জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত?
সেভাবে দেখলে শরীরের কোনও নির্দিষ্ট স্বাভাবিক তাপমাত্রা হয় না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা বদলে যেতে পারে। সাধারণত দিনে ৯৮.৯ এবং রাতে ৯৯.৯ ডিগ্ৰি ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রা থাকলে তাকে জ্বর বলা হয়। তবে সন্ধেবেলা শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্ৰির উপরে থাকলে সেটা জ্বর নয়। এক্ষেত্রে চিন্তার কোনও কারণ নেই।
জ্বর কেন আসে?
কোনও অংশে প্রদাহ বা সংক্রমণ দেখা দিলে শরীর তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে জ্বর হয় সাধারণত।
বারবার জ্বর আসার কারণ কী?
একাধিক কারণ থাকতে পারে। তবে ভারতের ক্ষেত্রে প্রথমেই বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কথা বলতে হয়। টিবি, জীবাণুবাহিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে ঘুরে ঘুরে জ্বর আসতে পারে। এইচআইভি বা অন্য কোনও ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলেও জ্বর আসে। এছাড়া রয়েছে ছত্রাকের সংক্রমণ। যেমন ক্রিপ্টোকক্কসিস। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বারবার জ্বর আসার আরেকটা কারণ হল ম্যালিগন্যান্সি বা ক্যান্সার। সাধারণত প্রবীণদের শরীরে বাসা বাঁধে এই মারণ রোগ। তবে কমবয়সিদের শরীরেও এই রোগের সন্ধান মেলে। যকৃত, কিডনির টিউমারে ঘুরে ঘুরে জ্বর আসার আশঙ্কা থাকে। শুরুতে অনেক সময় তা বোঝা যায় না। এছাড়া থাইরয়েড থাকলেও বারবার জ্বর আসে। আবার শরীরের কোনও অংশে পুঁজ জমে থাকলেও জ্বর আসতে পারে। যেমন হাঁটু বদলানোর পর সেই জায়গায় সংক্রমণ হয়েছে। বা ইনফেকটিভ এনডোকার্ডাইটিস (হার্টের ভালভে), প্রস্থেটিক ভালভে সংক্রমণ থাকলেও শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। বারবার জ্বর আসে।
জ্বর সাধারণ নাকি জটিল সমস্যার কারণে হচ্ছে সেই পার্থক্য কীভাবে করা হবে?
এক্ষেত্রে রোগীর ইতিহাস খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। কবে থেকে জ্বর আসা শুরু হয়েছে। কতদিন ধরে সেটা থাকছে। কতবার আসছে। জ্বর নিজে থেকে কমছে? নাকি রোগীকে প্রতিবার ওষুধ খেয়ে কমাতে হচ্ছে। সব দেখতে হবে। উপসর্গ জানার চেষ্টা করতে হবে। শরীরের কোন অংশে সমস্যা হচ্ছে সেটা জানা দরকার। যেমন কেউ যদি বলেন, মাথায় ও ঘাড়ে ব্যথার সঙ্গে জ্বর আসছে। সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে মেনিনজাইটিসের কারণে এমনটা হতে পারে। পাইরেক্সিয়া থাকলে শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্ৰি ফারেনহাইটের বেশি থাকে। বেশ কয়েকদিন জ্বর থাকে। জ্বরের কারণ না জানতে পারলে সেটা মেডিসিনের ক্ষেত্রে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। পুরোটাই গোয়েন্দাগিরির মতো। ইতিহাস জানার পর পরীক্ষা করতে হয়। এর কোনও শেষ নেই। তবে এই প্রক্রিয়া যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ। তাই সবকিছু বুঝে নিয়ে সঠিক পরীক্ষা করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়।
বড় কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সংক্রমণের কারণে বারবার জ্বর আসছে। এমনটা কেন হয়?
সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। পরীক্ষা করে সেটা জানা দরকার। যেমন ডায়াবেটিস থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়া শরীরের কোনও অংশে লুকানো ম্যালিগন্যান্সি থাকতে পারে। অর্থাৎ, শরীরে ক্যান্সার রয়েছে। কিন্তু তার উৎসস্থল অজানা। আবার এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তিদের ঘুরে ঘুরে জ্বর আসতে পারে। অনেক সময় মস্তিষ্কে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। তাই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খতিয়ে দেখা খুব জরুরি।
ইমিউনিটি বাড়ালে সমস্যা মিটবে?
এর কোনও নির্দিষ্ট উপায় নেই। সুস্থ জীবনযাপন করতে হবে। খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। কোনওরকম নেশা করা চলবে না। তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। রোগের বিরুদ্ধে বেশিক্ষণ লড়াই করা যায়। তবে অনেকক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকাটাই এক ধরনের রোগ।
ছোটদের ক্ষেত্রে কতটা বিপজ্জনক?
জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিস, কাওয়াসাকি রোগ থাকলেও শিশুদের বারবার জ্বর আসতে পারে। আবার অনেকসময় কিডনির রোগও দেখা দেয়। তাই বার বার জ্বর এলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুসারে রোগ নির্ণায়ক পরীক্ষা করে জ্বরের মূল কারণ জানতে হয়।