কর্মের উন্নতি হবে। হস্তশিল্পীদের পক্ষে সময়টা বিশেষ ভালো। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মের প্রসার। আর্থিক দিকটি অনুকূল। ... বিশদ
আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রে আমলকী খুব গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ দ্রব্য। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। আয়ুর্বেদ ওষুধ তৈরিতেও কাঁচা ও শুকনো আমলকী ব্যবহার করা হয়। বৈদিক যুগ থেকেই এই ফলের ব্যবহার শুরু হয়।
মধুর-অম্ল-লবণ-তিক্ত-কটু-কষা— ছ’টি রসই মেলে আমলকীতে।
ভিটামিন সি-র কারখানা
প্রতি ১০ গ্রাম কাঁচা আমলকীতে ২৫০-৩৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি থাকে। এই ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। সংক্রমণজনিত সমস্যাও প্রতিহত করে।
সর্দিকাশির সমস্যা মেটাতে এই ফল বিশেষ উপকারী। তবে কে, কীভাবে আমলকী খাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করবে তিনি কতটা ভিটামিন সি পাবেন। আমলকীতে যে পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে, তা পুরোটা পেতে চাইলে এই ফল কাঁচা অবস্থাতেই খেতে হবে।
ভিটামিন সি ছাড়া আর কী কী?
ভিটামিন-সি ব্যতীত আমলকীতে পাবেন সবচেয়ে শক্তিশালী পদার্থ ‘সায়াভানাপ্রা’। পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফ্যাট, ট্যানিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ক্যালশিয়াম ইত্যাদি নানা পুষ্টিগুণে ঠাসা এই ফল। এছাড়া বেশ কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড যেমন পলিফেনলস, সাইটোকাইনিন, ম্যালিক অ্যাসিড ইত্যাদি আমলকীতে আছে। সামান্য পরিমাণে ভিটামিন বি-ও আমলকীতে রয়েছে।
আর কী কী কারণে খাবেন আমলকী?
• টক্সিন দূর করে: আমলকীতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ বের করে লিভারকে সুস্থ রাখে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অবৈজ্ঞানিক ও অসংযমী জীবনে ইদানীং অনেকেই কমবেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। ফলে লিভার-ফেলিওর হওয়ার শঙ্কাও বাড়ছে। সুষ্ঠু জীবনযাপনের সঙ্গে কাঁচা আমলকীও যোগ করুন খাদ্যতালিকায়।
• ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: আমলকীতে থাকে পলিফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড। গবেষণায় প্রমাণিত, ডায়াবেটিস টাইপ টু-তে আমলকী খুব ভালো কাজ করে। আমলকী চূর্ণ ও হলুদ চূর্ণ সমান পরিমাণে নিয়ে একটি বায়ুনিরুদ্ধ শিশিতে ভরে রাখুন। এই মিশ্রণ সকালে ও সন্ধ্যায় খালি পেটে ২-৩ গ্রাম মাত্রায় খান। ডায়াবেটিসের জন্য যে ওষুধ খাচ্ছেন, তার পাশাপাশি এই মিশ্রণও খেতে থাকুন।
• কোলেস্টেরল কন্ট্রোল: শরীরে জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরেলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে আমলকী।
• হজমশক্তি বাড়িয়ে তুলুন: আমলকীতে সহজপাচ্য ফাইবার আছে। তাই হজমে সহায়ক উৎসেচক ক্ষরণে সাহায্য করে আমলকী।
• চুলের পুষ্টি: চুলের ত্বকে রক্ত চলাচল ভালো না হলে ত্বক ও চুল নির্জীব হয়ে পড়ে। মাথার ত্বক থেকে চুল উপযুক্ত পুষ্টি না পেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। আমলকীর রস চুলের গোড়াকে পুষ্টিপ্রদান করে। চুলের যে কোনও সমস্যায় আমলকী বড় সমাধান।
• অম্ল, অজীর্ণ ও অরুচি প্রতিরোধ: রাতে ৫ থেকে ৬ গ্রাম শুকনো আমলকী এক কাপ ঠান্ডা বা গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে ছেঁকে ওই জল খালিপেটে পান করুন। ২ থেকে ৩ মাস নিয়মিত খান এই জল। এতে মুখের রুচি ফিরবে, অজীর্ণ থেকে হওয়া সমস্যা থেকেও পরিত্রাণ পাবেন।
এছাড়া আমলকী ভেজানো জল চোখের দৃষ্টি ভালো রাখে, প্রদাহ কমায়, অম্ল নাশ করে হার্টের গতিকে স্বাভাবিক রাখে।
বুদ্ধি-স্মৃতি-মেধাতে সমতা এনে মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে। অকালবার্ধক্য দূর করতেও এই ফলের ভূমিকা আছে। তাই এই ফল চিরযৌবনের ধারক।
কারা খাবেন না?
সাধারণত সকলেই এই অমৃতফল খেতে পারেন। তবে কিডনির বড় ধরনের সমস্যা থাকলে, কিডনি প্রতিস্থাপন হলে ও কিডনি ফেলিওরের ইতিহাস থাকলে সেই ব্যক্তি আমলকী খাবেন না।