স্বরূপ কুলভী: গণিত মানেই মগজাস্ত্রে শান। সংখ্যার খেলা। কত ধরনেরই যে বিস্ময় লুকিয়ে রয়েছে, তা বলে বোঝানো যায় না। এক একটা সংখ্যাতেই কত না রহস্য। এই ধর, ছয় দশ পাঁচ পঁয়ষট্টির কথা। সংখ্যায় লিখলে— ৬৫। দেখে কী মনে হচ্ছে! আর পাঁচটা সংখ্যার মতোই তো! কিন্তু গণিতজ্ঞদের কাছে এটা মোটেই সাধারণ কোনও সংখ্যা নয়। বিরল সংখ্যা। কেন?  এটা বলার আগে খানিক যোগ-বিয়োগ করে দেখা যাক। ৬৫ সংখ্যাটিকে উল্টে দিলে কী হবে? ৫৬ তো। এবার ৬৫-র সঙ্গে ৫৬ যোগ কর। ৬৫+ ৫৬ = ১২১। এই যোগফল পূর্ণবর্গ সংখ্যা। ১১২ = ১২১। কোনও সংখ্যাকে ওই সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যে গুণফল পাওয়া যাবে, তাকে ওই সংখ্যার বর্গ বলে। এবার ৬৫ থেকে ৫৬ বিয়োগ করে দেখে। ৬৫-৫৬=৯। আর এই বিয়োগফলও পূর্ণবর্গ সংখ্যা। ৩২ = ৯
১০ থেকে ১০০-র মধ্যে এমন সংখ্যা আর নেই। এজন্যই ৬৫ বিরল সংখ্যা। তাহলে বিরল সংখ্যা কাকে বলে? কোনও একাধিক অঙ্কের সংখ্যাকে উল্টে নিতে হবে। তারপর মূল সংখ্যার সঙ্গে উল্টে নেওয়া সংখ্যাকে যোগ করতে হবে। আর এই যোগফল যদি পূর্ণবর্গ সংখ্যা হয়, তাহলেই সেই সংখ্যা হবে বিরল সংখ্যা। শুধু কি তাই? আরও শর্ত রয়েছে। সংখ্যা দু’টিকে বিয়োগও করতে হবে। আর সেই বিয়োগ ফলকেও পূর্ণবর্গ সংখ্যা হতে হবে।  ৬৫-এর ক্ষেত্রে এই দু’টি শর্তই খেটে যাচ্ছে। তাই এটি বিরল সংখ্যা।
তাহলে এমন সংখ্যা কি আর নেই? আছে। তবে সে অনেক দূরে। যেমন, ৬২১৭৭০। এমন হাতে গোনা কয়েকটি সংখ্যা রয়েছে। তাই এগুলিকে বলা হয় বিরল সংখ্যা। 
অন্য একটি সংখ্যা দেখা যাক ২৪২। এই সংখ্যাটিও এর সমস্ত শর্তই পূরণ করে। 
২৪২-কে উল্টে নিলে হয় ২৪২-ই। ২৪২+২৪২=৪৮৪। এটিও পূর্ণবর্গ সংখ্যা ২২২। 
বিয়োগ ফল শূন্যও পূর্ণবর্গ সংখ্যা। 
তাহলে কি ২৪২ বিরল সংখ্যা। উত্তর হবে— না। কারণ ২৪২ প্যালিনড্রমিক সংখ্যা। অর্থাৎ উভমুখী। এদের অঙ্কগুলো উল্টো দিক থেকে সাজালে মূল সংখ্যাটাই ফিরে আসে। তাই বিরল সংখ্যার তালিকায় এদের ধরা হয় না।