বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

এবার আর কোতয়ালির লড়াই নেই, মালদহ উত্তর নিয়ে চিন্তিত বিজেপি

তন্ময় মল্লিক, মালদহ: কোতয়ালি বাড়ির দুই সদস্যের সম্মুখসমরের কারণে গতবার মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রটি আকর্ষণীয় হয়েছিল। এখানে কংগ্রেস ও তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন এবিএ গণিখান চৌধুরীর পরিবারের দুই সদস্য। তাই বিভ্রান্ত হয়েছিল সংখ্যালঘু ভোট। সেই সুযোগে জয় হাসিল করেছিল বিজেপি। কিন্তু এবার এখানে গণিখান সাহেবের পরিবারের কেউ প্রার্থী হননি। তবুও এই কেন্দ্রটি নজরকাড়া। কারণ এখানে তৃণমূলের প্রার্থী পুলিসের আইজির চাকরি ছেড়ে আসা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও তাঁর সাড়ে ছ’বছর চাকরি ছিল। ফলে এডিজি হওয়া ছিল নিশ্চিত। সেই লোভনীয় চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন। তাই স্রেফ ‘হাওয়া’ দেখে মালদহ উত্তরের অঙ্ক কষলে ডাহা ফেল। 
গতবার এই কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে চারটিতেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু মালদহ, গাজল এবং হবিবপুরে বিজেপি প্রায় ১ লক্ষ ৪৯ হাজার লিড নেওয়ায় খগেন মুর্মু ৮৪ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। কিন্তু এবার খগেনবাবুর লড়াই কঠিন। গতবার কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী এবং তৃণমূলের মৌসম নুর প্রার্থী হওয়ায় চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া এবং মালতিপুরের সংখ্যালঘু ভোট আড়াআড়ি দু’ভাগ হয়েছিল। এবার কংগ্রেসের প্রার্থী মোস্তাক আলম। তাই ভোট ভাগাভাগি সীমাবদ্ধ থাকবে হরিশ্চন্দ্রপুরেই। এই চারটি কেন্দ্রে লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের। অনেকটাই পিছনে থাকবে বিজেপি।
অন্যদিকে আদিবাসী, মতুয়া ও রাজবংশী প্রভাবিত গাজোল, হবিবপুর ও মালদহে মূল লড়াই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের। তবে গতবারের মতো বিজেপি দেড় লক্ষ লিড পাবে না। কারণ মতুয়া ও আদিবাসী ভোট ফেরানোর জন্য দু’বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। মমতাবালা ঠাকুরকে দিয়ে বেশ কিছু মিটিং করিয়ে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, সিএএ আসলে বিজেপির ’গাজর’। 
সমরবাবুর চেষ্টায় যে কাজ হয়েছে, সেটা বোঝা গিয়েছে সাধারণ মানুষের কথাবার্তায়। মালদহের বিএসএফ মোড়ে তেলেভাজার দোকানের আড্ডায় ভোটের হাওয়া কোন দিকে জানতে চাওয়ায় আদিবাসী যুবক ধীরেন হেমব্রম সরাসরি কোনও উত্তর দিলেন না। বললেন, ‘এবার গতবারের ভুলটা হবে না।’ পাশে বসা প্রণব অধিকারীর মৃদু প্রতিবাদ, ‘এবার মানুষ ভোট দেবে মোদিকে দেখে। বিকল্প কোথায়?’
নরেন্দ্র মোদির সভার দিন চারেক আগে মালদহ টাউনহলের মাঠে বসে কথা হচ্ছিল বিজেপি নেতা অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁর দাবি, ‘খগেনদার যোগাযোগ খুব ভালো। উনি বিজেপির বাইরেও ব্যক্তিগত ভোট পাবেন। এখন হাওয়া বুঝতে পারবেন না। এখানে ভোটের হাওয়া উঠবে মোদিজির সভার পর।’
মোদিজির সভায় ভিড় হয়েছিল ভালোই। তাতে বিজেপির পালে কিছুটা হাওয়া লেগেছে। কিন্তু তা গাজোল, হবিবপুর ও মালদহ কেন্দ্রেই সীমাবদ্ধ। কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদারও মানছেন, মালতিপুর সহ চার কেন্দ্রে তাদের লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে। তবে হবিবপুর, গাজলে তারা দুর্বল। কিন্তু জোট হওয়ায় সিপিএমের ভোট কংগ্রেসে যাবে। তাই এবার লড়াইটা ত্রিমুখী।
মালদহে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিঞ্চিৎ বেশি। এই জেলার অনেক নেতা-নেত্রীরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও গণিখান সাহেবের ছবি বাঁধানো থাকে। যখন যা প্রয়োজন হয়, সেটা আলমারি থেকে বের করে টাঙিয়ে দেন। এহেন মালদহে প্রসূনবাবুর কিছুটা সময় গিয়েছে নেতাদের মান ভাঙাতে। তবে, পুলিস সুপার হিসেবে কাজ করায় কে কোন ফুলে তুষ্ট, সেটা তিনি ভালোই জানেন। প্রসূনবাবু বলেন, মালদহে বিএসএফ মানুষকে হেনস্তা করে। পুলিস অফিসার হিসেবে তা কাছ থেকে দেখেছি। আশীর্বাদ পেলে সংসদে গিয়ে সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।
প্রসূনবাবুর কথায় আত্মবিশ্বাসের ছাপ। জেতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই কি মেয়াদ শেষের সাড়ে ছ’বছর আগে মোটা বেতনের চাকরিতে ইস্তফা? প্রশ্নটা তোলা রইল ৪ জুনের জন্য।

1st     May,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ