বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

ভোক্কালিগা রাজনীতির কেন্দ্রেই এবার কুমারস্বামীর অগ্নিপরীক্ষা

মাণ্ড্য: জেলা সদর থেকে ১৪ কিমি দূরে বিখ্যাত মন্দির-গ্রাম কেরাগোদু। পঞ্চায়েত অফিসে সামনে মাস কয়েক আগে বসানো ১০৮ ফুট উঁচু খুঁটিতে পতপত করে উড়ছে জাতীয় পতাকা। তার ঠিক নীচেই লাগানো একটি গেরুয়া বজরঙ্গবলীর পতাকাও। আর সেটিকে ঘিরেই গত সাধারণতন্ত্র দিবসের পর থেকেই উত্তপ্ত মাণ্ড্য। একটি পুলিস ভ্যান সর্বদা দাঁড়িয়ে থাকে সেই পতাকাস্তম্ভের সামনে। কারণ, কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার চায় ওখান থেকে ধর্মীয় পতাকা সরাতে। আর জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি তা না সরানোর বিষয়ে অনড়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যে জেডিএসের সবুজ উত্তরীয়ের বদলে সেখানে গেরুয়া কাপড় গলায় জড়িয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নামতে হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীকে। হবে না কেন, আগামী ২৬ এপ্রিল, লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফাতে এই মাণ্ড্য আসনেই যে তাঁর অগ্নিপরীক্ষা!
কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর কার্যত অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার দল। তাঁর ছেলে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে এবার মাণ্ড্য লোকসভা কেন্দ্রের এনডিএ প্রার্থী। জেডিএসের ভোটব্যাঙ্ক ভোক্কালিগা সম্প্রদায় সেখানে সংখ্যাগুরু। কিন্তু সেখানেও থাবা বসিয়েছে কংগ্রেস। তাই হিন্দুত্ব এখন একমাত্র ভরসা আড়াইশো কোটির সম্পত্তির অধিকারী কুমারস্বামীর। কাবেরী নদীর জলের ইস্যুকেও হাতিয়ার করেছেন তিনি। জেডিএস নেতার দাবি, কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার তামিলনাডুকে কাবেরীর জল দেওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাণ্ড্যর আখ ও ধানচাষিরা। তিনি জিতলে এমনটা হতে দেবেন না। এই দুই ইস্যুর দাপটে তাঁর রোড শো-সভায় ভিড় হচ্ছে ভালোই।
এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী ব্যবসায়ী তথা ঠিকাদার ভেঙ্কটরামনে গৌড়া ওরফে ‘স্টার’ চন্দ্রু। দ্বিতীয় দফার ভোটের ধনীতম প্রার্থী, সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৬২২ কোটি টাকা। তাই ভোক্কালিগা রাজনীতির প্রাণকেন্দ্রে এবার লড়াই অনেক বেশি উত্তেজক। এমনকী, তা নেমে এসেছে দেবেগৌড়া এবং শিবকুমার পরিবারের মধ্যে ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ির পর্যায়ে। পরস্পরকে ‘ব্ল্যাকমেলার’, ‘জমি দুর্নীতিকারী’ বলতেও পিছু হটছেন না উভয়েই। তবে কংগ্রেস প্রার্থীর বড় ‘প্লাসপয়েন্ট’ তিনি ভূমিপুত্র। তাঁর হয়ে প্রচারে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া, উপ মুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার। কংগ্রেসের পাঁচটি ন্যায়ের ‘গ্যারান্টি কার্ড’ই অস্ত্র চন্দ্রুর। দেদার বিলি করা হচ্ছে সেই কার্ড। 
মাণ্ড্য কার্যত কংগ্রেসের দুর্গ। ১৩ বার এখানে জিতেছে হাত শিবির। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে থাবা বসায় জেডিএস। ২০১৩ সালের উপ নির্বাচনে অভিনেত্রী রম্যাকে প্রার্থী করে আসনটি দখলে নেয় রাহুল গান্ধীর দল। এর পরে ২০১৪ সালে ফের রম্যাকেই প্রার্থী করে কংগ্রেস। তাঁকে পরাস্ত করেন জেডিএসের পুট্টারাজু। তারপর থেকেই এখানে জেডিএসের জয়জয়কার। কিন্তু ২০১৯ সালে নির্দল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী সুমালতা অম্বরীশের কাছে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে হেরে যান কুমারস্বামীর পুত্র নিখিল। প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা এম এইচ অম্বরীশের স্ত্রী এখন বিজেপিতে। তাই এবারও নিখিলকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন কুমারস্বামী। কিন্তু বিজেপি, বিশেষ করে অমিত শাহ রাজি হননি। তাঁর জোরাজুরিতেই কুমারস্বামীর প্রার্থী হওয়া। ২০১৮ সালে কংগ্রেস-জেডিএস জোট থাকাকালীন মাণ্ড্যের অধীনে থাকা সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছিল জেডিএস। কিন্তু ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটে তাদের কপালে জুটেছে মাত্র একটি আসন। বাকি ছ’টিই কংগ্রেসের ঝুলিতে। গত ২৫ বছরে সবচেয়ে শোচনীয় ফলের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির বারবার সফর এবং জেডিএসের ভোটব্যাঙ্কে বিজেপির থাবা বসানোকেই দায়ী করেছিলেন কুমারস্বামী ঘনিষ্ঠরা। এবার দু’দল হাত মিলিয়ে জয়ের স্বপ্নে বিভোর। পরবর্তী টার্গেটও ঠিক করে ফেলেছে জেডিএস—লোকসভা ভোটে জিতলেই ভেঙে দেওয়া হবে কর্ণাটকের নির্বাচিত কংগ্রেস সরকার।

25th     April,   2024
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ