গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমার পাঁচ ব্লকেই সর্ষে চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে কাটোয়া মহকুমার পাঁচ ব্লক জুড়ে মোট ১১ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে সর্ষে চাষ হয়েছে। এরমধ্যে কাটোয়া ১ ব্লকে এক হাজার ৮৫ হেক্টর, কাটোয়া ২ ব্লকে এক হাজার ৭৫০ হেক্টর, কেতুগ্রাম ১ ব্লকে এক হাজার ২৩০ হেক্টর, কেতুগ্রাম ২ ব্লকে ৩ হাজার ২০ হেক্টর ও মঙ্গলকোটে ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সর্ষে চাষ হয়েছে। এছাড়া এবার পূর্বস্থলী ২ ব্লকে এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে সর্ষে চাষ হয়েছে।
এবার আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে প্রথমদিকে সরষে চাষেও হিমশিম খেয়েছেন চাষিরা। আমন ধান তোলার সময় নিম্নচাপের কারণে ধান তুলতে বিলম্ব হয়। তার ফলে সর্ষে বুনতেও বেশ কিছুটা দেরি হয়। এরপর আবারও নিম্নচাপ লেগেই রয়েছে। দফায় দফায় নিম্নচাপ ধান ও সব্জিচাষের অনেকটাই ক্ষতি করেছে। এই আবহাওয়া প্রভাব ফেলেছে রবিশষ্য চাষেও। মঙ্গলকোটের চাষি বসিরউদ্দিন শেখ, মজনু শেখ বলেন, বাজারে তেলের দাম দুশো টাকা কেজি। তাই এখন সর্ষে চাষ না করে উপায় কী! অন্তত ঘানিতে সর্ষে পিষে খেতে তো পারব। তাছাড়া বোরো চাষে পর্যাপ্ত জলের অভাব দেখা দেয়। তাই বিকল্প লাভজনক চাষ হিসাবে সর্ষেই বুনেছি।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, প্রথামাফিক চাষের বাইরে এসে বিকল্প চাষের প্রতি কৃষকদের জোর দিতে কৃষিদপ্তর থেকে বারবার প্রচার করা হয়। কাটোয়া মহকুমা এলাকায় বহু কৃষক সর্ষে চাষ করেন। বর্তমানে এই চাষের প্রবণতাও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকরা। আমাদের রাজ্যে সর্ষে ৩২ শতাংশ উৎপন্ন হয়। তাই ভিন রাজ্য থেকে সর্ষের তেল আমদানি করতে হয়।
রাজ্যে সর্ষে চাষে কৃষকরা আগ্রহ দেখালে তেলের আমদানি কমবে। সেক্ষেত্রে সর্ষের তেলের দাম কমার আশা দেখা দেবে।
কৃষি আধিকারিকদের একাংশ জানান, সর্ষে চাষের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে বীজ বোনার সঙ্গে ফলনের একটা সম্পর্ক রয়েছে। এই ফসল তাপ সংবেদনশীল হওয়ায় তাপমাত্রার কমবেশির সঙ্গে সুষম বৃদ্ধির একটা সুসম্পর্ক রয়েছে। সাধারণভাবে রাই সরিষার ফলন ঠান্ডা আবহাওয়ায় ভালো হয়।
তাই কার্তিক মাসের শুরু থেকে বা অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। তবে বীজ বোনা আশ্বিনের দ্বিতীয় বা শেষ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে।
সেচ প্রাপ্ত এলাকায় সর্ষের ভালো ফলন পেতে হলে কার্তিকের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে বীজ বুনে ফেলা উচিত। কার্তিকের তৃতীয় সপ্তাহের পর টোরি সরষের চাষ আদৌ লাভজনক নয়। এই সব বিভিন্ন কারণে সঠিক সময়ে বীজ বোনাটা সফল ফসল উৎপাদনের মূল চাবিকাঠি।