বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

খানাকুলে ঘুম উবেছে জলবন্দি মানুষের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: চোখ রাঙাচ্ছে ‘গুলাব’। এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব না পড়লেও নিম্নচাপের কারণে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাতেই ঘুম উবেছে খানাকুলবাসীর। রূপনারায়ণের ভাঙা বাঁধ দিয়ে জল ঢুকে আবারও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতেই আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরামবাগ মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। খানাকুল-২ ব্লকের ধান্যঘোরী পঞ্চায়েত এলাকার ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংলগ্ন গ্ৰামগুলির উপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় চলছে সতর্কতার প্রচার। পরিস্থিতির উপর নজর রাখার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বৃষ্টিতে রূপনারায়ণের জল বাড়লে নদী পার্শ্ববর্তী গ্ৰামের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরামবাগের এসডিও হাসিন জাহেরা রিজভি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকছে কন্ট্রোল রুম। খানাকুল-১ ও ২ ব্লকের বাঁধগুলির সংস্কার কাজ চলছে। যদি নদীতে জল বাড়ে এই এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ ব্লক আধিকারিকদের দেওয়া হয়েছে। গ্ৰামবাসীদের সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে নদীর জলস্তর বাড়ছে কি না তাও দেখা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য পুলিস প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকাতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নিম্নচাপের বৃষ্টিতে রূপনারায়ণ নদের জল বাড়লে একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়। ভাঙা বাঁধ দিয়ে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। তার জেরে খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এখনও বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন রয়েছে। তার মধ্যেই গুলাব চোখ রাঙানোয় খানাকুলবাসীর আতঙ্কে ঘুম উবে গিয়েছে। ফের ভাঙা বাঁধ দিয়ে জল ঢোকার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
খানাকুল-২ বিডিও শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ধান্যঘোরীর বন্দর, জেলেপাড়া মাইতিপাড়ার বাসিন্দাদের আমরা ইতিমধ্যেই ধান্যঘোরী হাইস্কুলের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে এসেছি। কারণ, নদীতে জল বাড়লে এই এলাকাগুলি আবার ডুবে যেতে পারে। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। আমরা স্থানীয় থানা ও গ্ৰাম পঞ্চায়েতগুলিকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি‌। আমাদের মূল লক্ষ্য, জল বাড়লে এই এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। যাতে কোনও প্রাণহানি না হয়। গত শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এই এলাকাগুলি পরিদর্শন করে যান। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সতর্কতামূলক যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তারজন্য তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। আগামী চার-পাঁচ দিনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ধান্যঘোরীর সামন্ত পাড়ার বাসিন্দা অনুপ সামন্ত বলেন, গত বৃহস্পতিবার প্রশাসন আমাদের এই ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসে। ওইদিন থেকে স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখানে আছি। এদিন প্রশাসনের লোকজন এসে জানান, আমাদের আরও চারপাঁচ দিন থাকতে হবে। বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তার জেরে নদীর জল বাড়লে ভাঙা বাঁধ দিয়ে আবারও বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যাবে। 
বছর বাহান্নর ফুল্লরা সামন্ত বলেন, এদিন প্রশাসনের লোকজন সকালে এসে জানায়, আমরা যেন ত্রাণ শিবির থেকে না বের হয়। জানি না আর কতদিন এখানে থাকতে হবে। ধান্যঘোরী গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান বীণাপাণি ভৌমিক বলেন, বাসিন্দাদের আমরা মাইকিং করে সতর্ক করছি। ২৪ ঘণ্টা আমরা প্রস্তুত আছি। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত আছে।  খানাকুলের ধাননগর পঞ্চায়েতের জেলেপাড়া এলাকা এখনও জলমগ্ন। -নিজস্ব চিত্র

27th     September,   2021
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ