বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

ছোট্ট কাঠের নৌকোয় কলকাতা থেকে 
আন্দামান, ইতিহাসের পাতায় বাঙালি
দুঃসাহসিক অভিযানের ৫০ বছর

নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: ছোট্ট কাঠের নৌকো। তাতে মোটর বা কোনও মেশিন নেই। নেই পালও। দাঁড় টেনেই পাড়ি দিতে হবে ৯০১ নটিক্যাল মাইল সামুদ্রিক পথ। দুর্গম পথ, প্রতি মুহূর্তে বিপদের হাতছানি, তবুও দুই যুবকের মুখে হাসি। একজন কলকাতার ২৩ বছরের তরুণ বাঙালি পিনাকীরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। অন্যজন ডিফেন্স অফিসার জর্জ অ্যালবার্ট ডিউক। তাঁরা যেন শরৎচন্দ্রের ইন্দ্রনাথের মতো বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘মৃত্যু ভয় আবার ভয় কী?’ বাস্তবিক অর্থেই দুঃসাহসিক অভিযান। কলকাতা থেকে ছোট্ট কাঠের নৌকোয় সুদূর আন্দামানে পাড়ি! ১৯৬৯ সালের সেই অভিযানে ইতিহাস তৈরি করেছে বাঙালি।
ঐতিহাসিক সেই আন্দামান অভিযানের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে হচ্ছে এবার। স্বর্ণজয়ন্তী বর্ষ। খাতায়কলমে ২০১৯ সালেই ৫০ বছর পূর্তি হলেও করোনার জেরে তা পালন করা হয়নি। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এই অভিযানের স্বর্ণজয়ন্তী বর্ষ উদযাপন করল ‘সি এক্সপ্লোরার্স ইনস্টিটিউট’। পিনাকীবাবুর স্ত্রী শিউলি চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই এই সংস্থা পথ চলছে। পিনাকীবাবু প্রয়াত হয়েছেন আগেই। তবে এখনও জীবিত তাঁর সহযাত্রী জর্জ অ্যালবার্ট ডিউক। তিনি নিজে এদিনের হাজির থেকে সেই অভিযানের স্মৃতি তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন পিনাকীবাবুর ছেলে (এক্স কর্নেল) আনন্দ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আয়োজক সংস্থার সিইও। ছিলেন পিনাকীবাবুর পুত্রবধূ তথা সংস্থার সম্পাদক ডঃ সুদেষ্ণা চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই। প্রেস ক্লাব চত্বরে অভিযানের ফটো কোলাজ প্রদর্শন করা হয়। 
কীভাবে শুরু হয়েছিল অভিযান? সংস্থার কথায়, খবরের কাগজে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে সাহসী বাঙালি তরুণদের নৌকোয় করে কলকাতা থেকে সদূর আন্দামান অভিযানের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন বিখ্যাত সাঁতারু মিহির সেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে মিহিরবাবুর অফিসে হাজির হয়েছিলেন ২৩ বছরের পিনাকী। তিনি তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরবিদ্যার গবেষক ও রোয়িংয়ে চ্যাম্পিয়ন। ইন্টারভিউ, নানা পরীক্ষা ও শারীরিক সক্ষমতার প্রমাণ দেওয়ার পর তিনি নির্বাচিত হন। তাঁর সঙ্গী হন জর্জ অ্যালবার্ট ডিউক। বর্তমানে তিনি দুবাইয়ে থাকেন।
১৯৬৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তাঁরা দু’জন কলকাতায় গঙ্গার বুকে দাঁড় টানা শুরু করেন। যে কাঠের নৌকোটি নিয়ে তাঁরা পাড়ি দিয়েছিলেন, সেটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘কানোজি আংরে’। যাবতীয় বাধা, হাজারো প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে তাঁরা শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছিলেন। মাঝখানে দু’বার তাঁরা ‘নিখোঁজ’ হন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সকলেই উদ্বেগে ছিলেন। কিন্তু বাঙালি পিনাকী বা ডিউক—কেউই হাল ছাড়েননি। তৈরি হয় ইতিহাস। ৮ মার্চ তাঁরা দু’জন পোর্ট ব্লেয়ারের অ্যাবার্ডিন জেটিতে যখন পৌঁছলেন, তখন সকাল ৯টা ৫৫মিনিট। তাঁদের স্বাগত জানাতে সমুদ্রপাড়ে তখন জনসমুদ্র।

5th     July,   2022
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ