন ব্যবস্থা চালু করে—‘ডেভেলপমেন্ট পারমিশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। এর মাধ্যমে ২০১৯-২০ সালে ১৭ হাজার ৫৩৮টি বিল্ডিং তৈরির অনুমতি দিয়ে ৯৮৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা আয় করেছে গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। সোজা কথায়, ব্যবসার সুবিধা করতে গিয়ে পরিবেশের সর্বনাশ হচ্ছে।
বর্তমানে পরিস্থিতি এমন যে হোটেলগুলির বাথরুমে পর্যন্ত থাকছে অযথা জল নষ্ট না করার বার্তা দেওয়া স্টিকার। ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যেও। চাকরির সুবাদে বিজয় শঙ্কর থাকেন লিঙ্গমপল্লিতে। তাঁর কথায়, ‘প্রতি বছর গরম এলেই এখানে জলের সমস্যা। পাম্পে জল ওঠে না। ট্যাঙ্কার আনাতে হয়। তার জন্য আবার আলাদা খরচ। এখন ভোট বলে এখন এসব নিয়ে কথা হচ্ছে। মিটে গেলেই যে কে সেই!’

11th     May,   2024
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ