বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

জগন ও শর্মিলার দ্বন্দ্বে ধর্মসঙ্কটে মা বিজয়াম্মা টানাপোড়েন এড়াতে অন্ধ্র ছেড়ে পাড়ি আমেরিকায়

সুদীপ্ত রায়চৌধুরী, বিজয়ওয়াড়া: ২০১৯। দাদা জগন্মোহনের হয়ে পুরোদমে প্রচার চালাচ্ছেন শর্মিলা। ভোটবাজারে তুমুল হিট তাঁর ‘বাই বাই বাবু’ স্লোগান। ফলও মিলেছিল হাতেনাতে। ক্ষমতায় এসেছিল জগন ও তাঁর দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি (ওয়াইএসআরসিপি)।
২০২৪। সেই শর্মিলাই এখন অন্ধ্র কংগ্রেসের প্রধান। কাডাপা লোকসভা কেন্দ্রে হাত শিবিরের প্রার্থী। সম্পর্কে ভাই অবিনাশ রেড্ডির সঙ্গে এবার তাঁর লড়াই। লড়াই ওয়াইএসআরসিপি সুপ্রিমো জগনের সঙ্গেও। থেকে থেকেই দু’জনের উদ্দেশে আক্রমণ শানাচ্ছেন। পরিবারে ভাঙনের জন্য দায়ী করছেন দাদাকে।
মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই আমূল বদলে গেল ছবিটা। অনেকটা তেলুগু সিনেমার মতো। মেলোড্রামায় ভরপুর এই গল্পের মূল কেন্দ্রে রাজনৈতিকভাবে চূড়ান্ত শক্তিশালী এক পরিবার আর তার অন্দরে ক্ষমতা দখলের লড়াই। তার জন্য খুন পর্যন্ত হয়েছে। লোকসভা ভোটের মুখে নতুন মাত্রা পেয়েছে দাদা-বোনের রাজনৈতিক যুদ্ধ। জগনের পুলিসের হাতে গৃহবন্দি হওয়ার আশঙ্কায় শর্মিলাকে রাত কাটাতে হচ্ছে পার্টি অফিসে। কিন্তু এই টানটান পলিটিক্যাল থ্রিলারের লাইমলাইট রয়েছে আরও একজনের উপর—ওয়াই এস বিজয়লক্ষ্মী। প্রয়াত রাজশেখর রেড্ডির স্ত্রী। জগন-শর্মিলার মা। রাজ্য রাজনীতিতে তিনি অবশ্য পরিচিত ‘বিজয়াম্মা’ নামেই।
২০০৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অখণ্ড অন্ধ্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির। তাঁর ছেড়ে যাওয়া কাডাপা জেলার পুলিভেন্দুলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচনে জেতেন বিজয়াম্মা। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ২০১১ সালে জগনের নয়া দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের আত্মপ্রকাশ। পাশে দাঁড়ান মা বিজয়াম্মা এবং বোন শর্মিলা। পরে ছেলে-মেয়ের মতবিরোধেই সেই পরিবার ভেঙে খানখান। তেলেঙ্গানায় নতুন দল গড়েন শর্মিলা। তখনই ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সাম্মানিক সভাপতির পদ ছেড়ে মেয়ের কাছে চলে যান বিজয়াম্মা। যদিও মা হিসেবে জগনের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছিলেন।
এবারে পারিবারিক গড় কাডাপায় প্রার্থী শর্মিলা। রাজ্যে কংগ্রেসকে জেতানোর ভার তাঁর কাঁধে। মেয়ে বনাম ছেলের লড়াইয়ে ধর্মসঙ্কটে বিজয়াম্মা। পুলিভেন্দুলার ইদুপুলাপায়ার ওয়াইএসআর ঘাট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরুর সময় হাজির হয়ে দুই ভাইবোনকেই আশীর্বাদ করেছিলেন মা। এরপরই তিনি পাড়ি দেন আমেরিকায়, নাতির কাছে। 
আলোচনা অবশ্য থামেনি তাতে। নাম লেখা যাবে না শর্তে কাডাপার এক কংগ্রেস নেতা চড়া মিষ্টির চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলছিলেন, ‘মেরে পাস মা হ্যায়...’—কয়েকমাস আগেও ‘দিওয়ার’ সিনেমার শশী কাপুরের মতোই জবাব দিতেন শর্মিলা। আসলে মেয়ের প্রতি একটু দুর্বলতা আছে বিজয়াম্মার। ছেলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বোধহয় ভেবেছিলেন, জগনকে নিয়ে আর চিন্তা নেই। এবার মেয়ের পাশে থাকি। কিন্তু ম্যাডাম যে আবার অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতিতে ফিরবেন, সেটা ভাবতে পারেননি। ছেলে-মেয়ের টানাপোড়েনে মারাত্মক চাপের মধ্যে ছিলেন। শ্যাম ও কূল দুই-ই রাখতেই মার্কিন মুলুকে পাড়ি।
বিজয়াম্মার কথা উঠতেই মাথায় হাত ছোঁয়ালেন ফলের রস বিক্রেতা বিষ্ণুপ্রসাদ। তাঁর দোকানে ঠাকুর-দেবতার পাশে ঝুলছে প্রয়াত রাজশেখর রেড্ডির ছবি। বিষ্ণুপ্রসাদের কথায়, একজনকে সমর্থন করলে অন্যজনের তো খারাপ লাগবে। তার চেয়ে এই ভালো। গোটাপাঁচেক দোকান পর খাবারের একটা হোটেল চালান লক্ষ্মীদেবী। মা হিসেবে বিজয়াম্মার টানাপোড়েন বোঝেন তিনিও। বললেন, ‘ছেলে-মেয়ের মধ্যে সত্যিই কি কাউকে বেছে নেওয়া যায় বলুন?’
অন্ধ্র ছাড়লেও বিজয়াম্মার ছায়া বুঝি রয়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে।

10th     May,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ