বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রাজ্যজুড়ে শীতের সেই চেনা উত্তরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ঠান্ডা বাতাসের শিরশিরানি কানের কাছে এসে টুক করে বলে যাচ্ছে—‘বন্ধু, ছুটি চাই’। তারপরই মনের ভিতরে বাসা বাঁধছে অদ্ভুত স্বপ্ন। পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে পেঁজা মেঘ স্পর্শ করা, উত্তাল সমুদ্রের স্রোতে গা এলিয়ে দেওয়া, বনরাজির ভিড়ে পাখিদের প্রভাতি কলকাকলি শোনা— আরও কত কী! অপেক্ষা কেবল বেরিয়ে পড়ার। সারা বছরের গ্লানি মুছে ফেলার এমন ওষুধ আর যে দ্বিতীয় নেই।
তবে হুট বেরিয়ে পড়লেই হল না। যতই হোক বছরটা করোনার। আর অ্যাজমা, সিওপিডি-এর মতো শ্বাসকষ্টের রোগীর করোনা থেকে বিপদের আশঙ্কাও যে বহুগুণ বেশি। পাশাপাশি শীতকালে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নানা কারণে বেড়েও যেতে পারে। আর ঘুরতে গিয়ে সমস্যা শুরু হলে গোটা পরিবার বড়সড় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই শ্বাসকষ্টের রোগীকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে যেতে চাইলে সবদিক বুঝেশুনে সতর্ক হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিকল্পনায় খামতি রাখলেই বিপদ।
শ্বাসকষ্টের রোগীরা এখন কোথায় ঘুরতে যাবেন?
সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গল যে কোনও জায়গায় যাওয়া যায়। কোনও বাধানিষেধ নেই। তবে অনেক সিওপিডি রোগীর স্বাভাবিক অবস্থাতেই শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকে। তাঁদের পাহাড়ে খুব বেশি উচ্চতায় যেতে বারণ করা হয়। দরকারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মনে রাখতে হবে, কিছু শ্বাসকষ্টের রোগী হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে তাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জায়গা নির্বাচনের সময় খেয়াল রাখুন, যেন তাপমাত্রার তারতম্য খুব বেশি না হয়।
অবশ্যই ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। এমন জায়গায় যাওয়া যাবে না, যেখানে জনসমাগম বেশি।
আবার খুব আনকোরা জায়গাতেও যাওয়া যাবে না। কাছাকাছি চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে, এমন জায়গাই বাছুন। ঘুরতে গিয়ে শারীরিক সমস্যায় পড়লে ওই চিকিৎসাকেন্দ্রই জীবন বাঁচিয়ে দিতে পারে।
কতদিন থাকা যায়?
দু’দিনের বেশি নয়—কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোথাও রাত কাটানোই উচিত নয়। সকালে গিয়ে রাতে ফিরে আসা যায়, এমন জায়গাতেই যাওয়া উচিত। থাকাথাকির বন্দোবস্ত করতে গেলেই সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। একান্তই থাকার ইচ্ছে হলে এক-দুই রাতের বেশি থাকা উচিত নয়। এক্ষেত্রেও এমন হোটেল বাছুন যেখানে অক্ষরে অক্ষরে কোভিড নিয়ম পালিত হয়। হোটেলের ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া চাই। নিজেদেরও পরিচ্ছন্ন রাখুন।
কীভাবে যাবেন?
নিজের গাড়িই ‘বেস্ট’—করোনা এখনও ইনিংস শেষ করেনি। তারমধ্যেও চারিদিকে হঠকারিতা দেখা যাচ্ছে। মানুষের মুখে মাস্ক নেই, বাস-ট্রেনে ভিড়, শারীরিক দূরত্ব রক্ষার বালাই নেই— এমনটা করলে কিন্তু আমরা করোনা থেকে বাঁচতে পারব না। সেক্ষেত্রে বাস, ট্রাম, ট্রেন, বিমানের ভিড় এড়িয়ে নিজের গাড়িতেই চলাফেরা করা ভালো। একান্তই সেই বন্দোবস্ত না থাকলে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে গণপরিবহণ ব্যবহার করুন। মাস্ক পরুন, স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন ইত্যাদি।
সঙ্গে কী কী নেবেন?
শ্বাসকষ্টের ওষুধ, ইনহেলার সঙ্গে রাখতেই হবে। পালস অক্সিমিটার থাকলে নিতে পারেন। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, প্রেশার বা প্রেসক্রিপশন মোতাবেক অন্যান্য ওষুধপত্র অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে নিয়ে যান। সঙ্গে নিয়ে যান প্যারাসিটামল, ওআরএস সহ কিছু জরুরি ওষুধপত্রও। ব্যাগে থাকবে অনেকগুলি মাস্ক। স্যানিটাইজারও বইতে হবে। শীতে বেড়াতে গেলে গরম পোশাক পরতেই হবে। কান, মাথা ঢাকা রাখুন। ঠান্ডা লাগাবেন না।
কী করবেন?
বেড়াতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা দিয়ে নিন।
সবসময় মাস্ক পরবেন।
ভিড় এড়িয়ে চলুন।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে বা হোটেলে অনেকের মাঝে খেতে যাবেন না।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে নিকটবর্তী চিকিৎসাকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।