বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

বন্ড-রায়ে ধাক্কার পরই কাঠগড়ায় বিচার ব্যবস্থা

নয়াদিল্লি: সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্টের একের পর এক নির্দেশে মুখ পুড়েছে মোদি সরকারের। সেই তালিকায় সবথেকে বড় ধাক্কা অবশ্যই নির্বাচনী বন্ড। তা শুধু বাতিল করা হয়নি, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে অনুদানের অঙ্ক ও দাতার নাম। বিজেপির ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রাপ্তির হাল-হকিকৎও। এমনকী ভয় দেখিয়ে সেই অনুদান আদায়, বিনিময়ে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর দলের বিরুদ্ধে। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই এবার একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলে দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি দিলেন প্রায় ৬০০ জন আইনজীবী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম নির্বাচনী বন্ড মামলায় এসবিআইয়ের হয়ে সওয়ালকারী হরিশ সালভে। তালিকায় রয়েছেন ওই মামলার রায় পুনর্বিবেচনার দাবি তুলে প্রধান বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়া সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আদিশ আগরওয়ালও। সেই চিঠি সামনে আসার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই অভিযোগকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসকেই এব্যাপারে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডলে তাঁর সাফ কথা, অন্যদের ভয় দেখানো ও হেনস্তা করা কংগ্রেসের পুরনো সংস্কৃতি।
বন্ড-ধাক্কার কারণেই যে বিজেপি এভাবে বিচার বিভাগকে কাঠগড়ায় তুলছে, সেব্যাপারে নিঃসন্দেহ বিরোধীরা। এই ইস্যুতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভণ্ডামি বা দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও এই ইস্যুতে প্রশ্নবাণ ছুড়েছেন মোদির দিকে— সুপ্রিম কোর্টের চারজন শীর্ষ বিচারপতি নজিরবিহীনভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে আপনার জমানায় গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ তুলেছিলেন কেন? কেনই বা তাদের মধ্যে একজন বিচারপতিকে (রঞ্জন গগৈ) রাজ্যসভায় মনোনীত করেছে আপনার সরকার? আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে আপনার পার্টি হাইকোর্টের এক প্রাক্তন বিচারপতিকে (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) প্রার্থী করেছেন কেন? মোদির বিরুদ্ধে দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করার অভিযোগও তুলেছেন খাড়্গে।
গত ২৬ মার্চ ‘জুডিশিয়ারি আন্ডার থ্রেট-সেফগার্ডিং জুডিশিয়ারি ফ্রম পলিটিক্যাল অ্যান্ড প্রফেশনাল প্রেশার’ শীর্ষক যে চিঠি লিখেছেন আইনজীবীরা, তাতে অবশ্য কোনও রাজনৈতিক দলের নাম নেই। সাফ বলা হয়েছে, ‘বিচার ব্যবস্থাকে চাপ দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী। মামুলি যুক্তি ও রাজনৈতিক এজেন্ডা চরিতার্থ করতে আদালতকে অসম্মান করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মামলাগুলি, বিশেষত যেগুলিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, সেক্ষেত্রেই নেওয়া হচ্ছে এই কৌশল। বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থার ভিত নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যা গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোর পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। দেখা যাচ্ছে, কিছু আইনজীবী দিনের বেলা অভিযুক্ত রাজনীতিবিদদের আড়াল করছেন। আর রাতে মিডিয়ার মাধ্যমে বিচারপতিদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’ এমনকী ‘বেঞ্চ ফিক্সিং’-এর অভিযোগও তোলা হয়েছে চিঠিতে। বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারপার্সন মননকুমার মিশ্র, আইনজীবী হরিশ সালভে, আদিশ আগরওয়াল, চেতন মিত্তল, পিঙ্কি আনন্দ, হিতেশ জৈনদের দাবি, আদালতের সিদ্ধান্ত পক্ষে না থাকলেই রাজনীতিকরা কোর্ট চত্বরেই তার সমালোচনা করছেন। বিচারপতিদের প্রভাবিত করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে বেছে বেছে সাধারণ নির্বাচনের আগেই তা করা হচ্ছে।
এই ইস্যুতে এক্স হ্যান্ডলে প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিয়েছেন নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মামলাকারী আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণও। তাঁর কটাক্ষ, সরকারের প্রিয় আইনজীবী হরিশ সালভে নির্বাচমনী বন্ডের ঘুষ ও তোলাবাজির তথ্য ফাঁস আড়াল করতে প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছেন। ট্যাক্স হেভেনে তাঁর অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে পানামা ও প্যান্ডোরা পেপারে। এখন উনি প্রধান বিচারপতিকে প্রভাবিত করতে ৬০০ জনের দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বন্ডে অনুদানদাতাদের মধ্যে কতজন তাঁর মক্কেল? আশ্চর্য যে স্বয়ং মোদি সেই চিঠিকে সমর্থন করছেন!

29th     March,   2024
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ