বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

ইসিজি, প্রেসার, নাড়ির গতিতে বদল আনতে সক্ষম ভারতীয় শাস্ত্রীয়সঙ্গীত!

বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: ‘একাকী গায়কের নহে তো গান, মিলিতে হবে দুই জনে/গাহিবে একজন খুলিয়া গলা, আরেক জন গাবে মনে’— কবিগুরুর যুগান্তকারী লাইন দু’টি যে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি, তা বুঝেছে এখন আপামর বিশ্ব। এখন বোঝার পালা চলছে, গায়কের গান বা যন্ত্রীর সঙ্গীত শুধু মনেই নয়, শরীরজুড়ে আনতে পারে একাধিক পরিবর্তন। গুপি গায়েনের গান শুনে স্তব্ধ হয়ে যেতেন সকলে। সঙ্গীতের মূর্চ্ছনায় সত্যিই কি তাই সম্ভব? মিউজিক থেরাপি নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে গবেষণা। যতদিন যাচ্ছে, দুরারোগ্য রোগে এই থেরাপির আশ্চর্য গুণপনার কথা জানা যাচ্ছে। কিন্তু এর নেপথ্যে কতটা বিজ্ঞান আছে, আর কতটাই বা জড়িয়ে আছে আবেগ-অনুভূতি? নাকি গোটাটাই অতিরঞ্জন? কলকাতারই এক গবেষকের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে জানিয়েছেন সঙ্গীতের এই আশ্চর্য গুণের কথা। তামাম বিশ্বকে তাঁরা দেখিয়েছেন— ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পারছে মানুষের ইসিজি, প্রেসার ও নাড়ির গতিতে পরিবর্তন আনতে! 
সঙ্গীত এবং শরীরে তার প্রভাব নিয়ে দীর্ঘ দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন সঙ্গীত গবেষক আচার্য সঞ্জয় চক্রবর্তী। সঞ্জয়বাবু এবং দিল্লি এইমস-এর চার চিকিৎসক যৌথভাবে এই গবেষণাটি করেছেন। তা গ্রহণ করেছে বিশ্ববন্দিত পত্রিকা গোষ্ঠী এলসেভিয়ারের ‘বায়োমেডিক্যাল সিগন্যাল প্রসেসিং অ্যান্ড কন্ট্রোল’। এইমস-এর ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইমিউনোলজি অ্যান্ড ই঩মিউনোজেনেটিকস এবং ফিজিওলজি বিভাগের এই চার চিকিৎসক হলেন পরীক্ষিত স্যানাল, কৌশিক রায়, দীনু এস চন্দ্রন এবং কে কে দীপক। গবেষণাপত্রটি তিনবার রিভিউও করেছেন বিশ্বের বহু তাবড় বিজ্ঞানী।
সেতার বা চিত্রাবীণা নিয়ে হয়েছে গবেষণাটি। তারই অংশ হিসেবে সেতারে আড়াই মিনিট ‘বিলাওয়াল’ নামক ঠাটের অংশবিশেষ বাজিয়ে তা রেকর্ড করেন সঙ্গীত গবেষক সঞ্জয়বাবু। সে দু’টি ছিল শুদ্ধ এবং শুদ্ধ ও কোমলস্বর মিশ্রিত ঠাট। ২৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের সামনে বিভিন্ন সপ্তকে বাজানো হয় সেগুলি। ততক্ষণে হিরুচি নামের টেকনিকে তাঁদের হাতে বেঁধে দেওয়া হয়েছে বিশেষ যন্ত্র। সমীক্ষা শুরুর আগে অহেতুক উদ্বেগ-উৎকন্ঠা কমাতে ‘ডিপ ব্রিদিং’ করতে বলা হয় প্রত্যেককে। এরপর রেকর্ড করা শুরু হয় প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীর প্রেসার, নাড়ির গতি এবং ইসিজি। 
কী হল তার ফলাফল? দেখা গেল, সঙ্গীতের সংস্পর্শে আসতে না আসতেই ওই ২৫ জনের প্রেসার, নাড়ির গতি এবং ইসিজিতে ফারাক ফুটে উঠতে শুরু করল। মৃদু ও চড়াভাবে বাজানো সেতারের ফারাকও বুঝিয়ে দিল শরীর। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘আমরা দেখেছি মৃদু স্বরে বাজানো সঙ্গীত শরীরের উপর বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তারস্বরে বাজানো সঙ্গীতের প্রভাব কম। এরপর আমাদের লক্ষ্য হল, বিজ্ঞানসম্মতভাবে কোন রোগে, কী ধরনের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, কীভাবে কাজে আসতে পারে, তা নির্ণয় করা। আসলে ভারতীয় মার্গসঙ্গীত প্রকৃতির দর্পণ। মানবশরীরও প্রকৃতিরই অংশবিশেষ। তাই সাড়াও দিচ্ছে শরীর।

28th     April,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ