Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব  ২৪
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের অফিসে বসে ভানুদা, সুজি, শঙ্কর। সেখানে হঠাৎ হাজির হল সহজ। পরমেশ্বর জানাল, মৈত্রেয়ী তাদের বাড়িতে এসেছিল। সুজি নিজের গোঁ ধরে থাকলে ও ডিভোর্স দেবে বলেছে। তর্কাতর্কি চরমে পৌঁছলে সুজির সঙ্গে আর ব্যবসা করবে না বলে জানিয়ে দেয় পরমেশ্বর। তারপর...

 শশাঙ্ক মিত্র ছোট্ট বাগানটায় ঘুরছিলেন। 
সকালের ঠিক এই সময়ে এ-বাড়ির কেউ ওঠে না। এই বাড়ির  গাছপালারা তখন সারাদিনের সব কথা সেরে রাখে হাওয়া বাতাসে। কিছু পাখি যারা বংশ পরম্পরায় এখানে বাস করছে, তারা গাছের আড়াল ছেড়ে নিশ্চিন্তে বাগানের ঘাসের ওপর ঘুরে বেড়ায়। এরপর আর সারাদিন তাদের সঙ্গে মাটির যোগাযোগ থাকবে না। সহজ আগে দু-চারবার খুব ভোরে উঠে পাতার সঙ্গে হাওয়ার, পাখির সঙ্গে মাটির যাপন দেখেছে। তারপর আর কখনও উঠে বাগানে ঘুরে বেড়াতে মন চায়নি। তার মনে হয় ওদের এটুকু ব্যক্তিগত সময়কে কেড়ে না নেওয়াই ভালো।
এ-বাড়িতে রাতের বেলা সম্বুদ্ধ মিত্র ঘুরে বেড়ান।  আর সেটা অনেক রাত পর্যন্ত। তিনি চেষ্টা করেন কতটা নিঃশব্দে হাঁটা যায়। কিন্তু মাঝে মাঝে ক্যাপ ফাটানো আওয়াজের মতো তাঁর পায়ের হাওয়াই চটির ফট ফট একটুকরো জোড়া আওয়াজ হঠাৎই ঠিকরে ওঠে। আওয়াজ হলেই খুব সতর্ক তিনি। আরও নিঃশব্দের ভিতর ঢুকে পড়েন। সহজের মনে হয় কখনও কখনও উনি বাড়তি সতর্কতার জন্য হয়তো খালি পায়ে বারান্দা, সিঁড়িতে ঘোরেন। সচরাচর তিনি দোতলায় ওঠেন না। কিন্তু অধিক রাতে সহজ দোতলার বারান্দায় বাবাকে দেখেছে, অদ্ভুতভাবে নীচের দিকে তাকিয়ে আছেন। মানুষ রাতের বেলায় আকাশ দেখে, আকাশের তারা দেখে, বাবা যে নীচের দিকে কী দেখেন কে জানে!
সম্বুদ্ধ মিত্র জানেন, সহজ অনেক রাত পর্যন্ত লেখাপড়া করে। কী লেখাপড়া আগে জানতেন না। কোনওদিন সেভাবে জানতেও চাননি সহজ ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবে? যা, জানতে চান না সে বিষয়ে ওঁকে বলা, বা ওঁর সঙ্গে আলোচনারও কোনও দরকার পড়ে না। কিন্তু ইদানীং উনি যেন অদ্ভুত চোখে সহজের দিকে তাকান। ম্যাথমেটিকসের স্টুডেন্ট সহজ ঠাকুরদা শশাঙ্ক মিত্রের পথ কি অনুসরণ করবে? কী আশ্চর্য, বাহ্‌  রে জীবন! 
সহজ দেখেছে, তার বাবা দু’-দুখানা স্বদেশ পত্রিকা কিনে এনেছিলেন। এখনও একটা বাবার টেবিলে আছে। অন্যটি মায়ের ঘরে। কীভাবে যেন সহজের গল্প লেখা এবং এত বড় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার খবর ঠাকুমা বাসবী মিত্রের কাছে গিয়েছিল। হয়তো মিমিই খবর বহনকারী পায়রার কাজটি করেছিল। তার সূত্র ধরে বাসবী মিত্র অদ্ভুত একটা মন্তব্য করেন— ওই লোকটা বংশের রক্তে পারাদোষ ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই ছাইপাঁশ লেখার অসুখ এবার ঘুরে ফিরে আসবে।
এই কথাগুলোও মিমি বহন করে এনে সহজকে শুনিয়েছে। সহজ শুনেছে। মিমি ওর মুখের রেখা পড়ছে। সহজ কী ভাবছে? কী ভাবছে সহজ? মিমি বলল, ‘কী রে সেই জ্যোতিষীর কাছে কবে নিয়ে যাবি?’
‘যেদিন যেতে চাস।’
‘কালই যাব।’
‘আচ্ছা, সকালবেলা।’
রাতে সম্বুদ্ধ মিত্র বললেন, ‘কী হল, আর লেখা কই? পাঠক কিন্তু ভুলে যাবে তোমার লেখার কথা! আমি পড়তে চাই।’
‘লিটল ম্যাগাজিনে একটা গল্প বেরিয়েছে, পড়বে?’
‘লিটল বলে তুমি এমন সংকোচ করছ কেন? ম্যাগাজিন তো বটে। একজন সম্পাদক বা সম্পাদকমণ্ডলী তোমার লেখা নির্বাচন করেছে। তারা সেই লেখা পাঠকের দরবারে হাজির করছে। আমি একজন পাঠক। কেন পড়ব না, আলবাত পড়ব। সব ভালো লেখাই কি বড় কাগজে ছাপা হয়, দাও।’
সহজ দৌড়ে গিয়ে একটা রোগা পত্রিকা এনে সম্বুদ্ধ মিত্রকে দিল। পত্রিকাটা নিয়ে চলে যেতে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন সম্বুদ্ধ মিত্র। খুব নিচু গলায় বললেন, ‘তোমার ঠাকুরদা তাঁর একটা লেখার কথা একদিন আমাকে বলতে এসেছিলেন। আমি তার আগেই তোমার মায়ের কাছে শুনেছিলাম, উনি বেদ, পুরাণ, সমস্ত উপনিষদ, সংহিতা নিয়ে কিছু লিখছেন। যা আমার মাথার অনেক ওপর দিয়ে যাবে। তাই আমি বুঝব না বলে শুনতে চাইনি। শুনতে চাইনি তার আর একটা কারণ ছিল, আমি এসব শুনলে তোমার ঠাকুমা অহেতুক অশান্তি করবেন। সেদিন আমি বড় অন্যায় করেছি। উনি আর আমাকে সুযোগ দেবেন না, তাই তোমার বেলায় কোনও ভুল করতে চাই না।’
সহজ হাসল। বলল, ‘আমি তোমার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করব।’
‘তাই করো। এটা পিতৃঋণ মনে রেখো। উনি ওই ট্রাঙ্কের মধ্যে গুপ্তধন রেখে যাচ্ছেন। ওর রচনার একটি শব্দও গুরুদেবের চিঠির মতো গঙ্গাজলে ধুয়ে দেওয়া চলবে না। সব উদ্ধার করো। তোমার ঠাকুমা ওই ট্রাঙ্কে গঙ্গাজল শুধু নয়, আগুনও দিতে পারেন।’
সহজ খুব শান্ত গলায় বলল, ‘পারবে না, আমি আছি। তোমার সঙ্গে আর একটি কথা ছিল আমার—’
‘বলো।’
‘আমি ঠাকুরদাকে তাঁর গুরুদেবের আশ্রমে দিয়ে আসতে চাই।’
সম্বুদ্ধ মিত্র সোজা হয়ে দাঁড়ালেন, ‘মানে, তারপর, তুমি তোমার ঠাকুমাকে সামলাতে পারবে?’
সহজ হাসল, ‘আমি ওঁকে সামলানোর চেষ্টাই করব না।’
‘উনি কিন্তু আমার মা, আমি ওঁর অসম্মান চাই না।’
‘কিন্তু ওঁর এই পাপের শাস্তি হওয়া দরকার। ঠাকুরদা দীর্ঘদিনই সংসার ত্যাগ করেছেন। তিনি গুরুদেবের আশ্রমে চলে যাওয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে গুরুদেবকে চিঠি দিচ্ছেন। আর ঠাকুমা সেই চিঠি গোপনে হস্তগত করে নষ্ট করে দিচ্ছেন। তাঁর জেদ, তিনি জীবিত অবস্থায় ঠাকুরদাকে এই বাড়ির বাইরে বেরতে দেবেন না। মুক্তি দেবেন না।’
‘এটা ওঁদের দুজনের ব্যাপার, ওঁরা তোমার গুরুজন। এর মধ্যে আমরা থাকব না। আমি কোনওদিন থাকিনি।’
‘তুমি থাকনি বলে আমি থাকব না, এমন কোনও কথা নেই। ঠাকুমা চিঠি নষ্ট করার পাপ নিজে বহন করছেন না, তারজন্যে আমার মাকে ব্যবহার করছেন। গুরুদেবকে লেখা ঠাকুরদার চিঠিগুলোতে আমার মাকে দিয়ে গঙ্গাজল ঢালাচ্ছেন। গঙ্গাজলে ভিজে চিঠিগুলো নষ্ট হয়ে গেলে গাছের গোড়ায় ফেলে দিতে বলেছেন। আমার মা মনে করেন— তিনি ব্রহ্মহত্যার পাপে বিদ্ধ হচ্ছেন। আমি আমার মাকে সেই পাপ থেকে মুক্তি দিতে চাই।’
চমকে উঠে সম্বুদ্ধ মিত্র তাকালেন সহজের দিকে। ‘কী চাও তুমি?’
‘ঠাকুরদাকে শেষ দিনগুলো আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে। আর কিছু না।’
‘ব্যাপারটা গোপন থাকবে না, এই বাড়ি তোমার ঠাকুমার নামে করে দিয়েছেন তোমার ঠাকুরদা। তিনি সব সম্পত্তি থেকে তোমাকে বঞ্চিত করবেন, আর এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।’
‘তাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। আমি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেব।’
‘তুমি কি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছ, পরে আফশোস করবে না তো?’
‘আমি আমার মাকে ব্রহ্মহত্যার পাপ থেকে আর ঠাকুরদাকে সংসারের বন্ধন থেকে মুক্তি দিতে চাই।’
‘আমি আপত্তি করব না। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হলেও আমার যা আছে তাতে তোমার জীবন ডালভাতে কেটে যাবে। নিজের যেটা ভালো মনে হয়, সেই কাজ করো।’
সম্বুদ্ধ মিত্র শব্দহীন পায়ে মাথা নিচু করে নিজের ঘরে ঢুকে গেলেন। সহজ ঘরের আলো নিভিয়ে টেবিল ল্যাম্প জ্বালল। 
রাত শেষ হয়ে কখন ভোর হয়েছে। এখন শুয়ে পড়লে আর মিমিকে নিয়ে যাওয়া হবে না ক্যাপ্টেনের কাছে। সে বারান্দায় এসে দেখল, শশাঙ্ক মিত্র। লুঙ্গির মতো করে ধুতি পরা। গায়ে একটা ফতুয়া। খালি পা। বাগানের ভিতর চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন। হয়তো কিছু দেখছেন।
শশাঙ্ক মিত্রের সর্বক্ষণের ছায়াসঙ্গী অচল নিশ্চয়ই এত ভোরে ঘুম থেকে ওঠে না। অন্তত সহজ তাকে কোনওদিন এমন ভোরে বাগানে দেখেনি। সহজের খুব ইচ্ছে করছিল, একবার নীচে নেমে ঠাকুরদার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে। কিন্তু সহজ বাগানে এলেই উনি পায়ে পায়ে ঘরে ঢুকে যাবেন। সহজ থামাতে চাইলেও তিনি কোনও না কোনও অজুহাত খুঁজে নেবেন। সহজ খুব ভালো করে শশাঙ্ককে দেখেছে। এ-বাড়ি, পরিবারের সবাই মনে করে শশাঙ্ক মিত্র ভিতু একটা মানুষ, স্ত্রীর ভয়ে ভীত হয়ে তাঁর এই আত্মগোপন। ওঁর স্ত্রীও তাই মনে করেন যে, তিনি মানুষটিকে দমাতে পেরেছেন। কিন্তু সহজ মনে করে এটা ডাহা ভুল। তার মনে হয় শশাঙ্ক মিত্রের সিদ্ধান্ত স্থির। তিনি লক্ষ্যে অবিচল। যা সম্বুদ্ধ মিত্রও কোনওদিন বুঝতে পারেননি। তিনি কাজ করে যাচ্ছেন, ফলের আশা না করেই। যা লিখছেন, তা লিখে রেখে যাচ্ছেন ট্রাঙ্কে। আর গুরুদেবের আশ্রমে গিয়ে শেষ জীবনটা কাটানো— তার জন্যে তিনি বার বার চিঠি লিখছেন। চিঠির উত্তর না পেয়ে কখনও কোনওদিন হতাশ হচ্ছেন না। তিনি তো জানতে পারছেন না, তাঁর লেখা সমস্ত চিঠিই হস্তগত করছেন তাঁর স্ত্রী, তারপর সেই চিঠি গঙ্গাজলে ধুয়ে নষ্ট করে দিচ্ছেন।
ভোর হয়ে গিয়েছে। শশাঙ্ক মিত্র বাগান থেকে নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছেন। সহজ ঘড়ি দেখল। পাঁচটা পনেরো। সে জানে এখন হয়তো মা উঠেছে ঘুম থেকে। কিন্তু ঠাকুমা ওঠেননি। তিনি উঠে বাইরে এলেই এ বাড়ির দিন শুরু হয়। ঠাকুরদার জন্য অচল চা করে দেবে।  ঠাকুমা উঠবেন ঠিক ছ’টায়। বাগানে এসে ফুল তুলবেন। মা ঢুকবে স্নানের ঘরে। স্নান সেরে ঠাকুরঘরের কাজে। মাঝে একবার এসে চা খাবে।
সহজ এসে দাঁড়াল তার ঠাকুরদার ঘরের সামনে। মেঝেতে আসন পেতে শশাঙ্ক মিত্র পদ্মাসনে বসে। ঘরের সমস্ত জানলা খোলা। পর্দা সরানো। মাথার ওপর পাখা বন্ধ। শুধু এই বাড়ির সঙ্গে সংযোগ করা দরজাটি ভেজানো। ওই দরজার ওপারে এ বাড়ির দীর্ঘদিনের লোক অচলের থাকার জায়গা। সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়লে ওই দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তখন ঘুরপথে শশাঙ্ক মিত্রের ঘরে আসতে হয়।
শশাঙ্ক মিত্র পদ্মাসনে নিশ্চুপে বসে ছিলেন। সহজ বলল, ‘আমার কিছু কথা আছে তোমার সঙ্গে, একটু ভেতরে আসব।’
সে অনুমতির অপেক্ষা করল না। চটি ছেড়ে সটান ঢুকে পড়ল ঘরে। ঘরে এসে মেঝেতেই বসল, মুখোমুখি। পদ্মাসনে বসতে পারলে যেন ভালো হতো, কিন্তু সে চেষ্টা করল না। বলল, ‘আমার কিছু কথা ছিল—। যা তোমাকে শুনতেই হবে। তোমার মতামতের আমি অপেক্ষা করব না। প্রথম কথা, তোমার গুরুদেবের আশ্রমের ঠিকানা আমাকে দাও। আমি খোঁজ নেব, তোমার ওখানে থাকার ব্যবস্থা কী আছে? যদি আমার মনে হয়, তুমি ওখানে গিয়ে থাকতে পারবে, তাহলে কাউকে না জানিয়ে তোমাকে আমি নিয়ে যাব। তোমাকে আমার সঙ্গে যেতে হবে। আমি তোমাকে গিয়ে দিয়ে আসব। আর শুনে রাখো, ওই আশ্রম থেকে কোনও চিঠির উত্তর আসবে না, কারণ তোমার চিঠি আশ্রমে পৌঁছচ্ছে না, এ ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন করো না, আমি নিশ্চিত।’
সহজের এই কথাটা শুনে শশাঙ্ক মিত্র যেন কেঁপে উঠলেন।
সহজ বলল, ‘তাই আমার সঙ্গে গোপনে তোমাকে যেতে হবে। অচলদাকে জানানো যাবে না। আর একটা কথা, আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। আমরা মানে আমি আর তোমার ছেলে। আমি তাকে সব বলেছি, তুমি এ বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আগে তোমার সমস্ত লেখা এক রাতে আমি আর বাবা এসে এই ঘর থেকে নিয়ে যাব। সব লেখা আমার আলমারিতে ঢুকিয়ে লক করে দেব। কারণ, আমাদের মনে হয়, তুমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেই, হয়তো তোমার লেখাপত্র নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ, ঠাকুমা মনে করেন, এই লেখার নেশায় তুমি সংসার ত্যাগ করেছ। বাদ বাকি লেখার কাজ তুমি আশ্রমে বসেই শেষ করো। তার দায়িত্ব আমার। আমার অনুরোধ যে লেখার জন্য জীবন দিলে, তা সম্পূর্ণ করো, আর তা তুমি পারবে।’
শশাঙ্ক মিত্রের দু’চোখ বেয়ে জলের ধারা নেমে আসছে।
‘আমাকে আশ্রমের ঠিকানাটা দাও। আমি দু’-চারদিনের মধ্যেই খোঁজ নিয়ে নেব। তারপর আমাদের শুভযাত্রা—’
শশাঙ্ক মিত্র আঙুল দিয়ে কালো রঙের বহু পুরনো একটা ডায়েরি দেখাল। সহজ ডায়েরিটি নিয়ে খুলতেই লাল কালিতে লেখা আশ্রমের ঠিকানা। সহজ খুব দ্রুত  ঠিকানার ছবি তুলে নিল মোবাইলে। 
অচলের পায়ের আওয়াজ আসছে। 
‘আমি আসি। দিন ঠিক হলেই তোমাকে জানাব, মানসিকভাবে তুমি প্রস্তুত হও। এ বাড়ি থেকে তোমার মুক্তি, আমি শুধু তোমাকে মুক্ত করব না, আমার মাকেও মুক্তি দেব।’
মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় শশাঙ্ক মিত্রের মুখে হাসি। সহজ বেরিয়ে এল ঘর থেকে।
(চলবে)
08th  August, 2021
মেট্রোর দুপুর

সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়ল দীপন। কারণ দুটো— এক, এতগুলো সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে একটু না দাঁড়ালে আর পারা যাচ্ছিল না। দুই, সামনে মধ্য দুপুরের কলকাতা বৈশাখের রোদে ঝলসাচ্ছে। পা রাখার আগে এটাই শেষ সুযোগ। পকেট থেকে সেলফোনটা বের করল। বসে পড়ল মেট্রোর সিঁড়িতে। চোখ রাখল স্ক্রিনে। 
বিশদ

21st  April, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
একনজরে
মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধর সংক্রান্ত মামলায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর পরিবারকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতে নির্দেশ, তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিস। ...

রক্তক্ষরণ আটকাতে পারবে কি সিপিএম? আটকানো যাবে কি বামের ভোট রামে যাওয়া? —মূলত এই দু’টি প্রশ্নই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। ব্রিগেড ভরাতে পারলেও ভোটবাক্স ভরাতে পারবেন কি না, তা নিয়েই এখন চিন্তিত সিপিএমের বঙ্গ রাজনীতির কুশীলবরা। ...

ভোট মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরম। আজ, শুক্রবার, লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। বৃহস্পতিবার আগামী পাঁচদিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের ...

বুধবার রাতে নদীয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়ায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে এক যুবক ছিটকে একটি টোটোর কাচ ভেঙে ঢুকে যান। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট প্রভসিমরন, পাঞ্জাব ১০৭/১ (৭.৫ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:29:44 PM