বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বিজেপির দুই সাংসদ

নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: ঘটনাটা কয়েকমাস আগের। ভিন রাজ্যে ছেলের চিকিৎসা করানোর জন্য কিছু আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল সিতাইয়ের নিরঞ্জন বর্মনের (নাম পরিবর্তিত)। টানাটানির সংসারে অত টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না তাঁর। তাই প্রতিবেশীর থেকে শুনে সাহায্যের আশায় সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের দরবারে গিয়েছিলেন। চাষের খেতে কাজ করে কোনওক্রমে সংসার চালানো নিরঞ্জনবাবু সাংসদ, রাজনীতি, শহুরে চালচলনের সঙ্গে বিশেষ পরিচিত নন। তাই প্রথম যখন ওঁর বাড়িতে যান, কিছুটা ঘাবড়েই গিয়েছিলেন। নিজের মুখেই বলছিলেন, ‘চারিদিক ঘেরা। বাড়ির ভিতরে কাউকেই দেখা যাচ্ছিল না। সামনে কয়েকজন বিএসএফের মতো পোশাকে দাঁড়িয়ে। হাতে বড় বড় বন্দুক। দেখলেই আঁতকে ওঠে বুকের ভিতরটা। সেই সময় ‘স্যার আসছে... স্যার আসছে’ বলে আমাদের ঠেলে সরিয়ে দেওয়া হল। দেখলাম গাড়িতে করে কয়েকজন ভিতরে ঢুকে গেল। ভয়ে আর কিছু বলতে পারিনি। এরপরেও বার দুয়েক বাড়ির সামনে গিয়েছিলাম। কিন্তু, দেখা করার সাহস বা সুযোগ কোনওটাই পাইনি।’ 
শুধু নিরঞ্জন বর্মনই নন, তাঁর মতো আরও অনেকের মুখেই শোনা গেল, ‘সাংসদের বাড়ির সামনে যেভাবে বন্দুক নিয়ে লোকগুলো দাঁড়িয়ে থাকেন, তাতে যেতে খুব ভয় লাগে।’ 
আপনাদের জেলায় তো এখন দু’জন সাংসদ। নিশীথবাবুকে না পেলেও, আরেকজন তো রয়েছেন অনন্ত মহারাজ। তাঁর কাছে যাচ্ছেন না কেন? কোচবিহারের বাসিন্দা রাজেশ রায় (নাম পরিবর্তিত) কিছুটা ভয়ে ভয়েই বললেন, ‘দাদা ওঁর বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। উনি আমাদের মহারাজ। তাই ওঁর কাছে নিজের ইচ্ছামতো কোনও আবদার নিয়ে যাওয়া মুশকিল। তবে ওঁর বাড়িতে ঢোকাও সাধারণ ভোটার বা বাসিন্দাদের কাছে বেশ কষ্টসাধ্য। প্রথমত মহারাজ, তার উপর গতবছর রাজ্যসভা থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। একেবারে ডবল ইঞ্জিন। ফলে ওঁর বাড়িতেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি বেশ ভালো।’ রাজেশবাবুর কথাতেই, ‘মহারাজের বাড়ির গেটেও অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। সেই সঙ্গে ওঁর নিজস্ব প্রহরীরাও রয়েছেন। ফলে এতসব নিরাপত্তা টপকে অনন্ত মহারাজের কাছে পৌঁছনো বেশ কষ্টসাধ্য।’ একই কথা বলছেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের অনেকেই। এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি কিছু বলতে চাননি। এমনকী তাঁর বাড়িতে দেখা করেও এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়, তিনি দেখা করতে রাজি হননি। জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক বৈঠকে ব্যস্ত রয়েছেন। 
এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয় বিজেপির জেলা পর্যবেক্ষক অমিতাভ মিত্রর কাছে। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পনা করেই এই বিষয়গুলি প্রচার করছে। যদিও বাস্তবটা এরকম নয়। নিশীথবাবু শুধু সাংসদই নন, তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। তাই তাঁকে দিল্লিতে দীর্ঘসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই হয়তো অনেকসময় এলাকায় কম সময় দিতে পারেন। তবে ভবিষ্যতে উনি জিতে এলে, এলাকায় সাংসদ যাতে আরও বেশি সময় দিতে পারেন, সেবিষয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। 
অন্যদিকে, অনন্ত মহারাজ শুধু সাংসদ নন, তিনি একটি সম্প্রদায়ের প্রধানও। তাই তাঁকে সেই কাজে বহু জায়গাতেই অনেক সময় দিতে হয়।’  

15th     April,   2024
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ