Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

সখা হে
সোমজা দাস

।। এক ।।
ফোনটা এসেছিল দুপুর নাগাদ।  
খাওয়া দাওয়া সেরে সবে সিরিয়াল দেখতে বসেছিল বনানী। আর ঠিক তখনই মোবাইলটা বেজে উঠেছিল। অচেনা নম্বর, অপরিচিত কণ্ঠস্বর। টিভির পর্দা থেকে চোখ না সরিয়ে ফোনটা কানে ছুঁইয়েছিল বনানী অগাধ নির্লিপ্তি নিয়ে। ঝিমলি তখনও স্কুলে, অনন্ত কারখানায়। সামনে কেউ থাকলে দেখতে পেত যে অন্য প্রান্তের বক্তব্য শুনতে শুনতে ধীরে ধীরে নির্লিপ্তির পর্দা সরে যাচ্ছিল তার। পরিবর্তে চোখেমুখে উত্তেজনা ঝিলিক দিয়ে উঠেছিল।      
এরপর সারাটা দিন যে কীভাবে কাটিয়েছে বনানী, সেসব ফেনিয়ে লাভ নেই। আজকের মতো ঘটনা তার নিস্তরঙ্গ জীবনে অপ্রতুল। অনন্তকে বেশ কয়েকবার ফোন করার চেষ্টা করেছে সে। কিন্তু যথারীতি ও প্রান্ত থেকে সাড়া আসেনি। আসেও না কোনওদিন। অনন্ত কর্মী পুরুষ। মেশিন পার্টস তৈরির কারখানায় সুপারভাইজারের কাজ তার। অনেক দায়িত্বের কাজ। ক্ষণমুহূর্ত বসার জো নেই। যে দিকে না তাকাবে, সেখানেই লেবাররা ফাঁকি দেবে। ঠান্ডাঘরে শুয়ে বসে, গিন্নির সঙ্গে ফোনে গজল্লা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেতন দিয়ে পুষছে না তাকে। এসব অবশ্য অনন্তরই ভাষ্য। অন্যসময় কথাগুলো শুনলেই গা জ্বলে যায় বনানীর। তবে বোনেদের সঙ্গে আড্ডায় এসব কথাতেই রং চড়িয়ে বেশ চালিয়ে নেয় সে। সুখ-সচ্ছলতার এক কাল্পনিক ছবি আঁকতে বসে যত্ন নিয়ে।    
অবশ্য সেটা যে খুব সহজে ঘটে, তা নয়। বোনেরা সব কথা পুরোপুরি যেন বিশ্বাস করে না আজকাল। ছোট বোন মালিনী বলে, ‘ছাড় তো দিদি। আমাদের বরেরা যেন আর কাজকম্ম করে না! তা বলে বছরে একবার বেড়াতে যেতে না পারলে বাবা দম আটকেই মরে যাব আমি।’       
বড় বোন রোশনি অবশ্য এরকম চাঁচাছোলা ভাষায় বলে না। তবু সেও মনে মনে মালিনীকেই সমর্থন করে, বোঝে বনানী। আর সেটাই তো স্বাভাবিক। প্রেমের বিয়ে ছিল বনানীর। বাড়ির অমতে অনন্তের গলায় মালা দিয়েছিল। অনন্তর কম আয়, টানাটানির সংসারযাপন, ফিকে হয়ে যাওয়া দাম্পত্যরসায়ন সবই মানিয়ে নিয়েছে সে এত বছর ধরে। কিন্তু বোনেরা যখন তাদের স্বামীদের পত্নীপ্রেম নিয়ে আদিখ্যেতা করে, তখন অনন্তর উপর রাগটা দপ করে জ্বলে ওঠে। এই তো ক’দিন আগে রোশনি ভাইজ্যাগ থেকে ঘুরে এসে কাঞ্জিভরম শাড়ি উপহার দিয়ে গেল বনানীকে। সমুদ্রতটে স্বামীকে জড়িয়ে ধরা ছবি দেখাল। ওর আলো আলো মুখটার দিকে তাকিয়ে ভেতরটা পুড়ছিল বনানীর। কাঞ্জিভরম না ছাই, নকল সিল্ক যেন চেনে না সে!              
তারপর যেমন গত বছর মালিনীরা কাশ্মীর ঘুরে এসে ফেসবুকে কত ছবি দিল। সেই অবধি তবু ঠিক ছিল। তারপর ফোন করে বিয়ের দশ বছর পরে দ্বিতীয় হানিমুনের ন্যাকা ন্যাকা গল্প শোনানোর খুব দরকার ছিল কি? কিন্তু শোনাল তো? কেন শোনাবে না! বনানী যতই গল্প বানাক, ওরা তো জানে আসল সত্যটা! তাই বনানীকে সান্ত্বনা দেয় বটে, কিন্তু আসলে করুণা করে, সেটা কী আর বোঝে না বনানী! দুই কুড়ি হল বয়স, সংসারে কম তো আর দেখল না! 

।। দুই ।।
বাড়িতে পা দিয়েই অন্যান্য দিনের সঙ্গে পার্থক্যটা অনন্তর ইন্দ্রিয়ের র‌্যাডারে ধরা পড়ে গেল।   
‘কী ব্যাপার! কিছু হয়েছে নাকি! বেশ খুশি খুশি লাগছে তোমাকে!’ জুতো খুলতে খুলতে বলল সে।   
অনন্তকে দরজা খুলে দিয়েই রান্নাঘরে ঢুকেছিল বনানী। বাসনপত্রের সুললিত টুংটাং শব্দ ভেসে আসছে। মিনিট দশেকের মধ্যে চা-জলখাবার এনে টেবিলের উপর রাখল বনানী। অনন্তও জামা-কাপড় বদলে এসে বসল টেবিলে।   
‘শোনো না, আজ একটা কাণ্ড হয়েছে!’  
‘কী কাণ্ড?’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করল অনন্ত। কিছু যে ঘটেইছে, সেটা বনানীর মুখ দেখেই বুঝেছে সে। তবে ঘটনাটা কতটা গুরুতর, সেটাই আপাতত ভাবনার ব্যাপার।   
বনানী একটা বড় নিঃশ্বাস নিল। তারপর বলল, ‘তোমার মনে আছে, গত সপ্তাহে হস্তশিল্প মেলায় কী একটা কার্ড দিয়েছিল একটা মেয়ে। নাম, ফোন নম্বর লিখে নিয়েছিল। সেই যে, তুমি জিজ্ঞাসা করলে এটা কী! মেয়েটা বলল লাকি ড্র হবে? মনে পড়ছে?’  
চায়ে চুমুক দিয়ে মাথা নাড়ল অনন্ত। মনে পড়েছে তার। জোর করে কার্ডটা গছিয়েছিল মেয়েটা।  
‘আজ ফোন এসেছিল,’ বলতে বলতে চোখ জ্বলজ্বল করে বনানীর। দ্রুত নিঃশ্বাস পড়তে থাকে। অনন্তর কাছে ঘনিয়ে এসে বলে, ‘লাকি ড্রয়ে জিতেছি আমরা। চার দিন, তিন রাতের দু’জনের গোয়া বেড়ানো সম্পূর্ণ ফ্রি। আরও কীসব উপহার নাকি দেবে ওরা। কালকের দিনটা ছুটি নিতে পারবে গো?’   

।। তিন ।।
অনন্ত বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দীর্ঘ সতেরো বছরের বিবাহিত জীবনের সঙ্গিনীটির দিকে। আজ চুলে খোঁপা করেনি বনানী। শ্যাম্পু করা খোলা চুল হাওয়ায় উড়ছে যেমন উড়ত সেই প্রথম প্রেমের দিনগুলিতে। বনানীর এমন ঝলমলে মুখ শেষ কবে দেখেছে সে মনে পড়ে না। শুধু বনানীই বা কেন, অনন্তর মতো সামান্য সুপারভাইজারের জীবনে লাকি ড্রয়ে জেতার মতো এমন অলৌকিক মুহূর্ত খুব বেশি আসে না।       
সুতরাং সিদ্ধান্তটা নিতে দেরি করল না অনন্ত। সকালে উঠে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিয়েছে দু’জনে। ঝিমলি স্কুলে বেরিয়ে যেতেই তারাও বেরল। বনানী আজ বেশ সেজেছে। তার দিকে তাকিয়ে অনন্তর আজ হঠাৎই মনে হল, কম সুন্দরী তো ছিল না বনানী! বোনেদের মতো পয়সাওয়ালা ঘরে-বরে পড়লে হয়তো এত তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যেত না। তিনজনের সংসার হলেও খাটুনি তো কম যায় না সারাদিন।        
সদরে তালা লাগিয়ে রাস্তায় নামল দু’জনে। অন্যদিন হলে হয়তো বাসের জন্য অপেক্ষা করত। কিন্তু আজকের দিনটা অন্যরকম। বনানীকে খানিকটা চমকে দিয়েই রাস্তার অন্য প্রান্তে হলুদ ট্যাক্সিটাকে হাত তুলে দাঁড় করাল সে। বনানী একটু অবাক হয়ে অনন্তর দিকে তাকাল। অনন্তও না জানি কত বছর, নাকি কত যুগ পরে তার সতেরো বছর পুরোনো স্ত্রীর হাত ধরে রাস্তা পেরিয়ে ট্যাক্সির দরজা খুলে ধরল।   
ঠিকানা মিলিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় এসে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল দু’জনের। এমন হোটেল এতদিন টিভিতে, সিনেমায় দেখেছে তারা। কিন্তু বাস্তবে...! গতকাল থেকে তাদের স্বপ্নের রথের যে চাকা তরতরিয়ে ঘুরছিল, তার রাশে যেন হ্যাঁচকা টান পড়ল এবার। বনানী সন্ত্রস্ত মুখে স্বামীর দিকে তাকাল। অনন্তর মুখের রেখায় স্বাভাবিক গাম্ভীর্য ফিরে এসেছে।     
‘বাপ রে! এ কোথায় এলাম? কী গো, ফিরে যাবে?’ চাপা গলায় বলল বনানী। 
অনন্ত স্বামীসুলভ ধমকে উঠে উত্তর দিল, ‘এসে যখন পড়েইছি, দেখাই যাক। এখন ফিরে লাভ কী হবে! মাঝখান থেকে ছুটিটা নষ্ট হল।’  
হোটেলের বিশাল ব্যাঙ্কোয়েট হলে গোটা বিশেক গোল টেবিল পাতা। প্রতিটি টেবিলের উপর ধবধবে সাদা কাপড়ের ঢাকনা, মাঝে কাট গ্লাসের শৌখিন ফুলদানি। ত্রস্তপদে দু’জনে সেখানে ঢুকতেই তাদের অভ্যর্থনা করে একটি টেবিলে নিয়ে বসানো হল।  
‘স্যর, কফি খাবেন, নাকি চা? ম্যাডাম, কী খাবেন বলুন!’ পাটভাঙা দামি শার্টের কলারে প্রজাপতি টাই আঁটা এক ছোকরা এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল।  
স্যর! ম্যাডাম! তড়িঘড়ি উঠে দাঁড়াল বনানী। বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না যে তারা নির্ঘাত ভুল জায়গায় এসে পড়েছে। অনন্ত চোখের ইশারায় বসতে বলল তাকে। দোনোমনা করে আবার বসে পড়ল সে।  
ছোকরা বেশ চালাক। ওদের দ্বিধা বুঝতে পেরেই হয়তো আর কিছু জিজ্ঞাসা করল না। বরং ভেতরে গিয়ে একজন ওয়েটারের হাতে ট্রে নিয়ে ফিরে এল। দু’টি চীনা মাটির কাপে ধোঁয়া ওঠা কফি। সঙ্গে প্লেটে বড় বড় বাদামওয়ালা বিস্কুট। এগুলোকে কুকিজ বলে, জানে বনানী। সুঘ্রাণ এত দূর থেকেও নাকে আসছে। চোখ বুঝে গন্ধটুকু বুকে জড়িয়ে নিল বনানী।  
কফিতে চুমুক দিয়ে আশপাশে চোখ বোলাল অনন্ত। তাদের মতো আরও জনা পনেরো দম্পতি হাজির হয়েছে এতক্ষণে। সামনে ডায়াস বানানো রয়েছে। সেখানে এসে দাঁড়াল স্যুট টাই পরিহিত এক ভদ্রলোক। প্রথমেই প্রতি টেবিলে পৌঁছে গেল একটি করে চকচকে র‍্যাপিং পেপার জড়ানো বাক্স এবং একটি পাতলা বই। বনানী বাক্সটি নিজের দিকে টেনে নিল। খুলে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব। কিন্তু বাকিরা কেউই খোলেনি দেখে কৌতূহলটা দমন করল সে। অনন্ত বইটা ওল্টাচ্ছে। পুরোটাই ইংরেজিতে লেখা। পাতায় পাতায় পাহাড়, সমুদ্র, বিভিন্ন হোটেলের ছবি। ভেতরের লেখাগুলি পড়ে খুব বেশি কিছু বোঝার মতো ইংরেজিতে দক্ষতা অনন্তর নেই। অতএব বই বন্ধ করে সেই স্যুট-টাইধারীর দিকে মন দিল।
ভদ্রলোক একটা ফাইলে চোখ বোলাচ্ছিলেন। এবার সেটা পাশে রেখে উপস্থিত দম্পতিদের দিকে তাকিয়ে হাসলেন। তারপর বলতে শুরু করলেন-  
‘আপনারা, আমাদের সম্মানীয় অতিথিরা এখানে এসে আমাদের সম্মানিত করেছেন। লাকি ড্রয়ের বিজেতা আপনারা। তাই আমাদের সংস্থার হোটেল অ্যান্ড রিসর্ট চেনের তরফ থেকে আপনাদের জন্য থাকছে দারুণ আকর্ষণীয় উপহার।...’
বনানী নড়েচড়ে বসল। আগ্রহী দৃষ্টিতে অনন্তর মুখের দিকে তাকাল। অনন্তও খুব মন দিয়ে শুনছে। পরবর্তী আধ ঘণ্টায় বাঁধাকপির পাতা ছাড়ানোর মতো করে পরতে পরতে উপহারের স্বরূপ উদ্ঘাটিত হল উপস্থিত দম্পতিদের সামনে। এই সংস্থার অসংখ্য হোটেল ও রিসর্ট ছড়িয়ে আছে সারা দেশ জুড়ে। তারা দম্পতিদের সামনে নিয়ে এসেছে এক অভাবনীয় সুযোগ। খুব সামান্য কিছু টাকা দিয়ে তাদের সংস্থার সদস্য হতে হবে। তাহলেই ভারতের যে কোনও স্থানে তাদের যে কোনও হোটেলে থাকা, খাওয়ার ক্ষেত্রে মিলবে বড়সড় ছাড়। এ ছাড়াও সদস্যপদ নিলে বিশেষ উপহার হিসেবে আগামী এক বছরের মধ্যে যে কোনও সময়ে তিন রাত চার দিনের জন্য গোয়ায় তাদের রিসর্টে স্বামী-স্ত্রীর থাকা সম্পূর্ণ ফ্রি।     
বনানী অনন্তর দিকে তাকাল। অনন্ত পাথরের মতো নিশ্চল।  
স্যুট-টাইধারী পুরোপুরি পেশাদার। এই পরিস্থিতির মুখোমুখি তাঁকে প্রায়ই হতে হয় দেখেই বোঝা যায়। স্মিতমুখে বরাভয় দিলেন তিনি। সমস্যার কিছু নেই। সমাগত অতিথিবৃন্দ এখনই কিছু টাকা দিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করলে টাকার পরিমাণ বেশ খানিকটা কমিয়ে দিতে পারবেন তিনি। সকলের কথা ভেবে যদি কোম্পানি মালিকের হাতে-পায়ে ধরতে হয় তাও ধরবেন। আর পুরোটা তো দিতে হচ্ছে না এখনই! বাকি টাকা ছয় মাসের কিস্তিতে দিলেই চলবে।     
বনানী ও অনন্তর মধ্যে চকিতে নীরব দৃষ্টি বিনিময় ঘটে গেল। অনন্ত দেখল, বনানীর চোখে নীরব আকুতি। বনানী দেখল, অনন্তের দৃষ্টিতে হতাশা।  
ঠিক তখনই বোমাটা ফাটালেন স্যুট-টাইধারী। টাকার অঙ্কটা অতি সামান্য। মাত্র দেড় লক্ষ টাকা। এখন পঁচাত্তর হাজার দিলেই চলবে। বাকিটা সেই ছয় মাসের কিস্তি। তার পরিবর্তে কত সুখের আঁকিবুকি, কত রঙিন আশা, কত স্বপ্ন বোনা...  
।। চার ।।
হোটেল থেকে বেরিয়ে এসে ফুটপাথে দাঁড়াল বনানী ও অনন্ত। বনানী তার শ্যাম্পু করা খোলা চুল জড়িয়ে হাতখোঁপা বেঁধে নিয়েছে। অনন্ত সেদিকে তাকাতে ফিকে হেসে বলল, ‘এত হাওয়া, ধুলো! চুল উড়ে মুখে এসে পড়ছে। মিছিমিছি জট পাকিয়ে যাবে।’     
দীর্ঘশ্বাস ফেলল অনন্ত। সত্যিই তো, রোজনামচার নিয়মের বাইরে বেহিসাবি পা ফেলা মানেই জীবনটাকে মিছিমিছি জট পাকিয়ে ফেলা, বনানীর চুলের মতো। তবু কে জানে কেন আজ বেহিসাবি হতে ইচ্ছে করছে অনন্তর। তাই হয়তো বলে বসল, ‘ঝিমলির স্কুল থেকে ফিরতে তো দেরি আছে এখনও। আজকের দিনটা আর বাড়ি ফিরে রান্নাবাড়ির হাঙ্গামা করতে হবে না। চল, বাইরেই খেয়ে নিই।’ 
বনানী অবাক হয়ে তাকাল তার সতেরো বছরের পুরনো স্বামীর মুখের দিকে। অনন্ত হাসার চেষ্টা করল, হয়তো বা সত্যিই হাসল। হাসল বনানীও। বলল, ‘কফি খেলাম তো! বিস্কুটটা কী সুন্দর না! আমি না ঝিমলির জন্য একটা বিস্কুট চুপিচুপি ব্যাগে ভরে নিয়েছি।’       
অন্য দিন হলে অনন্ত কী বলত কে জানে, আজ মৃদু হাসল।   
খাওয়া শেষ হলে রাস্তার পাশে সিগারেটের দোকান থেকে সিগারেট ধরাল অনন্ত। বনানীর জন্য মিঠে পাতা পান কিনল একটা। তারপর হঠাৎই বাঁ হাত বাড়িয়ে বনানীর খোপা খুলে পিঠে ছড়িয়ে দিল। চোখ বড় বড় করে খিলখিল করে হেসে উঠল বনানীও। 
ফেরার পথেও ট্যাক্সিই নিয়েছে অনন্ত, বনানীর আপত্তি সত্ত্বেও। দামি কুকিজের গন্ধ আলতো সুখ ছড়িয়ে দিচ্ছে ট্যাক্সির ভেতর। নিঃশ্বাসের সঙ্গে খানিকটা সুখ বুকে ভরে নিল বনানী। তারপর আদুরে বেড়ালের মতো স্বামীর কাছে সরে এসে বলল, ‘ইশ কতগুলো টাকা বাজে খরচ হয়ে গেল!’     
অনন্ত সিটে হেলান দিয়ে চোখ বুজে ওমটুকু মেখে নিল শরীরে, মনে। তারপর বলল, ‘তোমাকে বলা হয়নি। আমি গত সপ্তাহে পিএফ লোনের জন্য অ্যাপ্লাই করেছি। পুজোর সময় কোথাও ঘুরে আসব তিনজনে মিলে। কী, যাবে তো?’
05th  March, 2023
মেট্রোর দুপুর

সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়ল দীপন। কারণ দুটো— এক, এতগুলো সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে একটু না দাঁড়ালে আর পারা যাচ্ছিল না। দুই, সামনে মধ্য দুপুরের কলকাতা বৈশাখের রোদে ঝলসাচ্ছে। পা রাখার আগে এটাই শেষ সুযোগ। পকেট থেকে সেলফোনটা বের করল। বসে পড়ল মেট্রোর সিঁড়িতে। চোখ রাখল স্ক্রিনে। 
বিশদ

21st  April, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
একনজরে
ভোট মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরম। আজ, শুক্রবার, লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। বৃহস্পতিবার আগামী পাঁচদিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের ...

বুধবার রাতে নদীয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়ায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে এক যুবক ছিটকে একটি টোটোর কাচ ভেঙে ঢুকে যান। ...

মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধর সংক্রান্ত মামলায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর পরিবারকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতে নির্দেশ, তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিস। ...

লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত। ধৃতের নাম ইন্দরপাল সিং গাবা। তিনি ব্রিটেনের হাউন্সলোরের বাসিন্দা। দিল্লি থেকে ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট প্রভসিমরন, পাঞ্জাব ১০৭/১ (৭.৫ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:29:44 PM