বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

সুন্দরবনের জনশূন্য এলাকায় ‘সুপারবাগ’
বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে সমগ্র বাস্তুতন্ত্র

অর্পণ সেনগুপ্ত, কলকাতা: সুন্দরবন হল দেশ তথা বিশ্বে বনজ বাস্তুতন্ত্রের অন্যতম। কড়া প্রহরা থাকলেও তার ফাঁক গলে ঢুকে পড়ছে শত্রুরা। তারা এতটাই ক্ষতিকারক যে, সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের সমগ্র বাস্তুতন্ত্রই বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে। এই বহিঃশত্রুরা কোনও চোরাশিকারি বা জঙ্গি নয়। খালি চোখে তাদের দেখাও যায় না। অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কথাই বলা হচ্ছে। বিজ্ঞান বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলে সুপারবাগ। সুন্দরবনে যা প্রচুর পরিমাণ মেলায় বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ বা আইসার- কলকাতার বিজ্ঞানীরা ঠাকুরান ও মাতলার মতো ব-দ্বীপ কেন্দ্রিক নদীতে নমুনা সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন কয়েক বছর আগে। যে ২০০টি এলাকা (গবেষণার পরিভাষায় পয়েন্ট) থেকে তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন, তা হয় সাধারণ মানুষের প্রায় অগম্য বা কার্যত নিষিদ্ধ। জনবসতি থাকার কোনও প্রশ্নই নেই। সেখানে কীভাবে এল এই বিপদ? বিজ্ঞানী দলের প্রধান পুণ্যশ্লোক ভাদুড়ি বলেন, আমরাও প্রথমে বুঝতে পারিনি, এটা কীভাবে সম্ভব। সেখানে পর্যটক তো দূরের কথা, স্থানীয়রাও যান না। তারপর বোঝা গেল, মূলত গঙ্গা থেকেই দূষিত পদার্থের মাধ্যমে শাখানদীগুলিতে প্রবেশ করেছে ব্যাকটেরিয়াগুলি।
পিয়ারজে নামে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। দেখা যাচ্ছে, সুপারবাগের পাশাপাশি, তামা, নিকেল, আর্সেনিকের 
মতো ভারী ও পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক ধাতুও প্রচুর পরিমাণে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি টেট্রাসাইক্লিন, গ্লাইকোপেপটাইড, অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইডের মতো বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতিও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মনুষ্য বা প্রাণীজাত বর্জ্য নদীর মাধ্যমে এসে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। মহাসাগরের স্বাস্থ্য উদ্ধারে পর্তুগালে চলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ওশান কনফারেন্স। কাকতালীয়ভাবে তার মধ্যেই সামনে এসেছে সুন্দরবন ও মোহানার এই ভগ্নস্বাস্থ্যের কথা। 
সুপারবাগ ভয়ের কেন? এ ধরনের ব্যাকটেরিয়াগুলি সাধারণ অ্যান্টিবয়োটিকে কাবু হয় না। কোনও মানুষ বা প্রাণীর দেহে যদি বাসা বাঁধে, তাহলে খুব কড়া ডোজের বিশেষ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তাকে কাবু করা গেলেও যেতে পারে। এবার জনশূন্য এলাকায় থাকে বাঘ, কুমির বা হরিণের মতো পশুরা। তাদের শরীরে কোনওভাবে সেগুলি গেলে ফল হতে পারে মারাত্মক। কারণ, বন্যপ্রাণীর সেভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। এর ফলে মহামারী হওয়া অসম্ভব নয়। পুণ্যশ্লোকবাবু বলেন, মাছ বা বনজ খাদ্যসামগ্রীর মাধ্যমে এগুলি মানুষের শরীরেও ফিরে আসতে পারে। সেটা অন্য বিপদ। তাছাড়া, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ বিভিন্ন উপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং জীববৈচিত্র্যের মিলনস্থল। সেগুলিও বিপদের মুখে পড়বে।
সেই সুপারবাগ। ছবি গবেষকদের সৌজন্যে।

6th     July,   2022
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ