Bartaman Patrika
 

অন্ধকার দূর হবেই,
আশায় অবনিবাবু
মৃণালকান্তি দাস

বনগাঁর শুকপুকুড়িয়া,  জায়গাটার নাম শুনলেই তাঁর বুক কাঁপতে শুরু করে। আজও।
দোতলা বাড়ির সামনে নিচু পাঁচিলের গায়ে সেই বটগাছ। আবছা হয়ে আছে একটা গোরুর গাড়ি। ওইটুকুই। মিতুলের শুকপুকুড়িয়া মানে ওই বটগাছের ছায়া আর গোরুর গাড়ি। বাকিটা থমকে গিয়েছে চুপি চুপি কলকাতা পাড়ি দেওয়ার এক ভোর রাতে। তখন মিতুলের বয়স সাড়ে পাঁচ কি ছয়। সেই কত বছর আগে বদলে গিয়েছিল তাদের পতাকার রং। তবুও মিতুলের বাবা অবনিবাবু আজও ভাবেন, দেশ বদলে স্বাধীনতা মিলল কি,  কে জানে! দেশভাগের পরে মিতুলের দাদুর মনে হয়েছিল, বনগাঁর গা ঘেঁষা গঞ্জের ঠিকানাটা লাউ মাচার মতোই একদিন পাকাপোক্ত হয়ে যাবে। রুজি রোজগারের জেরে সে আর হল কই! ভরা পরিবার নিয়ে ধানের পালুই,  কই-পুকুর ছেড়ে কলকাতা চলে আসতে হয়েছিল মিতুলদের গোটা পরিবারকে। টালিগঞ্জের এক কলোনিতে। সে কয়েক দশক আগের কথা।
পুজো এলেই ফি বছর ঘরের কোণে চেয়ারে হেলান দিয়ে বৃদ্ধ অবনিবাবু আওড়ান ওপার বাংলার কথা। বরিশালের গ্রামের বাড়িতে সেই ভোরের শিশির, আবছায়া ধোঁয়াশা আর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্তোত্র উচ্চারণ। ভোর চারটের মায়ামাখা ঘুম ঘুম চোখে সংবিত ফিরে পেয়ে সব একাকার হয়ে যেত। মহালয়া শুরু। চোখ বুজে,  ভাবতেন দেবী কীভাবে সকলের শুভ ইচ্ছায় প্রবল তরঙ্গে দৈব শক্তির সম্মিলিত সজ্জায় সজ্জিত হচ্ছেন অশুভকে দমন করবেন বলে। সেই শক্তি নেমে আসছে আমাদের রক্ষা করবে বলে। পিতৃতর্পণের শেষে শুরু দেবীপক্ষ। ...‘বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ আমরা গেঁথেছি শেফালি মালা / নবীন ধানের মঞ্জরী দিয়ে সাজিয়ে এনেছি ডালা।’  মহালয়ার সেই পুণ্য সকালের জন্য বারবার বাঙালি হয়ে জন্মাতে চাই আমি। আজও বলেন অবনিবাবু।
মনে পড়ে যায়,  সেই ছোটবেলায় বাবা বলতেন,  এই যে শরতে কাশফুলে ভরে যায় নদীর চর,  এই যে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসে,  এই হল দেশের গন্ধ। এই আমাদের উৎসব। এই আমাদের বাড়ি। অবনিবাবু পুরনো রেডিওটা চালিয়েই টের পান ব্যাটারি নেই। ক’দিন নাগাড়ে ঝিরঝির টিপটিপের পরে,  আজ ধরেছে। রোদ লুটোচ্ছে রাস্তায়,  ভাদ্র। দুটো ব্যাটারি কিনতে হবে। বিছানার উপরে উথালপাতাল খবরের কাগজ ফড়ফড় করে তাঁর সামনে নিজেকে বিছিয়ে দেয় আবার...। সেই এনআরসি আতঙ্ক। আত্মহত্যা। সহ্য হয় না। চোখ বুজে ফেলেন বৃদ্ধ অবনিবাবু।
মিতুল জিজ্ঞাসা করে, বাবা কী দেখছ?  অবনিবাবু একটা ঘন শ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘না মা,  কিস্যু না,  হেই দেখ কেমন নিশ্চুপে পুজো আইস্যা গেল...।’  বলেন, সব কিছুর সময় আছে। শুভ মুহূর্তগুলো তাই গাঁথা হয়ে যায়। তা অমান্য করলে মন খারাপ হয়ে যায়। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে অবনিবাবু বলেন, যাঁর কোনও ঠিকানা নেই,  তাঁর আবার পুজো কী? অসমের কত মানুষের জীবন থেকে তো এক লহমায় পুজো উড়ে গিয়েছে। তাদের কথা কে ভাবে? বরিশালের ভিটেমাটি ছেড়ে আসার বাহাত্তর বছর পরেও অবনিবাবুর পাঁজরের ঘাগুলো এখনও শুকোয়নি। সকালেই কাগজে দেখেছেন, অসমের মতো এ রাজ্যেও জারি হতে চলেছে এনআরসি। এমনকী রেশন কার্ড সংশোধন না করলে সেই ব্যক্তিকে বিদেশি বলে গণ্য করা হবে। এই ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা বাংলাকে। অবনিবাবুকেও। তাহলে কি আবার দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে?  ৭২ বছরের স্মৃতি আগলে এ দেশ। এই বৃদ্ধ বয়সে কোথায় যাবেন? এ বয়সে কি আর কাঁটাতার ছেঁড়া সম্ভব? প্রশ্নের জাল জড়িয়ে ধরছে তাঁকে। মিতুল বলে, সরকার তো বারবার বলছে ভয় নেই। কিন্তু অবনিবাবু যে ঘর পোড়া গোরু। তাঁকে বোঝাবে কে? কথার মাঝে হঠাৎ চুপ করলেন। ছোট্ট ঘরটায় তখন শুধু সিলিং ফ্যানের শব্দ। খানিক থেমে বললেন,  ‘শুনলাম,  ট্রাইবুন্যালে যাওয়াটা অনেক খরচসাপেক্ষ।’ আবার একরাশ চিন্তা,  উদ্বেগ জড়ো হয়ে তৈরি নীরবতা।
মিতুলও শুনেছে, এনআরসি আতঙ্ক গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। সত্যিই তো এতদিন দরকার পড়েনি রেশন কার্ডে নাম ঠিক আছে কি না দেখার। ভোটার কার্ডের সঙ্গে নাম মিলিয়ে দেখার কথাও ভাবেনি কেউ। আধার কার্ডে কত মানুষের নামের বানান ভুল আছে। ঠিকানা ভুল আছে। অনেকে তো ভোটার কার্ডই হারিয়ে ফেলেছিলেন। এনআরসির আতঙ্কে আধার কার্ড করা কিংবা নাম সংশোধনের জন্য রাত থেকেই লাইন পড়ছে বিভিন্ন সরকারি অফিসে। মিতুল ভাবে, যে মানুষগুলোর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে গিয়েছে বন্যা কিংবা কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাঁদের কী হবে। যে প্রান্তিক মানুষগুলো দু’বেলা ভালো করে খেতে পান না, যারা পরিচিতি পত্রকে নিছক বাবুদের কাগজপত্র বলেই চিনে এসেছে, তাঁদের কী হবে।
আর অবনিবাবু অন্ধকারে বসে ভাবেন, আরও কত অন্ধকার অপেক্ষায় রয়েছে! মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে,  একা একা জানলার ধারে এসে দাঁড়ান। কান পাতলেই শুনতে পান,  ঢাক বাজছে শুকপুকুড়িয়ার কোনও মণ্ডপে। এক দেশ থেকে অন্য দেশ,  বাড়ি বদলে যায়,  বদলে যায় পরিচয়। বদলায় না পুজোর দিনক্ষণ। পুজো এসে গেল। একটি ছোট্ট বাক্য। মাত্র তিনটি শব্দ। কী প্রচণ্ড তার জ্যোতি। তারও আছে সাতটি অমরাবতী বইবার মতো অমেয় শক্তি— তাতে সব অন্ধকার দূর হয়। সব গুমোট কেটে যায়। খরায় বৃষ্টি নামে। বন্যার জল শুকিয়ে যায়। সত্যিই কি তাই? তাহলে গাঁয়ে গঞ্জে এত এনআরসি আতঙ্ক কেন?  ‘পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম’,  মানুষের মধ্যে মনুষ্যধর্মকে পুনঃসংস্থাপিত করার জন্য যাঁর আসার কথা,  বহিঃপ্রকৃতিকে পল্লবিত করার জন্য নবপত্রিকার প্রতীকে,  আর অন্তঃপ্রকৃতিকে সঞ্জীবিত করার জন্য মাতৃকাবেশে যাঁর আসার কথা,  তিনি কোথায়?
জানলা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে অবনিবাবু। আকাশে এখনও কালো মেঘের ঘনঘটা!
28th  September, 2019
মহালয়া কী ও কেন?
গুঞ্জন ঘোষ

পিতৃপক্ষ আর দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ মহালয়া। মহালয় শব্দ থেকেই স্ত্রীবাচক পদ মহালয়া। তিথি শব্দটি যেহেতু স্ত্রীলিঙ্গ তাই এর বিশেষণ পদটি হল মহালয়া। অনেকরকমভাবে মহালয় শব্দের অর্থ হয়। যেমন, মহত্ত্বের আলয়, মহা লয়—মোক্ষকারক যেখানে পরমাত্মায় অর্থাৎ পরব্রহ্মে লয় প্রাপ্তি ঘটে। কেননা, পরমাত্মাই তো হল পরব্রহ্ম—মহালয়।
বিশদ

28th  September, 2019
মহালয়ার ভোর, এক অন্য
অনুভবের, জাগরণের ভোর
ভবেশ দাশ

 —আজ মহালয়া শুনেছ?
—মহালয়া আবার শুনবে কী! মহালয়া তো তিথি, তা কি শোনবার জিনিস?
—আরে আকাশবাণীর মহালয়ার কথা বলছি, যার নাম মহিষাসুরমর্দিনী। বিশদ

28th  September, 2019
তর্পণ পর্বের মহত্ত্ব
চৈতন্যময় নন্দ

আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের সমাপ্তি ও দেবীপক্ষের শুভ সূচনা। স্মরণাতীত কাল থেকে যে তিথির মাহাত্ম্য গৌরব এত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ, সেই ‘মহালয়া’ নামের তাৎপর্য অনুসন্ধান করা প্রয়োজন সবার আগে। স্ত্রীলিঙ্গ তিথি শব্দের বিশেষণ বলে মহালয়া, অর্থাৎ মহালয়া তিথি। বিশদ

28th  September, 2019

Pages: 12345

একনজরে
লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত। ধৃতের নাম ইন্দরপাল সিং গাবা। তিনি ব্রিটেনের হাউন্সলোরের বাসিন্দা। দিল্লি থেকে ...

বুধবার রাতে নদীয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়ায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে এক যুবক ছিটকে একটি টোটোর কাচ ভেঙে ঢুকে যান। ...

কথা ছিল বাড়ি ফিরে পাকা বাড়ি দেওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে আর ফেরা হল না। কফিনবন্দি হয়ে ফিরছে পরিযায়ী কিশোর শ্রমিক। কর্মরত অবস্থায় বহুতল ...

ভোট মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরম। আজ, শুক্রবার, লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। বৃহস্পতিবার আগামী পাঁচদিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট প্রভসিমরন, পাঞ্জাব ১০৭/১ (৭.৫ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:29:44 PM