নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরের তুলনায় কর্মসংস্থান বেড়েছে অন্তত ২৯ শতাংশ। উৎপাদন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি/বিপিওর মতো ন’টি সেক্টরের ২০২১-২২ আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে সোমবার এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। একইসঙ্গে রিপোর্টটি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, করোনায় দেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান প্রভাবিত হলেও ৮০ শতাংশের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী করোনাকালে তাঁদের পুরো বেতন কিংবা মজুরি পেয়েছেন। যে ন’টি সেক্টর নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে শ্রমমন্ত্রক, সেগুলি হল উৎপাদন, নির্মাণ, ট্রেড, পরিবহণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রেস্তরাঁ, আইটি/বিপিও এবং ফিনান্সিয়াল সার্ভিস। মূলত ১০ জনের বেশি কর্মচারী রয়েছেন, উল্লিখিত ন’টি সেক্টরের এমন সংস্থা-প্রতিষ্ঠানগুলির উপরই সংশ্লিষ্ট সমীক্ষাটি চালিয়েছে কেন্দ্র।
শ্রমমন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে ষষ্ঠ অর্থনৈতিক সুমারিতে দেখা গিয়েছে, উল্লিখিত সেক্টরগুলিতে ২ কোটি ৩৭ লক্ষ কর্মী কাজ করেন। অন্যদিকে, লেবার ব্যুরোর করা এপ্রিল-জুন ২০২১-এর ত্রৈমাসিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সেই সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৮ লক্ষ। অর্থাৎ, বৃদ্ধির হার প্রায় ২৯ শতাংশ। এই পরিপ্রেক্ষিতেই করোনাকালের প্রসঙ্গ টেনেছে শ্রমমন্ত্রক। রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, করোনার জেরে প্রায় ২৭ শতাংশ সংস্থা-প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে যে লকডাউন পিরিয়ড, তা সত্ত্বেও ৮১ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারী তাঁদের পুরো বেতন কিংবা মজুরি পেয়েছেন। কেন্দ্র জানিয়েছে, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি বৃদ্ধি হয়েছে আইটি/বিপিও সেক্টরে। ১৫২ শতাংশ। তারপরে রয়েছে স্বাস্থ্য। এখানে বৃদ্ধির হার ৭৭ শতাংশ। কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধির নিরিখে এরপর রয়েছে যথাক্রমে পরিবহণ (৬৮ শতাংশ), ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (৪৮ শতাংশ), নির্মাণ (৪২ শতাংশ), শিক্ষা (৩৯ শতাংশ), উৎপাদন (২২ শতাংশ)। তবে কর্মসংস্থানের হার ট্রেড সেক্টরে ২৫ শতাংশ এবং অ্যাকোমোডেশন অ্যান্ড রেস্তরাঁয় ১৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। তবে কেন্দ্র এও জানিয়েছে যে, উল্লিখিত রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট হয়েছে অন্তত ৯০ শতাংশ আইটি/বিপিও ১০০ জনেরও কম কর্মী নিয়ে কাজ করে। ষষ্ঠ অর্থনৈতিক সুমারিতে যে হার ছিল ৯৫ শতাংশ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, নির্মাণ ক্ষেত্রের ১৮ শতাংশই কর্মীই চুক্তিভিত্তিক এবং ১৩ শতাংশ ক্যাজুয়াল ওয়ার্কার। তবে উল্লিখিত ন’টি সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত ৮৮ শতাংশ কর্মীই রেগুলার। এগুলির নয় শতাংশ প্রতিষ্ঠান শ্রম আইনের আওতায় পড়ে না। ষষ্ঠ অর্থনৈতিক সুমারির তুলনায় কিছুটা হলেও কমেছে মহিলা কর্মীর সংখ্যা। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে যা ছিল ৩১ শতাংশ, প্রথম ত্রৈমাসিকে তা কমে হয়েছে ২৯ শতাংশ। দেশের মোট ১২ হাজার সংস্থার উপর এই সমীক্ষা চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।