বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

কলকাতায় হোগলা বনে, চিলেকোঠায় বোমা-বন্দুক, নেতাজির পরোয়ানা খুঁজতে গিয়ে মিলল বিপ্লবীদের রোমহর্ষক নথি
 

সুকান্ত বসু, কলকাতা: ভাবা যায়! উত্তর বা মধ্য কলকাতায় তখন হোগলার বন। বিস্তর জলাভূমি। সে কলকাতায় ঘোড়ায় চড়ে দাপিয়ে বেড়ায় ইংরেজ পুলিস। সে কলকাতাতেই ইংরেজদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়াই বিপ্লবীদের। এ সব গল্প অজানা নয়। কিন্তু সম্প্রতি ব্যাঙ্কশাল কোর্টের গোপন কুঠুরি থেকে তৎকালীন সময়ের কিছু গোপন নথি উদ্ধার হয়েছে। সেখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিরুদ্ধে জারি হওয়া হুলিয়ার নথিটি মেলার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সেটি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে যা পাওয়া গিয়েছে তাও কিছু কম নয়। খাস কলকাতায় বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে করা রোমহর্ষক কিছু মামলার নথি সামনে এসেছে। যা রীতিমতো চমকপ্রদ। 
নথি পড়লে জানা যাবে, তখন মধ্য-উত্তর কলকাতাকে ‘আদর্শ’ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন বিপ্লবীরা। নিরাপদে অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন। গা ঢাকাও দিতেন। শহরের কোনও পোড়ো বাড়ির অন্দরমহলের পরিত্যক্ত ঘর, নোংরা আবর্জনার স্তূপ, কোনও ভাঙাচোরা বাড়ির চিল ছাদ, ঘরের কোণ বা দেওয়ালের খাঁজ, হোগলার বনে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন। কুলুঙ্গিতে ঝুলিয়ে দিতেন ছবি। ফলে পুলিস কিছুতেই অস্ত্রের হদিশ পেত না। বহুবার তল্লাশি চালানোর পর কোনও একসময় উদ্ধার হতো অস্ত্র। বাড়ির মালিকের জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাতসারেই হয়ত সেসব অস্ত্র লুকিয়েছিলেন বিপ্লবীরা। ফলে কোথাও জলায় নেমে বা জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে ইংরেজরা উদ্ধার করত রিভলভার, পিস্তল ও অন্যান্য অস্ত্র। তারপর যে মামলাগুলি হতো সেগুলির কিছু নথি মিলেছে ব্যাঙ্কশাল আদালতের ওই ঘরটি থেকে। উদ্ধার হওয়া নথির সংখ্যা প্রায় ৪০। অধিকাংশ মামলা হল ইংরেজ পুলিসের দায়ের করা আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মামলা। পুলিস স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তা দায়ের করেছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা অস্ত্রশস্ত্র, বোমা ও বোমা তৈরির উপকরণ কীভাবে লুকিয়ে রাখা রাখতেন সে তথ্যও উঠে এসেছে নথির লেখাপত্রে। 
সে নথি এতটাই পুরনো যে, তা নষ্ট হতে বসেছে। তবে সেগুলি সংরক্ষণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। মামলার কাগজপত্র লেখা হয়েছিল ঝর্ণা কলম দিয়ে। সেই লেখা ঝাপসা হয়ে গিয়েছে। মতো পড়ার অবস্থায় নেই। তাও পাঠোদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আদালতের এক আধিকারিক বলেন, উদ্ধার হওয়া কাগজপত্র জাতীয় সম্পদ। আগামী দিনে সমস্ত নথি আলিপুর জজ কোর্ট কিংবা কোনও মহাফেজখানায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছে। যাতে ইচ্ছুকরা স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কালের মামলাগুলির কাগজপত্র চোখে দেখার সুযোগ পান।
নথিপত্রগুলির কথা শোনার পর, চিলেকোঠার ঘরটির কুলুঙ্গি একবার হাতড়ে দেখবেন নাকি হাতিবাগানের কেউ। বউবাজারের কেউ টর্চ জ্বেলে খুঁজে দেখবেন নাকি কয়লা রাখার ঘরটা।

30th     April,   2024
 
 
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ