বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

 চা বাগান কেটে বিমানবন্দর তৈরির কাজে স্থগিতাদেশ, সুপ্রিম ধাক্কা অসম সরকারকে

সুতপা গুহ, শিলচর : ১২ মে, ২০২২। অসমের শিলচরের ডলু চা বাগান জুড়ে দরিদ্র শ্রমিক, তাঁদের পরিবারের আর্তনাদ। কারণ, বিমানবন্দর তৈরির জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে তাঁদের বুকের উপর দিয়ে চলছে প্রায় ২০০ আর্থমুভার। চা বাগানজুড়ে মোতায়েন বিশাল পুলিস বাহিনী। তাঁদের পায়ে পড়ে কাঁদছেন চা শ্রমিকরা। আর্জি, ‘আমাদের বোমা মেরে শেষ করে দাও, চা বাগান ধ্বংস কোরো না।’ কিন্তু থামেনি ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের ‘উন্নয়ন’। সেই গা-জোয়ারি জোর ধাক্কা খেল সুপ্রিম কোর্টে। প্রায় দু’বছর পর। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশ, ‘পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার আগে বিমানবন্দরের কাজ শুরু করা প্রতিষ্ঠিত আইনের লঙ্ঘন। পরিপন্থী। মামলাকারীদের আবেদন খতিয়ে না দেখে নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। সেই ছাড়পত্র পাওয়ার আগে ডলুতে বিমানবন্দরের কোনও কাজ করা যাবে না।’ 
ডলুতে শ্রমিকদের উচ্ছেদ রুখতে এনজিটির হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন যাদবপুরের তাপস গুহ, কাঁকুরগাছির প্রদীপ রায় এবং নাকতলার বৈদ্যনাথ সেনগুপ্ত। কিন্তু গত ২৫ মার্চ সেই আবেদন নাকচ করে দেয় এনজিটি। জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘পরিবেশগত ছাড়পত্র এখনও দেওয়া হয়নি, এর প্রক্রিয়া চলছে। তাই এতে হস্তক্ষেপ করার কোনও প্রয়োজন নেই।’ এনজিটির সেই নির্দেশকেই এদিন তিরস্কার করে সর্বোচ্চ আদালত। পাশাপাশি, পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই কীভাবে প্রায় একচল্লিশ লক্ষ চায়ের গাছ এবং ছায়া প্রদানকারী বড় গাছ উপড়ে ফেলা হল, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। তারপর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, ‘পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই ওই জায়গায় কাজ শুরু করা নিয়ে অসম সরকার আবেদন জানাতে পারবে।’
সোমবার শুনানির সময় অবশ্য মামলাকারীর অভিযোগ খারিজ করার জোর চেষ্টা করেন দেশের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। বলেন, ‘এই মামলার কিছু আবেদনকারী প্রস্তাবিত বিমানবন্দর থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দূরে থাকেন। শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই মামলাটি করা হয়েছে।’ পাল্টা জবাব দেন আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। বলেন, ‘বড় বড় গাছের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ চা গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক প্রভাবও বিশ্লেষণ হওয়া জরুরি।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের জায়গা খালি করার যে প্রক্রিয়া চলছে তা পরিবেশগত ছাড়পত্র না নিয়েই হচ্ছে। এটি ২০০৬ সালের এনভায়রনমেন্ট ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইইএ) বিজ্ঞপ্তির সরাসরি লঙ্ঘন।’
এদিনের রায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সদস্য তথা শিলচরের বাসিন্দা সুস্মিতা দেব বলেন, ‘কোনও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার জমি চাইলে না করা যাবে না, এটা নিয়ম। পাশাপাশি এটাও নিয়মের মধ্যে রয়েছে যে, জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ এই ঘটনা একবার ঘটে গেলে তা বারবার হবে। মানুষের অধিকারকে খুন করে উন্নয়নের কাজ হতে পারে না।’ প্রতিক্রিয়া জানতে শিলচরের বিদায়ী সাংসদ ডাঃ রাজদ্বীপ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি উত্তর দেননি। কিন্তু শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন শ্রমিকরা। কারণ, বাগানে আপাতত আর্থমুভারের দাপাদাপি বন্ধ।

8th     May,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ