বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

বিরোধীশূন্য! সফল মোদি-শাহ
এবার অরুণাচল, ৮০% আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: একদা বিজেপির প্রিয় বাক্য ছিল, ‘কংগ্রেস মুক্ত ভারত’। তবে ক্রমে সেই পরিস্থিতি বদলেছে। এখন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের কাছে প্রধান লক্ষ্য একটাই, বিরোধীমুক্ত ভারত। আর তার জন্য ভোটে লড়া কিংবা জেতার পর্যন্ত দরকার পড়ছে না বিজেপির। কখনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়, কখনও বিপক্ষ শিবিরের জনপ্রতিনিধিদের দলে টেনে দখল হচ্ছে বিধানসভা থেকে পঞ্চায়েত। এই মডেলে সাফল্য এসেছে দক্ষিণে কর্ণাটক থেকে পশ্চিমে মহারাষ্ট্র, এমনকী উত্তর-পূর্বে ত্রিপুরাতেও। সেই তালিকার প্রথম নামটি ছিল চীন সীমান্তবর্তী রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের। আবারও সেখানে চলল একই ‘অপারেশন’। আগামী ১২ জুলাই সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগেই রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ আসন চলে গেল বিজেপির দখলে। কারণ, কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীই যে নেই! অর্থাৎ, ঠিক ত্রিপুরার কায়দায় বিরোধীশূন্য আরও এক রাজ্য।
যেখানেই বিরোধী দলগুলি ক্ষমতায়, সেখানে ভোটে জয়লাভ না করেও সরকার গড়ার কথা আজকাল প্রকাশ্যেই বলে থাকেন বিজেপি শীর্ষ নেতারা। সবেমাত্র গত বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট হয়েছে। বহু আস্ফালনের পর সেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতে বাংলায় ক্ষমতা দখলের চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন মোদির সেনাপতিরা। কয়েকদিন আগেই হায়দরাবাদে আয়োজিত দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের সভামঞ্চে অমিত শাহ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, শীঘ্রই বাংলা সহ কয়েকটি বিরোধী রাজ্যে সরকার গড়বে বিজেপি। আপাতত সেই লক্ষ্য দূর অস্ত হলেও উত্তর-পূর্ব ভারতে তারা স্বপ্নপূরণে উদ্যত। ত্রিপুরার ধাঁচে এবার অরুণাচল প্রদেশে পঞ্চায়েত ভোটকে বিরোধীশূন্য করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আসন জয়ের রেকর্ড গড়েই চলেছে গেরুয়া শিবির। 
বাংলায় ভোটে অনিয়ম এবং তৃণমূলের জয় নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন তোলা বিজেপিই ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল। কোনও বিরোধী দল সেখানে শক্তি প্রদর্শন করতে পারেনি। এবার সেই একই ফর্মুলা তথা মডেল অরুণাচল প্রদেশে। এখনও পর্যন্ত ১৩০ আসনের মধ্যে ১০২টিতে বিজেপি প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এবং কংগ্রেস একটি করে আসন পেয়েছে। সুতরাং, হাতেগোনা নগণ্য কিছু আসনেই ১২ জুলাই ভোট হবে। অরুণাচল প্রদেশে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছিল কংগ্রেসের সরকার। সেখানে হঠাৎ ছ’বছরের মধ্যেই কংগ্রেস প্রায় ধুয়েমুছে গেল কীভাবে? এই প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে রাজ্যের নাম অরুণাচল বলেই।
কারণ, প্রতিপক্ষ শিবিরে হানা দিয়ে বিধায়ক ভাঙিয়ে নিয়ে রাতারাতি সরকার বদলের সফল এক্সপেরিমেন্ট বিজেপি প্রথম প্রদর্শন করেছিল এই রাজ্যে। ২০১৬ সালে নাবাম টুকির কংগ্রেস সরকারের ৪২ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যোগ দিয়েছিলেন পিপলস পার্টি অব অরুণাচলে। স্পিকারের কাছে সেই গরিষ্ঠতা দেখিয়ে সরকারও গড়ে ফেলেন তারা। কংগ্রেস গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট সেই অভ্যুত্থান খারিজ করে। কংগ্রেসের নাবাম টুকি আবার মুখ্যমন্ত্রিত্ব ও সরকার ফিরে পান। কিন্তু গরিষ্ঠতা প্রমাণ করে সরকার ধরে রাখতে পারেননি। এখানেই ঩শেষ নয়। এরপর আবার বিদ্রোহ হয়। পেমা খান্ডুর নেতৃত্বে ৩৩ জন বিধায়ক পিপিএ ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে এভাবেই অরুণাচল প্রদেশে আচমকা ক্ষমতায় আসে বিজেপি সরকার। তারপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি মোদির দলকে। ২০১৯ সালে ৪৮ আসনে জয়ী হন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু। কংগ্রেস পেয়েছিল ৪টি আসন। আর এবার গ্রাম পঞ্চায়েতেও প্রায় নিশ্চিহ্ন রাহুল গান্ধীর দল। ১৪ জেলাজুড়ে পঞ্চায়েতের সিংহভাগ আসন বিরোধীশূন্য হয়েছে। অর্থাৎ, এবার একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম হয়ে গেল। অরুণাচল, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র—ভোটে না জিতে সরকারে বসার মডেল এখন বিজেপির করায়ত্ত।

7th     July,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ