Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

স্বপ্নসঙ্গী 

উদয়চাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায়: ট্রেনটা প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরি করে ঢুকল গোমো স্টেশনে। বাতানুকূল কামরা থেকে নেমে আসে তন্বী পিয়ালি। ভিড় এড়িয়ে, সঙ্গের চাকা লাগানো ব্যাগটা নিয়ে একটু সরে এসে, উদ্বিগ্ন চোখে দু’দিকে তাকায়। একটা সাধারণ পোশাক পরা যুবক পিয়ালির সামনে এসে বলে, আপনি মুখার্জি স্যারের ফরেস্ট বাংলোয় যাবেন তো?
পিয়ালি ভ্রু কুঁচকে বলে, কে তুমি?
—আমি সতীশ। সাহেবের গাড়ির ড্রাইভার।
—তুমি আমাকে চিনলে কী করে ?
—বাংলোর দোতলার বারান্দায় সাহেবের সঙ্গে আপনার ফোটো দেখেছি।
পিয়ালির সন্দেহ দূর হয়। যুবকটি পিয়ালির ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যায়। স্টেশনের বাইরে এসে, নীল মারুতির পিছনের দরজা খুলে দিয়ে একপাশে সরে দাঁড়ায়। স্টেশন থেকে বনবাংলোর দূরত্ব কুড়ি কিলোমিটার। বিকালেই পৌঁছে যাওয়ার কথা। পৌষের বেলা ছোট, সন্ধে ঘনিয়ে এসেছে। গাড়িটা ভালোই গতিতে ছুটতে থাকে। দু’পাশে ঘন জঙ্গল।
পিয়ালি এখানকার ফরেস্ট অফিসার পঙ্কজ মুখার্জির নাতনি। থাকে কলকাতায়। আঁকার কলেজের ছাত্রী। বড় ছুটি পেলেই আঁকার সরঞ্জাম, ক্যামেরা নিয়ে দাদুর বাংলোয় চলে আসে।
জঙ্গলে গিয়ে নিজের পছন্দ মতো তোলে বিশেষ কিছু ছবি। আঁকাআঁকিও চলে সকাল-সন্ধে। দাদুর বাংলোর উল্টোদিকে আরও কয়েকটা বাংলো আছে। ওর মধ্যে একটায় ইদানীং এক নতুন বিট অফিসার এসেছে। নাম দেবদ্যুতি লাহিড়ী। একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে, তাছাড়া বাঙালি বলে পঙ্কজবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্টতা বেড়েছে। ওর গানের গলায় মুগ্ধ পিয়ালির দাদু।
অফিসের কাজে কলকাতার বাড়িতে এসে, দেবদ্যুতির গুণগান করে বলেছেন, এমন চৌকষ ছেলে খুব কমই মেলে। ওর যা কোয়ালিফিকেশন, তাতে অন্য অনেক ভালো চাকরি পেতে পারত। তবে, পিয়ালির মতো জঙ্গল ভালোবাসে বলেই এই চাকরি বেছে নিয়েছে।
আহা এই দুই জঙ্গলপ্রেমী জীবনসঙ্গী হলে, ভালোই জমত। পিয়ালি খুব ভালো করেই জানে, এ বাড়িতে দাদুর ইচ্ছাই শেষ কথা। তাই, এখন অজানা, অচেনা কার হাতে তুলে দেবে, তারপর খারাপ কিছু হলে তখন? পরিস্থিতিটা পরিষ্কার করার জন্যই পিয়ালি হেসে বলে, ঘটকালি যারা করে, তাদের কাছে পাত্র-পাত্রীদের ফোটো থাকে। পাত্রের খবর যখন এনেছো, ফোটোও নিশ্চয়ই আছে। কই দেখাও।
পঙ্কজবাবু অস্বস্তিবোধ করেন। একটু ভেবে নিয়ে বলেন, ফোটো নেই তো কি হয়েছে? কলকাতায় আমাকে সপ্তাখানেক থাকতে হবে। এই ফাঁকে তুমি একটা সারপ্রাইজ ভিজিটে গোমোর বাংলোয় গিয়ে পাত্রের সঙ্গে আলাপ করে আসতে পারো। তারপর তোমার ‘হ্যাঁ’ হলে আমি দেবদ্যুতির ‘হ্যাঁ’ ‘না’ জেনে নেব। ওখানে মেনকার মা দুবেলাই আসে। এখন আমার গাড়ির একটা নতুন ড্রাইভার আছে। তোমার কোন অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না। তুমি যদি যেতে চাও, তাহলে আমি সব বলে দিচ্ছি।
সেই কারণেই এবার একা এসেছে পিয়ালি। আসার সময় তাড়াহুড়োতে নিজের মোবাইলটা ড্রেসিংটেবিলের ড্রয়ারেই রেখে এসেছে।
গাড়িটা একটা ছোট বস্তির কাছে এসে থামে। হর্নটা দু’বার বাজিয়ে, দরজা খুলে, নেমে যায় ড্রাইভার। পিয়ালির বুকটা ভয়ে কেঁপে ওঠে। জঙ্গলের একটা চালাঘরের সামনে গাড়ি থামানোর পেছনে কোনও বদমতলব নেই তো ? জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে গাড়ির হেডলাইটের আলোয় দেখে, একটি কমবয়সি বউ তার বাচ্ছাটির হাত ধরে এগিয়ে আসছে। ওর একহাতে একটা কাঁচের বোতল ভর্তি দুধ। ড্রাইভার সেটা নিয়ে বউটির হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বাচ্ছাটির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। বউটি হেসে ঘোমটা টানে।
গাড়িটা আবার চলতে শুরু করতেই পিয়ালি স্বাভাবিক হয়। বুঝতে পারে, ড্রাইভারের পরিবার এখানেই থাকে হয়তো।
মারুতিটা কিছুক্ষণের মধ্যেই ফরেস্ট অফিসের চৌহদ্দির মধ্যে ঢুকে পঙ্কজবাবুর দোতলা বাংলোর নীচে থামে। গাড়ি থেকে নেমে পিয়ালির চোখ যায় উল্টোদিকের বাংলোটার আলোজ্বলা গেটটার দিকে। সেখানে একটা প্লেটে হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা- দেবদ্যুতি লাহিড়ী। ততক্ষণে ড্রাইভার সতীশ দোতলায় উঠে সব দরজা-জানলা খুলে দিয়ে, রান্নাঘরে ঢুকে কফি বানাতে ব্যস্ত হয়।
পোশাক পালটে, মুখ হাত ধুয়ে, বারান্দার ডাইনিং টেবিলে গরম কফির কাপ, চানাচুর, বিস্কুট সাজানো দেখে স্বস্তিবোধ করে পিয়ালি। কফির কাপে চুমুক দিয়ে ড্রাইভার সতীশকে জিজ্ঞেস করে, আমার রাতের খাবারের ব্যাপারে দাদু কি ফোনে তোমাকে কিছু বলেছে?
সতীশ রান্নাঘর থেকে দুটো হটপট এনে বলে, এতে সব রাখা আছে। আপনি খাওয়া হয়ে গেলে এখানেই সব রেখে দেবেন। আমি কাল সকালে এসে ধুয়ে দেব।
—তুমি কেন ধোবে ? মেনকার মাকে বলে যাও, যেন কাল সকালে সে আসে।
—বড়সাহেব সাতদিনের জন্য কলকাতায় যাচ্ছেন তাই সেও মেয়ের বাড়ি চলে গিয়েছে ম্যাডাম।
সতীশ চলে যাওয়ার পর, দেবদ্যুতির বাংলোর দিকে তাকায় পিয়ালি। নীচের গেটে আলো থাকলেও দোতলার ব্যালকনি অন্ধকার। মানে, এখনও সে ফেরেনি।
একটু একটু করে রাত বাড়তে থাকে। কুয়াশার চাদরে কাছের গাছপালা আবছা হয়ে যায়। হটপটের ঢাকনা খুলে দেখে ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন, স্যালাড, আপেল সুন্দর করে সাজানো। রান্নার সুগন্ধে জিভে জল আসে খাদ্যরসিক পিয়ালির।
খাওয়া শেষে বাংলোর দেওয়ালে, ঘরে নিজের আঁকা বাঁধানো ছবিগুলোয় চোখ বুলিয়ে, বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। দাদু বিহীন ফাঁকা বাংলোটা অদ্ভুত লাগে।
পরের দিন সকালে একটু দেরিতেই ঘুম ভাঙে পিয়ালির। নিত্যদিনের অভ্যাস মতো নিজেকে একটু সাজিয়ে নিয়ে ব্যালকনির টেবিলে এসে দেবদ্যুতির বাংলোর একই ছবি দেখতে পায়। বাইরের গেটে তালা ঝুলছে। নীচে সতীশকে গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নেমে এসে বলে, চলো, লেকের রেস্টুরেন্টে যাব।
মারুতিটা আবাসনের গেট পার হয়ে বড় রাস্তায় পৌঁছলে পিয়ালি জিজ্ঞেস করে, গাড়িতে কোনও বাংলা গানের ক্যাসেট নেই?
সতীশের হাতের ছোঁয়ায় ক্যাসেট সচল হয়। মানবেন্দ্র মুখার্জির ‘বনে নয়, মনে মোর পাখি আজ গান গায়...’ জানলাপথে বাইরের জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে পিয়ালি শুনতে থাকে। পরের গান হেমন্ত মুখার্জির ‘তুমি এলে, অনেক দিনের পরে যেন বৃষ্টি এলো...’ একের পর এক গানগুলো শুনতে শুনতে পিয়ালি বুঝতে পারে গানগুলো কেউ রিমেক করেছে। তবে যেই-ই করুক, তার গলায় জাদু আছে। লেকপাড়ের রেস্টুরেন্টে ঢুকে মশলাধোসা খেয়ে বেরিয়ে এসে একটা একশো টাকার নোট সতীশের দিকে বাড়িয়ে বলে, তুমি কিছু খেয়ে এসো।
সলজ্জ গলায় সতীশ বলে, আমি ঘর থেকে রুটি সবজি খেয়ে এসেছি ম্যাডাম। টাকাটা ব্যাগে ঢুকিয়ে একটা দুহাজার টাকার নোট এগিয়ে দিয়ে পিয়ালি বলে, তাহলে এই টাকা থেকে কালকের সেই খাবার যেখান থেকে এনেছিলে, সেখান থেকে চিকেন বিরিয়ানি, দই, স্যালাড, আপেল নিয়ে আসবে। বাকি টাকা থেকে গাড়ির তেল আর দুধের দাম নিয়ে, নিজের মন যা চায় খেয়ে আসবে।
বাংলোয় ফিরে চটজলদি সতীশ টেবিলের ওপরে থাকা হটপট, থালা, বাটি সব ঝকঝকে পরিষ্কার করে দেয়। হটপট দুটো ব্যাগে ভরে বেরনোর সময় পিয়ালি ওকে জিজ্ঞেস করে, তোমার লাহিড়ীবাবু কোথায় গিয়েছে জানো? সতীশ মেঝের দিকে চোখ নামিয়ে বলে, ছোটসাহাব কাল বললেন, আমি আজ হাজারিবাগ যাচ্ছি। ফিরতে কয়েকদিন দেরি হবে। আপনি আসবেন বলে আমাকে বাংলোর চাবি দিয়ে গেলেন। স্টেশনে যেতে হবে তিনটের সময় সেটাও বললেন।
সে কথা শুনে পিয়ালির ভাবনার বদল হয়। সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। দেবদ্যুতি তো পালিয়ে যাচ্ছে না। পরে দাদুর সঙ্গে এলেও চলবে। দাদু তো জোর করছে না। আগে আলাপের সুযোগ দিচ্ছে যখন, তখন ফালতু চিন্তার কোন কারণ নেই।
এই সব সাত-পাঁচ ভেবে অপেক্ষমান সতীশকে বলে, তুমি একটা কাজ করো, আজকের সন্ধের ট্রেনে এসি কোচে হাওড়া যাওয়ার একটা টিকিট নিয়ে আসবে।
পিয়ালি নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নেয়। মোবাইলটা না থাকায় বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করাও যাচ্ছে না।
সতীশ ফিরে এসে, টেবিলে খাবার সাজিয়ে দেয়। হটপটগুলোর পাশে রাখা বিল আর ফেরত টাকা গুনে বুঝতে পারে, সতীশ দুপুরেও হোটেলে কিছু খায়নি। গাড়ির ডিজেলের স্লিপ রয়েছে তবে দুধের দামটুকুও নেয়নি। পিয়ালির আশ্চর্য লাগে গরিব হয়েও এত নির্লোভ হতে পারে কেউ! সন্ধের ট্রেন ছাড়ার আধঘণ্টা আগেই পিয়ালিকে স্টেশনে পৌঁছে দেয় সতীশ। ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে রিজার্ভ বার্থ পর্যন্ত সঙ্গে যায়।
পিয়ালি ভেবে রেখেছিল, সতীশের বউ আর বাচ্ছাটার জন্য হাজার টাকা মতো বকশিস দেবে। নিজের সিটে গুছিয়ে বসে ব্যাগ খোলার সময় দেখে সতীশ নেই।
পিয়ালি বুঝে উঠতে পারে না, সতীশ এভাবে কিছু না বলে চলে গেল কেন! তবে ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে আবার ফিরে আসে সতীশ। ওর হাতে একটা সুন্দর কাপড়ের বড় ব্যাগ। ব্যস্ত সতীশ বলে, ম্যাডাম এতে আপনার রাতের খাবার আছে। সাহাবকে নমস্কার দেবেন। ট্রেনটা তখন চলতে শুরু করে দিয়েছে। পিয়ালি কিছু বলার আগেই চলতি ট্রেন থেকে নেমে যায় সতীশ।
ব্যাগ খুলে পিয়ালি অবাক হয়ে দেখে, দুটো আলাদা কাগজের বাক্সে মোগলাই পরোটা, মটন-কষা, স্যালাড, আপেল আর সন্দেশ সাজানো। সতীশের এই আন্তরিকতার কথা ভেবে পিয়ালির মনটা ভারি হয়ে ওঠে। সামান্য ড্রাইভারের চাকরি। সংসার আছে। দাদু ওকে কটা টাকাই বা মাইনে দেয়? শুধু গাড়ির মালিকের নাতনি বলেই দুধের দামটুকুও নিল না। তারপর নিজের পয়সায় এত দামি খাবার কিনে দিয়ে গেল। মাত্র দেড় দিনের পরিচয়ে নিজেকে এতটা উজাড় করে দিতে পারে একটা মানুষ! অজান্তে চোখের পাতা ভিজে যায় পিয়ালির।
কাকভোরে হাওড়া পৌঁছে সরকারি বাসের জানলায় মাথা ঠেকিয়ে সতীশের ব্যবহারের কথা ভাবতে ভাবতে বেহালার বাড়িতে পৌঁছয়। পরিষ্কার হওয়ার ফাঁকে ব্রেকফাস্টের জন্য দাদুর ডাক কানে আসে।
ডাইনিং টেবিলে তখন পিয়ালির মা-বাবা উদ্বিগ্নমুখে বসে আছে মেয়ের মতামতের অপেক্ষায়। ওরা জানে পিয়ালির খেয়ালিপনার কোনও অন্ত নেই। দেবদ্যুতির ব্যাপারে কী বলবে কে জানে!
খাবার মুখে নেওয়ার আগেই দাদু জানতে চান, তোমার ঝটিকা সফর কেমন হল ডার্লিং?
কফির কাপে চুমুক দিয়ে পিয়ালি স্বাভাবিকভাবেই বলে, তোমার দেবদ্যুতি কোন দেবালয়ে গিয়েছেন তিনিই জানেন। মেনকার মা গিয়েছে মেয়ের বাড়ি। ভাগ্যিস তোমার নতুন ড্রাইভার সতীশ ছিল, তাই না খেয়ে মরিনি।
গোমোর হোটেল থেকে ভালো খাবার এনে দেওয়া, কফি বানানো, বাসন ধোওয়া সব নিজের হাতেই করেছে। শুধু তাই নয়, বিহারী হয়েও বাংলা বলতে পারে বলে আমাকে ভুলভাল হিন্দি বলতে হয়নি।
তোমার সঙ্গীতশিল্পীটি সতীশকে বাংলোর চাবিটা যদি দয়া করে দিয়ে না যেত, তাহলে আমার কি করুণ অবস্থা হতো ভাবলে শিউরে উঠছি।
পিয়ালির বাবা হেসে বলেন, নাকের বদলে নরুন তো মিলেছে। ওই ড্রাইভারটাকে আমাদের তরফ থেকে কিছু উপহার দেওয়া উচিত।
দ্বিতীয়বার কফির কাপে চুমুক দিয়ে পিয়ালি ওর দাদুকে বলে, তোমার গাড়ির কোনও ড্রাইভারই তো বেশিদিন টেকে না। তবে, আগের চারজনের মতো নয় এই সতীশ। এত ভদ্র-সভ্য, অনুগত, নির্লোভ মানুষ এখনকার দিনে পাওয়া অসম্ভব। ওকে তুমি হাতছাড়া করো না। খাওয়া শেষ করে দাদু বলেন, ঠিক আছে ডার্লিং, কথা দিচ্ছি, গোমোয় ফিরে তোমার এত যত্ন করার জন্য ওর মাইনে বাড়িয়ে দেব।
তারপর বেসিনের কলে হাত ধুয়ে, পঙ্কজবাবু পকেট থেকে মোবাইলটা বের করেন। ওপারের আওয়াজ পেয়ে বলেন, সতীশ, ম্যায় বড়াসাহাব বোল রহা হুঁ। তুম আভি কাঁহা হো?
ওদিকের জবাব শুনে বলেন, ঠিক হ্যায়। কোই বাত নেহি। চিন্তা মত করো।
কলটা কেটে দিয়ে আবার একটা ফোন করলেন। ওপার থেকে সংকেত পেয়ে মিষ্টি হাসিতে ঘর ভরিয়ে পিয়ালির দিকে তাকিয়ে বলেন, লাহিড়ীবাবু, এতদিন আপনার গানেই মুগ্ধ ছিলাম। তবে, আজ পিয়ালির মুখে সব শুনে বুঝলাম, অভিনয়েও দেবদ্যুতি লাহিড়ী অদ্বিতীয়। 
31st  May, 2020
মেট্রোর দুপুর

সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়ল দীপন। কারণ দুটো— এক, এতগুলো সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে একটু না দাঁড়ালে আর পারা যাচ্ছিল না। দুই, সামনে মধ্য দুপুরের কলকাতা বৈশাখের রোদে ঝলসাচ্ছে। পা রাখার আগে এটাই শেষ সুযোগ। পকেট থেকে সেলফোনটা বের করল। বসে পড়ল মেট্রোর সিঁড়িতে। চোখ রাখল স্ক্রিনে। 
বিশদ

21st  April, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
একনজরে
ভোট মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরম। আজ, শুক্রবার, লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। বৃহস্পতিবার আগামী পাঁচদিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের ...

আইপিএলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন রোহিত শর্মা ও রিকি পন্টিং। এবার একই সুর শোনা গেল দিল্লি ক্যাপিটালসের অক্ষর প্যাটেলের ...

মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধর সংক্রান্ত মামলায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর পরিবারকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতে নির্দেশ, তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিস। ...

বুধবার রাতে নদীয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়ায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে এক যুবক ছিটকে একটি টোটোর কাচ ভেঙে ঢুকে যান। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট প্রভসিমরন, পাঞ্জাব ১০৭/১ (৭.৫ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:29:44 PM