Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ব্লাড
শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ

লোকটাকে সুধী-র সঙ্গে কথা বলতে দেখে আদি মুখটা ঘুরিয়ে নিল। এখন মুখোমুখি হবে না। মেজাজ এমনিতেই চরমে। একটু আগে ব্লাড ব্যাঙ্কে মারামারিই করে ফেলছিল প্রায়।
রাত সাড়ে দশটায় হাসপাতাল বলল ব্লাড লাগবে। সে বারবার বলেছিল, আগে থেকে বললে আনতে সুবিধা হয়। রাতে ব্লাড? অপারেশন ঠিকঠাক হয়েছে বলেও গিয়েছিলেন ডাক্তার। তাহলে মায়ের...? ভাবতে ভাবতেই জানতে চাইল, ‘কোথায় পাব এত রাতে?’ ‘দেখুন ব্লাড ব্যাঙ্কে-ট্যাঙ্কে’! নিষ্পৃহ নার্স ফোন কেটে দিলেন। দৌড়েছিল হাসপাতালে। ব্লাড স্যাম্পল লাগবে। রিকুইজিশনও।
ভাইকে হাসপাতাল যেতে বলে সঞ্জয়কে ডেকেছিল। বাইকে যেতে যেতে একবার ফোন করেছিল অমিতকে। অমিত ছাড়া কে জোগাড় করবে? কার্ড আছে। কিন্তু থাকলেই তো আর রক্ত জোটে না। এত বছর রক্ত দিয়েছে, নেবার দরকার হয়নি। যখন হল হাড়ে হাড়ে বুঝল ব্লাড ব্যাঙ্ক কঠিন ঠাঁই। ‘ডোনার আছে?’ ডোনার সবার থাকে? পকেটে ডোনার নিয়ে ঘোরে লোক? এখনও অর্ধেক লোক রক্ত দেওয়ার নাম শুনলেই পালায়। রক্ত নিয়ে হাজারও সংস্কার। যারা সংস্কারের কথা বলতে পারে না, তারা বলে ওজন কম, অসুখ আছে, ডাক্তারের বারণ। সময় না থাকা, দূরত্ব— এসব তো আছেই। 
কলকাতার বুকেই এমন। বাইরে থেকে যাঁরা আসেন, তাঁদের অবস্থা কহতব্য নয়। শেয়ালদার হাসপাতালে গ্রাম থেকে এসেছেন। অসুস্থকে সঙ্গে নিয়ে একজন। কাকে পাবেন? কোথায় পাবেন? গ্রাম থেকে লোক যদি বা রক্ত দিতেও চায়, আনতে আনতেই তো রোগী মরে যাবে। সঙ্গে যদি কার্ড থাকেও জুটবে না রক্ত? তখন দালাল। অথবা এই সব ফাঁক ফোঁকড়েই দালাল জন্মাতে দেওয়া হয়। পোড়া দেশে আর কোনও জীবিকার রাস্তা না থাকলেও জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতেই দালালির রাস্তা আছে। কোম্পানি কিংবা সরকার কাউকেই চাকরি দিতে হয় না। মাইনে, পিএফ, ডিএ কিস্যু দিতে হয় না। স্রেফ একটা ফাঁক দিতে হয়। তারপরে চরে খাবে এরা।
হ্যাঁ, ব্লাড ব্যাঙ্কেরও রক্ত লাগে। আর হাজারে হাজারে লোক রক্ত দিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক ভরিয়ে দেয়, তেমনটাও মোটে নয়। কিন্তু সে তো দেয়। তার পরিবার দেয়। অনেকদিন হল। সারা বছরে খেপে খেপে দেয়। গ্রীষ্মে যখন প্রবল সঙ্কট, তখন সরাসরি ব্যাঙ্কে গিয়েও দিয়ে এসেছে। তাহলে? আজ এই দুর্বিপাকে তাকে ডোনার আনতেই হবে? সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মী নিরুত্তাপ মুখ করে বলে দেবে ব্লাড নেই। বেসরকারিও কম যাবে না। মাথা নেড়ে বলে দেবে নেই। তারপর চলে যাবে কাউন্টার ছেড়ে। পরের প্রশ্নও করতেই দেবে না। নেই রক্ত? না থাকলে অমিত পায় কোথা থেকে? ফোন করার খানিকক্ষণ পরেই বলে দেয় কেমন করে অমুক জায়গায় গিয়ে তমুকের নাম বললে হয়ে যাবে! যতবার রক্ত লেগেছে, এমন আচমকাই চেয়েছে হাসপাতাল। আর তাকে অমুক তমুকের নাম করে আনতে হয়েছে। সরকারিতে না হলেও বেসরকারিতে টাকা বেশি দিতে হয়েছে। আর ভিতরে ভিতরে কুঁকড়ে গিয়েছে সে। রক্তদান আন্দোলনের এই ফল?
অমিত তার বন্ধু। আজকেও তাকেই ব্যবস্থা করতে হবে। রাতের বেলা এই প্রথম সে আনতে এসেছে রক্ত। একে নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপ, তায় দুই ইউনিট এখনই লাগবে। কাল আরেক ইউনিট। সুতরাং এক জায়গায় পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। আগে সরকারি ব্যাঙ্কে গিয়েছে। কাউন্টারে লোক নেই। রিকুইজিশন জমা হবে। ব্লাডের স্যাম্পলও। প্রসেস হতে সময় নেবে। বাইক সমেত সঞ্জয়কে রেখে বেসরকারি ব্যাঙ্কে গিয়েছে। সেখানে রক্ত কিনেছে। ম্যাচ হতে, প্রসেস হতে সময় লাগে। হাতে পেয়েই দৌড়েছে হাসপাতালে। সবটাই একটা ট্যাক্সি নির্ভর। গুচ্ছের টাকা যাচ্ছে। সকাল থেকে অপারেশন এবং আনুষঙ্গিকের ঠেলায় খাওয়া নেই, ঘুম নেই ঠিক করে কয়েকদিন হল। ট্যাক্সিতে চোখ টেনে এসেছে। পাগুলো পাথর। কিন্তু হাসপাতালে ট্যাক্সি ঢুকতেই দৌড়। ট্যাক্সিওয়ালা জানে সে আবার ফিরবে। কাজেই ভাড়া-টাড়া চায়নি। দৌড়ে আইসিইউ-তে ব্লাড দিয়ে আবার দৌড়ে ট্যাক্সিতে ফেরা। তারমধ্যেই সঞ্জয়কে ফোন করেছিল। সঞ্জয় ব্লাড পেয়ে গেলে চলে আসবে এমনই কথা। না, হাতে পায়নি। আশ্চর্য? এখনও পায়নি? শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত আবার যেতে হবে তাকে? গেল।
‘এখনও দেয়নি কেন? নেই?’ একটু চেঁচিয়েই বলে ফেলল আদি। ‘একটু আগে নিল রিকুইজিশন’। মুখ দিয়ে গালাগাল বেরল তার। সঞ্জয় একটু নরমসরম। ‘আরে কাউন্টারেই ছিল না!’ রাতের বেলা ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে দিয়ে ঢোকা যায় না। পিছনের গলিপথে এক সিঁড়ির মুখ। সেখান থেকে উঠে একচিলতে জায়গা। একদিকে কাউন্টার। অন্যদিকে পিছনের দরজা। প্রাচীন দুর্গ যেন! লোহার দরজার মধ্যে ছোট্ট একটা ঘুলঘুলি খুলে যেন আগন্তুক যাচাই করে ঢুকতে দেবে। অবশ্য এখানে আগন্তুক নিয়ে দেওয়াল-ঘুলঘুলির বা কাউন্টারের লোকদের মাথাব্যথা নেই বলেই মনে হয়। ‘দাদা, ও দাদা, কতক্ষণ লাগবে?’ শূন্যে পাক খেয়ে ঘুরে এল তার কথাগুলো। বেশ কয়েকবার। ঘড়ির কাঁটা ঘণ্টার ঘর পেরচ্ছে। এতক্ষণ ঝিম মেরে ছিল আদি। হঠাৎই, উঠে দরজায় জোরে জোরে লাথি মারতে লাগল, যে দু-চারজন আরও এসেছে রক্ত নিতে তারা বোঝার আগেই। সঙ্গে গালাগাল। এই দুয়ের জেরে কাউন্টারে লোক এল। ‘আরে! কী হচ্ছেটা কী?’ আবার গালাগালের বন্যা ছোটাল আদি। তিন ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে এসেছে। দু’ঘণ্টা লেগেছে রিকুইজিশন নিতে। কতক্ষণ লাগবে আর বলার সময় পাচ্ছে না? মাইনে কি সরকার এমনি এমনি দেয়? লোক নেই? সরকারকে বলুক। একজনকে দিয়ে নাইট শিফট চালাচ্ছে? সরকারকে বলুক। পাবলিকের সঙ্গে পেঁয়াজি?
আদি ছোটবেলায় একবার একটা গালাগাল দিয়ে বাবার হাতে প্রচণ্ড মার খেয়েছিল। তাদের বাড়িতে এ ধরনের সংস্কৃতির চল নেই। সে গালাগালি শিখেছে কলেজে। কিন্তু আদি তখন হিংস্র জন্তুতে পরিণত হয়েছিল। সচরাচর যা হয়, এমন গন্ডগোলের পরে রক্ত হাতে আসে। তাদের হাতেও এসেছিল। সেই রক্ত দিতেই এখন এসেছে সে। মাথায় রয়েছে কালকের রক্তটার কথাও। তখনই লোকটাকে দেখল।
ভাইয়ের সঙ্গে কী কথা বলছে? এখানেই বা কেন? কী একটা রক্তদানের সংগঠন চালায়। হাবভাব দেখলে মনে হয় উদ্ধার করে দিচ্ছে। ওর সঙ্গে ঝামেলাটা মনে পড়ে গেল। সেদিন আদি সবে অফিস থেকে ফিরেছে। চা খেতে খেতে মেসেঞ্জারে মেসেজ চেক করতে বসেছিল। দেখল, সৌরভ তাকে একটা লিঙ্ক পাঠিয়ে লিখেছে, ‘একবার দেখ পোস্টটা’। খুলে দু-এক লাইন পড়তেই মাথা গরম। ‘সারাদিন তো সেলফি পোস্টাচ্ছেন। নয় রান্নার ছবি। নাহলে কোন রেস্টুরেন্টে গেলেন। অথবা হনলুলু না হাওয়াই গিয়েছেন সেখানে ডিমসেদ্ধ নিয়ে সমুদ্দুর দেখাচ্ছেন...’ আদির সেদিন মাথায় ঝড় উঠে গেল। অফিসে গোলযোগ, সংসারে গোলযোগ এ সব কিচ্ছু কারণ না। পোস্টটার ভাষা দেখে মনে হল এ একেবারে ঔদ্ধত্যের শেষ সীমা! কে ভাই তুই যে, কে কী করবে বলে দিবি? আরেকটু পড়তেই আরও গরগরে রাগ জমল। মধ্যবিত্তের আর উচ্চ-মধ্যবিত্তের জীবন, সঞ্চয়, আহ্লাদ সব নিয়েই ব্যঙ্গ। তারপরে ব্যঙ্গাত্মক ভাষাতেই একটা বাচ্চা মেয়ের জন্য রক্তের আবেদন। ‘কোয়েলের বয়স মাত্র আড়াই। জটিল অসুখ। এ নেগেটিভ ব্লাড। আগামী কালই লাগবে। আপনার নার্সিসিজম মাখানো জীবন থেকে খানিক সময় বের করে কোয়েলের জন্য কিছু করুন প্লিজ! আপনাদের আর সহ্য করা যাচ্ছে না নইলে...’ আবেদন করার ভঙ্গিমা এই? 
গা ধোয়া-টোয়া শিকেয়। আদি কয়েকটা ফোন করে প্রথমে। বেশ কিছু সংস্থার সঙ্গে সে যুক্ত। ফোনাফুনি করে এ নেগেটিভ ডোনার জোগাড় করে লিখেছিল সেই পোস্টে। ‘ডোনার জোগাড় হয়ে গিয়েছে। দু’-দু’জন। কিন্তু আমরা কেউ পোস্টে লেখা মহৎ কর্মগুলো করি না। বেড়ানোর ছবি দেওয়ার মতো অপরাধ অবশ্য কয়েকবার করেছি। তা কী হুকুম? সাতবার ফাঁসি আর যাবজ্জীবন? হুজুর, পোস্টে দেওয়া নাম্বারে ফোন করে কাল রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। দিয়ে দেওয়ার পরে শাস্তি দেবেন না হয়? অবশ্য যদি রক্ত খোঁজার বদলে পোস্ট করে কত মহৎ আপনি জানানোর পরে, সময় পান। নইলে অপেক্ষা করব জাঁহাপনা।’ 
তুমুল লেগে গিয়েছিল। লোকটার সংগঠনের কেউ কেউ আক্রমণ করল তাকে। তার হয়ে আবার কেউ কেউ কোমর বাঁধল। লোকটি চুপচাপ। শেষে রাতের দিকে, প্রায় তিনটে-সাড়ে তিনটের সময় সেই পোস্টেই লোকটি ক্ষমা চেয়ে বলল, তার এ ভাষায় লেখা উচিত হয়নি। ঘুম হয়নি সেদিন আদির। জেগেই ছিল। এদিক ওদিক ভিডিও দেখছিল, পড়ছিল নেট থেকে। যেন ওই ক্ষমাপ্রার্থনা না এলে সে আর ঘুমবেই না, এমন হাল হয়েছিল। লোকটা ক্ষমা চাওয়ার পর সে আর কথা বাড়ায়নি যেমন সত্যি, তেমনই তার রাগ যায়নি তারপরেও। তারপর মুখোমুখি দেখাও হয়েছে দু-একটা অনুষ্ঠানে। সে-ই এড়িয়ে গিয়েছে। আজ এখানে আবার দেখল! কিন্তু এখানে কেন?
নার্সকে রক্ত দিল। তিন নম্বর ইউনিটটা নিয়ে সমস্যা হবে জানাল আদি। কাছাকাছিই ছিলেন রাতের রাউন্ডের জুনিয়র ডাক্তার। কথাটা শুনে বললেন ফোন নাম্বার দিতে পারেন তিনি। কিন্তু দালাল। খরচ হবে। এমন মিষ্টি করে বললেন যেন শুনে মনে হবে কত উপকার করছেন! দালাল আছে জানে ডাক্তার, প্রশাসন জানে না? সব সাঁটে আছে? রাগে গা জ্বলছিল তার! তবুও নাম্বারটা চুপচাপ নিল। ব্লাড ব্যাঙ্কে ঝামেলাটা করে ভুল করেছে মনে হয়। আর তো ওখান থেকে দেবে বলে মনে হয় না। এই দালাল দিয়েই তবে! 
রাগ, অসহায়তা সব নিয়ে ভাইয়ের কাছে এসে দাঁড়াল। লোকটা শান্তভাবে তাকে দেখছে। ‘অনুপমদা ডোনার নিয়ে এসেছে রে! নিজেও দেবে,’ ভাই বলল। ‘আপনার পোস্টে দেখলাম রক্ত লাগবে। আপনার নাম্বার নেই। সোজা হাসপাতালেই চলে এলাম। খুঁজে পেয়ে গেলাম আপনার ভাইকে। প্রবীরকেও নিয়ে এসেছি। দু’জনেই ও নেগেটিভ।’
এত ঝগড়া-ঝাঁটি অবজ্ঞার পরেও কেউ আসে? এভাবে? আদির অস্বস্তিই লাগছিল। লাগবে না বলে দেবে? ওদিকে ব্লাড ব্যাঙ্কে তো!
‘চিনতে পারছেন আমাকে?’ প্রবীর বলল। প্রবীরকে কেমন চেনা লাগছে! ‘আমি কোয়েলের বাবা। সেদিন আপনারা এসে রক্ত দিলেন!’
‘আরে হ্যাঁ। কোয়েল -?’ ‘ভালো আছে এখন!’ ‘যাক’। আদির মনে পড়ল সেদিন অনুপমকে দেখেনি হাসপাতালে। অবশ্য মেজাজ তার যা গরম ছিল তাতে দেখা না হয়ে ভালোই হয়েছে! তবুও কথার খাতিরে কথা বলতেই হয়। ‘আপনাকে সেদিন দেখিনি হাসপাতালে!’ অনুপমকে লক্ষ করে বলল। ‘অনুপমদার সেদিন সারাদিন চলে গিয়েছিল ধার জোগাড় করতে।’ 
‘ধার?’ 
‘হ্যাঁ! তখন হাসপাতালের বিল মেটাবার টাকাও আর -! ব্যাঙ্ক থেকে পার্সোনাল লোন নিয়ে -!’ 
‘আহ প্রবীর’, বলে উঠল অনুপম। 
‘সেই দিনগুলো –উফ্‌! একদিকে রক্ত অন্যদিকে টাকা, দুই-ই সমান দরকার। আর জানেন ওই যে পোস্টটা -’! ‘তুমি থামবে প্রবীর?’ থামল না প্রবীর। ‘ওইটা ভয়ঙ্কর রেগে গিয়ে লিখেছিল অনুপমদা। সেদিনই একজন ব্লাড দিতেন। মানে দেবেন বলেছিলেন। আমার বসের ছেলে। আমরা বসে আছি তো বসেই আছি। সময় চলে যাচ্ছে। ফোন করে কিছু বলা তো দূরস্থান, ফোনই ধরে না। শেষে অনুপমদারই পরিচিত আরেকজন যিনি ডোনারকেও চেনেন, বললেন সে তো দীঘা বেড়াতে চলে গিয়েছে সকাল-সকাল। বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে গিয়েছে। ভুলেই গিয়েছে রক্ত দেওয়ার কথা’। 
‘সে কি?’ 
‘হ্যাঁ, আর কী বলছি! বসের ছেলে। তার নাম নিলে চাকরি যাবে আমার। আর গেলে এই অবস্থায়-! সেই রাগে-!’
রাগ? হ্যাঁ রাগ-ই তো! অসহায় মানুষ না কাঁদলে একমাত্র রাগই তো করতে পারে। সে জানে আজ। অনুপমের দিকে তাকাল আদি। অনুপম করিডোর দিয়ে দূরের দরজাটার দিকে চেয়েছিল। একটু নৈঃশব্দ।
‘রক্তদান আন্দোলন। মুখে নয়, কাজে তা করে দেখাতে হবে,’ শান্ত স্বরেই তাকে বলল অনুপম।
তখন রাত সাড়ে তিনটে হাসপাতালের ঘড়িতে।
অলংকরন : সুব্রত মাজী
09th  August, 2020
মেট্রোর দুপুর

সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়ল দীপন। কারণ দুটো— এক, এতগুলো সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে একটু না দাঁড়ালে আর পারা যাচ্ছিল না। দুই, সামনে মধ্য দুপুরের কলকাতা বৈশাখের রোদে ঝলসাচ্ছে। পা রাখার আগে এটাই শেষ সুযোগ। পকেট থেকে সেলফোনটা বের করল। বসে পড়ল মেট্রোর সিঁড়িতে। চোখ রাখল স্ক্রিনে। 
বিশদ

21st  April, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
একনজরে
আইপিএলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন রোহিত শর্মা ও রিকি পন্টিং। এবার একই সুর শোনা গেল দিল্লি ক্যাপিটালসের অক্ষর প্যাটেলের ...

লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত। ধৃতের নাম ইন্দরপাল সিং গাবা। তিনি ব্রিটেনের হাউন্সলোরের বাসিন্দা। দিল্লি থেকে ...

বুধবার রাতে নদীয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়ায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে এক যুবক ছিটকে একটি টোটোর কাচ ভেঙে ঢুকে যান। ...

রক্তক্ষরণ আটকাতে পারবে কি সিপিএম? আটকানো যাবে কি বামের ভোট রামে যাওয়া? —মূলত এই দু’টি প্রশ্নই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। ব্রিগেড ভরাতে পারলেও ভোটবাক্স ভরাতে পারবেন কি না, তা নিয়েই এখন চিন্তিত সিপিএমের বঙ্গ রাজনীতির কুশীলবরা। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট প্রভসিমরন, পাঞ্জাব ১০৭/১ (৭.৫ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:29:44 PM