Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

উপেক্ষিত বিজ্ঞানী 

‘আত্মঘাতী’ বাঙালির ড্রয়িংরুমে তাঁরা কেবলই ছবি। ব্রাত্য। বিস্মৃত। উপেক্ষিত। কেউ নোবেল সিম্পোসিয়ামে বক্তব্য রাখার ডাক পেয়েছেন, আবার কারওর গবেষণার খাতা হাতিয়ে নোবেল পকেটে পুরেছেন অন্য কেউ। গোটা পৃথিবী তাঁদের অবদানে ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ, অথচ নিজভূমে তাঁরাই রয়ে গিয়েছেন বিস্মৃতির অন্ধকারে। আজ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আত্মভরী প্রত্যুষে তেমনই চার বরেণ্য বাঙালি বিজ্ঞানীর বেদনা-বিধুর কাহিনি শোনাচ্ছেন মৃন্ময় চন্দ। 

 জগদীশচন্দ্র বসু
এক শিশি ‘কুন্তলীন তেল’ ঢেলে উত্তাল সমুদ্রকে তিনি শান্ত করতে চেয়েছিলেন। মা-র পুরনো বাসনপত্র গলিয়ে বাড়ির কামারশালায় কামান তৈরির ভূত মাথায় চেপেছিল। জন্ম তাঁর ১৮৫৮-র ৩০ নভেম্বর, ঢাকা থেকে ৩৫ মাইল দূরে রাড়িখাল গ্রামে। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের সংসারে তিনি, জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন মা-র নয়নের মণি। বিদেশ গিয়ে ম্লেচ্ছ সংসর্গে জগদীশ ডাক্তারি পড়বেন তাতে ছিল মা-র ঘোরতর আপত্তি।
প্রবাসের মায়া কাটিয়ে জগদীশ তদ্দিনে কলকাতায়। গ্যালেনার মধ্যে দিয়ে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ প্রক্ষেপণের নেশায় মেতেছেন। তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের জাদুস্পর্শে লেড সালফাইড ‘গ্যালেনার’ বিক্ষেপ ঘটে, প্রাণে খুশির জোয়ার আসে। তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গকে ‘গ্যালেনা’ তাই পরম স্নেহে বুকে আঁকড়ে রাখে। তড়িৎমোক্ষণ বন্ধ হলে ‘গ্যালেনা’ আবার নিস্তেজ, নিরুত্তাপ। এই ‘কন্টাক্ট সেন্সিটিভিটি’ শুধু জড়পদার্থের ধর্ম নয়। লজ্জাবতীর পাতা (মিমোসা পিউডিকা) বা বনচাঁড়াল (ডেসমোডিয়াম জাইরান্স) স্পর্শ করলেও তারা কুঁকড়ে যায়। ‘ভেজিটেবল ইলেক্ট্রিসিটির’ কল্যাণেই পাতার কুঁকড়ে যাওয়া। অগাস্টাস ওয়ালারের বহুকাল আগেই জগদীশচন্দ্র যার প্রমাণ দিয়েছিলেন। লজ্জাবতী বা বনচাঁড়াল যেভাবে বাইরের উদ্দীপনায় সাড়া দেয় ‘গ্যালেনা’ও ঠিক সেভাবেই উদ্দীপ্ত হয়। উদ্ভিদের রয়েছে ‘ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল পালস’ বা স্নায়ুতন্ত্র। যার দ্বারা গাছেরাও মনে রাখতে, শিখতে এমনকী চিনতেও পারে। ‘অ্যাকশন পোটেনশিয়াল’ মারফত বিভিন্ন উদ্দীপক যেমন আলো-তাপ-আঘাত-বিষ-চেতনানাশকে মানুষের মতোই যন্ত্রণায় ককিয়ে ওঠে। সে যন্ত্রণা যদিও অব্যক্ত! উদ্ভিদের অনুভূতিবাহক ‘ফ্লোয়েম’, প্রাণীর ‘সাইন্যাপস’।
স্টেথোর মতো উদ্ভিদের হৃৎস্পন্দনকে জগদীশচন্দ্র মেপেছিলেন ‘ক্রেসকোগ্রাফে’। ১৯২৯ সালে ‘গিল্ডহাউস বক্তৃতায়’ উদ্ভিদের হৃৎস্পন্দনের অভূতপূর্ব ঘটনাটিকে তিনি বিশ্ববাসীর গোচরে এনেছিলেন। প্রাণীদের মতোই যে উদ্ভিদের উত্তেজনা-উদ্দীপনা আণবিক স্তরে অক্সিন-অ্যাকটিন-মায়োসিন-অ্যাসিটাইলকোলিনের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়, দেখিয়েছিলেন তাও। আধুনিক স্নায়ুবিজ্ঞানের জনকও নিঃসন্দেহে জগদীশচন্দ্র। ‘টাইম ম্যাগাজিন’ তাঁর এই হীরক-শুভ্র উদ্ভাবনকে বলল বুজরুকি। রয়েল সোসাইটি বুজরুকি নিরসনের ভার দিল স্যার উইলিয়াম ব্র্যাগ আর স্যার উইলিয়াম বেলিসকে। উদ্ভিদের হৃৎস্পন্দনকে এক কোটি গুণ বড় করে ‘ক্রেসকোগ্রাফের’ মাধ্যমে গোটা পৃথিবীর কর্ণগোচর করলেন জগদীশচন্দ্র। বিমূঢ়-স্তম্ভিত-লজ্জিত-অবনত ‘টাইম’।
‘গ্যালেনার’ শরীরে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ যে লজ্জাবতীর মতোই শিহরণ জাগায়, তার হদিশ প্রথম দিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল-হার্ৎস-অলিভার লজ। তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গকে পাকড়াও করার চেষ্টাও তাঁরা শুরু করেছিলেন। সেই চেষ্টারই মধুরেন সমাপয়েৎ জগদীশচন্দ্রের হাতে। হার্ৎসের ৬৬ সেমি তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে ৬ সেমিতে নামালেন লজ। জগদীশচন্দ্র লজের ৬ সেমি তরঙ্গকে বানালেন ৫ মিলিমিটারের লিলিপুট মাইক্রোওয়েভ। ‘তেজোমিটার’ আর ‘গ্যালেনা রিসেপ্টরের’ মাধ্যমে সেই তরঙ্গ প্রেরণ আর গ্রহণও করে তুললেন সুচারু-সাবলীল। ১৯০১-র ১০ মে, ‘রয়েল সোসাইটির’ শুক্র-সন্ধ্যার জমাটি আড্ডায় রেডিওর জন্ম মুহূর্তের সাক্ষী রইল গোটা বিশ্ব। রয়েল সোসাইটির বক্তৃতার দিন-দুয়েক আগে বেতারতরঙ্গের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্যসহ জগদীশের খেরোর খাতাটি খোয়া যায়। আর সেই খাতা হাতিয়েই নাকি নোবেল পকেটে পোরেন মার্কনি। ভগিনী নিবেদিতা আর সারা বুলের নিরন্তর ঠেলা-গুঁতোয় ১৯০৪ সালে বেতারের পেটেন্ট (নং-৭৫৫৮৪০) জুটলেও আত্মভোলা জগদীশচন্দ্র পেটেন্টের পুনর্নবীকরণের কথা গেলেন বেমালুম ভুলে।
 শম্ভুনাথ দে
বার তিনেক নোবেল প্রাইজের জন্য মনোনীত তিনি— ডাঃ শম্ভুনাথ দে। আবিষ্কার করেছিলেন কলেরা-টক্সিন। জন্ম তাঁর ১৯১৫-র ১ ফেব্রুয়ারি। রবার্ট কখ কলেরার জীবাণু আবিষ্কার করে জগদ্বিখ্যাত। কিন্তু কলেরা মহামারীতে কলেরা জীবাণুর নেই কোনও ভূমিকা। কলেরার জীবাণু ভিব্রিও কলেরির দেহ-নিঃসৃত অধিবিষ বা কলেরা-টক্সিনই যে নাটেরগুরু তা কল্পনাও করতে পারেননি কখ।
নোবেল কমিটি কেন কলেরা-টক্সিন আবিষ্কারকের পাদপ্রান্তে নত? কারণ কলেরা-টক্সিন আবিষ্কৃত না হলে কলেরা মহামারীকে কিছুতেই রোখা যেত না। রবার্ট কখ ভেবেছিলেন সালমোনেল্লা-সিজেল্লা-সিউডোমোনাসের মতো কলেরার জীবাণুও ক্ষরণ করে ‘এন্ডোটক্সিন’। ‘এন্ডোটক্সিন’ তো নয়ই, মানবশরীরের ক্ষুদ্রান্ত্রেই কেবল কলেরার জীবাণু ক্ষরণ করে ‘এক্সোটক্সিন’। ক্ষুদ্রান্ত্রের ঝিল্লিকে ফোঁপরা করে এক্সোটক্সিন শরীরের অত্যাবশ্যকীয় জল-সোডিয়াম-পটাশিয়াম-বাইকার্বনেটকে ঠেলে বের করে দিতে থাকে।
১৮৮৪-তে কলেরার জীবাণু আবিষ্কারের ৭৫ বছর পর শম্ভুনাথ দে চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন কখের অনুমান কতটা ভুল ছিল। নোবেল ততদিনে কখের জিম্মায়। এইডস-হেপাটাইটিসের মতো কলেরা রক্তঘটিত রোগ নয়। গবেষণাগারে কলেরার জীবাণু রক্তে প্রবেশ করিয়েও তাই কলেরার সাক্ষাৎ পাননি কখ ও তাঁর অনুগামীরা। শম্ভুনাথের অনিকেত গবেষণাপত্রটি ১৯৫৯ সালে ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৬৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার সেলেব দ্বীপপুঞ্জ থেকে কলকাতায় আগমন কলেরার এক খানদানি কুটুমের। নাম তার এল-টর বায়োটাইপ। এল-টর বায়োটাইপের শরীরে বেমালুম হাপিশ কলেরা-টক্সিন। নির্বিষ কলেরার সঙ্গে যুদ্ধে নামতে স্বভাবতই নারাজ শম্ভুনাথ। শম্ভুনাথের পড়াশোনা, গড়িবাটি হাইস্কুল থেকে মহসিন কলেজ হয়ে মেডিক্যাল কলেজ— সবটাই জলপানির টাকায়। মেডিক্যাল কলেজের প্রবাদপ্রতিম অধ্যাপক এম এন দে-র উৎসাহেই ‘লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ’-এর স্যার ক্যামেরনের কাছে শম্ভুনাথের গবেষণায় নাড়াবাঁধা। স্যার ক্যামেরন ছিলেন প্রফেসর দে-র বিশেষ বন্ধু। ইংল্যান্ডে ‘হাইড্রোকেফালাস’ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন শম্ভুনাথ। বিভিন্ন দুর্বিপাকে সে গবেষণায় দাঁড়ি পড়ল অচিরেই। প্রফেসর ক্যামেরনের পরামর্শে ‘পালমোনারি ইডিমা’ নিয়ে এমন অত্যুৎকৃষ্ট গবেষণা করলেন শম্ভুনাথ যে ১৯৪৯-এ মিলল পিএইচডি। দেশে ফেরা সে বছরই।
কলেরায় আগ্রহ উৎসাহ লন্ডনে থাকাকালীনই। দেশে ফিরে নীলরতন সরকার হাসপাতালে ‘চেয়ার অফ প্যাথলজি’। সব কলেরা রোগীর ঠিকানা তখন কেয়ার অফ শম্ভুনাথ। ১৯৫৫-তে রয়েল সোসাইটির ‘নাফিল্ড ফাউন্ডেশনে’র অর্থানুকূল্যে পুনরাগমন গ্রেট-ব্রিটেনে। ই কোলাই নিয়ে বলবেন। কানায় কানায় পূর্ণ রয়েল সোসাইটির প্রেক্ষাগৃহ। মন্ত্রমুগ্ধ একরাশ শ্রোতা। বিলেত থেকে প্রত্যাবর্তন এবার মেডিক্যাল কলেজে। ওয়েলকাম ট্রাস্টের আমন্ত্রণে শেষবারের জন্য বিলেত ভ্রমণ ১৯৬০-’৬২-তে। উপলক্ষ লন্ডন ইউনিভার্সিটির ফিজিওলজির ডিএসসি ডিগ্রি গ্রহণ।
১৯৭৮-এ ‘নোবেল ফাউন্ডেশন’ তাঁকে ৪৩তম ‘নোবেল সিম্পোসিয়াম অন কলেরা রিলেটেড ডায়ারিয়াস’-এ বক্তব্য রাখার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাল। বিষয় ই কোলাই-এর সেরোটাইপিং। শম্ভুনাথ দে-র জ্ঞান-প্রজ্ঞায় অভিভূত নোবেল কমিটি। অথচ, ১৯৫৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোটস মেডাল’ ছাড়া সারাজীবনে কোনও সম্মান জোটেনি তাঁর। ভারতের কোথাও পঠনপাঠন বা গবেষণার কাজে মিতবাক মানুষটি কখনও ডাক পাননি। নোবেল কমিটির প্রথম নিমন্ত্রণ পত্রটাও কারওর অসূয়ায় ডাঃ দে-র হাতে পৌঁছয়নি। গবেষণায় অনুদান জুটেছে ছিটেফোঁটা, পকেটের টাকা খরচ করে চালিয়েছেন গবেষণা। তাঁর জ্ঞান-দক্ষতা-পারদর্শিতা নিয়েও তোলা হয়েছে প্রশ্ন। ‘কারেন্ট কনটেন্টস’র একটি সংখ্যা ডাঃ শম্ভুনাথ দে-কে নিবেদন করবেন বলে সম্পাদক ইউজিন গারফিল্ড তাঁর সম্মতি আদায়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কোমায় আচ্ছন্ন তিনি যখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, তখন সেই চিঠি এসে পৌঁছল।
 সুভাষ মুখোপাধ্যায়
১৯৩১-এর ১৬ জানুয়ারি, হাজারিবাগে মামারবাড়িতে জন্ম তাঁর। তিনি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও ধাত্রীবিদ— ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মতো তাঁরও পিএইচডি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনিও ছিলেন প্রফুল্লচন্দ্রের মতো দৃঢ়চেতা, নিজের ক্ষমতা আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান। কর্মোদ্যোগী। অসামান্য প্রতিভাধর। ক্রান্তদর্শী।
তাঁর বিপুল কর্মকাণ্ডের মধ্যে থেকে মাত্র ৪টি বিষয়ে কিঞ্চিৎ আলোকপাতেই তাঁর অভ্রংলিহ প্রতিভার কিছুটা আঁচ মিলবে। পুরুষ হরমোন ‘টেস্টোস্টেরন’ মহিলাদের বন্ধ্যত্ব চিকিৎসায় ভীষণ কার্যকরী প্রথম তিনিই দেখালেন। মহিলাদের রজঃনিবৃত্তির পর তাদের মূত্র-নিঃসৃত হরমোন (এইচএমজি) থেকে সংগৃহীত যৌন হরমোন ‘গোনাডোট্রপিন’ ডিম্বাশয়ের সক্রিয়তা বাড়ায়। মসৃণ করে ডিম্বাণু নিঃসরণ। গর্ভবতী মহিলাদের মূত্র থেকে মেলে এইচসিজি বা ‘হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন’। শারীরবিদ্যার পাঠ্যপুস্তকে এতকাল লেখা ছিল ‘ট্রোফোব্লাস্ট’ সেল থেকে মেলে ‘এইচসিজি’। তিনি প্রমাণ করলেন, ট্রোফোব্লাস্ট নয়, এন্ডোমেট্রিয়াম বা জরায়ুগাত্রের ‘ডেসিডুয়াল সেল’ থেকে মেলে ‘এইচসিজি’। আইভিএফ বা কৃত্রিম প্রজননে দুটিই কালজয়ী আবিষ্কার।
সাতের দশকে আলট্রাসাউন্ড ছিল কপোলকল্পনা। আলট্রাসাউন্ডের বিকল্পে সুভাষ একটি প্রোবের সাহায্যে (কল্পোটমি) নিখুঁত দক্ষতায় ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে চমকে দিলেন বিশ্বকে। বর্তমানে তাঁর দেখানো পথেই আইভিএফের ডিম্বাণু সংগৃহীত হয়। মানবভ্রূণকে (ব্লাস্টোসিস্ট) ড্রাই-আইস (কঠিন কার্বন ডাই-অক্সাইড) ও তরল নাইট্রোজেনে হিমায়িতকরণ বা ‘ক্রায়োপ্রিজার্ভ’ ছিল তাঁরই মস্তিষ্ক-প্রসূত। অজ্ঞ-অর্বাচীন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা নিদান দিয়েছিলেন ৫৩ দিন হিমায়িতকরণে ভ্রূণ নাকি ৮ ইঞ্চি লম্বা হয়ে যাবে। জিনের চরিত্র যাবে পাল্টে। প্রকৃতপক্ষে হিমায়িতকরণেই সুস্থ-অবিকৃত থাকে ভ্রূণ, অটুট, অপরিবর্তিত থাকে জিন-চরিত্রও। কৃত্রিম প্রজননে ‘ক্রায়োপ্রিজার্ভ’ই বিশ্বজনীন। তিনি দেখালেন ৮টি কোষের ভ্রূণ (ব্লাস্টোসিস্ট) জরায়ুতে সবথেকে ভালোভাবে পরিপোষিত হয় যদি সেই রজঃচক্রেই নিষিক্ত ভ্রূণটিকে প্রোথিত না করে পরবর্তী কোনও রজঃচক্রে তা করা হয়। কয়েকটি স্ত্রী-হরমোনের বিরূপ প্রতিক্রিয়াকেও সহজে পাশ কাটানো যায় তাতে। ভ্রূণটির স্বাভাবিক বৃদ্ধিও ত্বরান্বিত হয়।
সুভাষবাবুর তত্ত্বাবধানে ১৯৭৮ সালের ৩ অক্টোবর ভারতের প্রথম টেস্টটিউব বেবি দুর্গা বা কানুপ্রিয়া ভূমিষ্ঠ হল। ১৯৭৮ সালের ১৯ অক্টোবর ডাঃ মুখোপাধ্যায় এই নলজাত শিশুর জন্মবৃত্তান্ত সবিস্তার বৈজ্ঞানিক অনুষঙ্গে স্বাস্থ্যদপ্তরে পাঠালেন। সুভাষের দাবিদাওয়া কতটা সত্যি জানতে তৎকালীন রাজ্য সরকার ‘দাশগুপ্ত কমিটি’ গড়ল। রিপোর্ট পরীক্ষা করে এই কমিটি রায় দিল, সবটাই বুজরুকি। একদল সরকারি তাঁবেদার, স্রেফ ক্ষমতার লোভে, তাঁদের জ্ঞানগম্মিকে বন্ধক রেখে রিপোর্ট সুভাষিত করলেন দুটি শব্দে— ‘আনবিলিভেবল’ অ্যান্ড ‘অ্যাবসার্ড’। ১৯৮১ সালের ১৯ জুন অকাল আত্মহননে ধরাধাম থেকে চিরবিদায় নিলেন ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়।
১৯৮৬ সালে ভারতের প্রথম ‘টেস্ট-টিউব বেবি’র জনক হিসাবে ডাঃ টি সি আনন্দকুমারের কপালে জুটল সরকারি স্বীকৃতি। ২০ বছর পরে ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের নলজাতক শিশুর গবেষণা প্রবন্ধের পাতা ওলটাচ্ছিলেন ডাঃ আনন্দকুমার। গভীর অভিনিবেশে ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের গবেষণা কর্মকাণ্ড অধ্যয়নের পর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেল তাঁর। সেই মুহূর্তে প্রেস কনফারেন্স ডেকে তিনি সারা পৃথিবীকে জানালেন ভুল হয়ে গিয়েছে বিলকুল। ভারতে নলজাত শিশুর প্রথম সার্থক রূপকার ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় তিনি নন মোটেই। আনন্দকুমার না থাকলে চির-বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যেতেন সুভাষ। ‘ডিকশনারি অব মেডিক্যাল বায়োগ্রাফির’ আড়াই হাজার বছরের ইতিহাসে স্যার রোনাল্ড রস, ইউ এন ব্রহ্মচারীর সঙ্গে এক পঙ্‌ক্তিতে শুভ্র-সমুজ্জ্বল যে বাঙালি, তিনি ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়।
 দিলীপ মহলানবিশ
১৯৩৪-এর ১২ নভেম্বর বাংলাদেশের বাজিতপুরে জন্ম তাঁর। ডাক্তারি পাশ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৫৮-তে। মেডিক্যালের শিশু বিভাগেই শুরু ইন্টার্নশিপ— তিনি ডাঃ দিলীপ মহলানবিশ। ১৯৬০-এ যোগ দিলেন লন্ডনের ‘এনএইচএসএ’। প্রথম ভারতীয় হিসাবে মাত্র ২৮ বছরে ‘কুইন এলিজাবেথ হসপিটাল ফর চিলড্রেনে’ রেজিস্টার। বহু নিঃসঙ্গ বিনিদ্র বরফঝরা রাত পেরিয়ে লন্ডন থেকেই ডিসিএইচ। এমআরসিপি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিদেশে হাতেকলমে কাজের অভিজ্ঞতা ব্যাগে পুরে ১৯৬৪-তে দেশে ফিরলেন দিলীপবাবু। ‘ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট’ নিয়ে শুরু করলেন কাজ বেলেঘাটা আইডিতে। ফুলের মতো নিষ্পাপ ফুটফুটে শিশুদের সূচ ফুটিয়ে কলেরার ইন্ট্রাভেনাস চালাতে বড্ড কষ্ট হতো তাঁর। বিকল্প রাস্তার সন্ধানে ব্রতী হয়েছিলেন বেশ কিছুকাল আগেই। ডায়ারিয়া আক্রান্ত বেশ কিছু শিশু আইডিতে ভর্তি হল। ন্যাজো-গ্যাস্ট্রিক রুটে ওআরএস চালানোর সুযোগ হাতে এসে অতর্কিতে ধরা দিল। কলেরা বা ডায়ারিয়ায় দ্রুত শরীর থেকে জলের সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় খনিজ লবণ বেরতে থাকে। ডিহাইড্রেশন বা জল-বিয়োজনের ফলে রক্তচাপ কমতে থাকে। জলসাম্য বজায় রাখতে পারলেই কলেরা বা ডায়ারিয়া জব্দ। নাসাপথে শিশুদের বিন্দুমাত্র যন্ত্রণা না দিয়ে নল মারফত দিলীপবাবু সরাসরি পাকস্থলীতে নিয়ে ফেললেন ওআরএসকে। রাতারাতি ফল মিলল, শিশুরা সত্বর সুস্থ হতে শুরু করল। সরকার বা শিশুদের মা-বাবার সন্দেহ-সংশয় থেকেই গেল। সূচ না ফুটিয়ে আবার ডায়ারিয়ার চিকিৎসা হয় নাকি! হঠাৎই ভীম-প্রলয়ে হাজির ১৯৭১-এর সেই কালোদিন। মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ লক্ষ ছিন্নমূল মানুষের স্রোতে বনগাঁ সীমান্ত প্লাবিত। বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থাকা মানুষের মধ্যে দেখা দিল কলেরা মহামারী। দিলীপবাবুর ওপর দায়িত্ব বর্তাল কলেরা রোগীদের বাঁচানোর। বমি আর দাস্তের পিচ্ছিল স্রোতে হাঁটু-গেড়ে বসে ‘ড্রিপ’ চালাচ্ছেন দিলীপবাবু। আচম্বিতে ইন্ট্রাভেনাসের ভাঁড়ার গেল শূন্য হয়ে। দিলীপবাবু ছুটলেন বড়বাজার। কেনা হল বস্তা বস্তা নুন-চিনি-সোডিবাইকার্ব। ১ লিটার জলে ২২ গ্রাম গ্লুকোজ বা চিনি, ৩.৫ গ্রাম নুন বা সোডিয়াম ক্লোরাইড আর ২ গ্রাম বেকিং সোডা বা সোডিয়াম বাই-কার্বনেটের অনুপম মিশ্রণে তৈরি হল জীবনদায়ী ওআরএস। ১৬ লিটারের ড্রামে কলের মুখ লাগিয়ে ওআরএসের জল-বিতরণ শুরু হল। ম্যাজিকের মতো কাজ হল। মৃত্যুহার একলাফে ৩০ শতাংশ থেকে কমে হল ৩ শতাংশ। ১৯৭১ সালের ২৪ জুন থেকে ৩০ আগস্ট দিলীপবাবু জান বাজি রেখে, নাওয়াখাওয়া ভুলে আবিশ্ব পৌঁছে দিলেন ওআরএসের জয়গাথাকে।
ওআরএসের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার কারণ একটাই— বাড়িতে খুব সহজে বানানো যায় এই মহৌষধ। নির্বিবাদে খাওয়ানো যায়। ধীমান বড়ুয়া তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য-সংস্থার বড়কর্তা। তিনি সটান চলে এলেন বনগাঁয়, দিলীপবাবুর অ-মানুষী কাজকম্ম স্বচক্ষে দেখতে। মুগ্ধ ধীমানবাবু। তৎক্ষণাৎ ওআরএসকে স্বীকৃতি দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ১৯৮০-এর মাঝামাঝি থেকে ১৯৯০-এর প্রথমার্ধ, হু-র ‘ডায়ারিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের’ মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে বিশ্বের ৩০টি দেশে বিরামহীন চরকি-পাক কাটলেন দিলীপবাবু।
সূচের পরিবর্তে জলে গোলা ওআরএসের গোটা কর্মকাণ্ডটা ১৯৭৩-এ দিলীপবাবু লিপিবদ্ধ করলেন ‘জনস হপকিনস মেডিক্যাল জার্নালে’। ল্যানসেট আভূমি প্রণত হয়ে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা আবিষ্কারের তকমায় ভূষিত করল ওআরএস-কে। ওরাল হোল সেল কলেরা ভ্যাকসিনের সফল প্রয়োগের পিছনেও মূল কারিগর দিলীপবাবু। সেটিও শোরগোল-ফেলা আবিষ্কার। আজ অশীতিপর দিলীপবাবু মনে করতে পারেন না অতীব গুরুত্বপূর্ণ সে আবিষ্কারের বিন্দুবিসর্গও। মনে করতে পারেন না যে ‘প্লসে’ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে প্রথম জ্বলজ্বলে নামটিই তাঁর।
২০০২ সালে ওআরএসের সফল প্রবর্তক হিসাবে কর্নেল ও কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে ‘পলিন’ প্রাইজে সম্মান জানিয়েছিল দিলীপবাবুকে। একই কাজের স্বীকৃতিতে, ২০০৬ সালে পেয়েছিলেন থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ‘মাহিডল অ্যাওয়ার্ড’। ‘পলিন’ প্রাইজের স্মারকটিও আজ অমিল। নিজের বাড়িতে, ১৯৯১-তে শুরু করেছিলেন ‘সোসাইটি ফর অ্যালায়েড স্টাডিজ’। ডাক্তারির ছাত্রছাত্রীরা যাতে হাতেকলমে কাজ শিখতে পারে। মিলতে পারে দিলীপবাবুর কতিপয় সার্থক উত্তরসূরি। মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই ‘সোসাইটি ফর অ্যালায়েড স্টাডিজ’। নিদারুণ স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় আজ চোখের কোণটা তাঁর ভিজে যায় বারবার। স্মিত হাসির আড়ালে ঝরে পড়ে একরাশ দলা-পাকানো অভিমান। পড়ন্ত বিকেলে জানলার ফাঁক গলে চুইয়ে আসা রোদে ডুকরে ওঠে এক কিংবদন্তি বিজ্ঞানীর অগ্নিভ প্রব্রজ্যা। শ্রান্ত মেঘেরা দূর আকাশের কোলে থমকে থেমে স্যালুট জানায় নতমস্তকে। ঘরে ফেরা পাখিরা তারস্বরে ধিক্কার জানিয়ে যায় আত্মঘাতী বাঙালির বিস্মরণের চিরাচরিত ঐতিহ্যকে।
..........................................
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : স্বাগত মুখোপাধ্যায়
28th  February, 2021
চারুলতার অন্দরমহল

‘আশ্বিনের ‘পরিচয়’ খুলে দেখলুম রুদ্রমশাই আবার আমার পিছনে লেগেছেন।... রুদ্রমশাই সাহিত্য বোঝেন কিনা জানি না; সিনেমা তিনি একেবারেই বোঝেন না। শুধু বোঝেন না নয়; বোঝালেও বোঝেন না।’ পরিচয় পত্রিকায় সত্যজিৎ রায়-অশোক রুদ্রের এই চাপানউতোরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘চারুলতা’।
বিশদ

21st  April, 2024
বিদেশে এখনও আমি ‘চারুলতা’

কতদিন হয়ে গেল। এখনও বিদেশে গেলে প্রায় কেউই আমাকে মাধবী বলে ডাকেন না। কী বলে ডাকে, জানেন? ‘চারুলতা।’ শুধু বিদেশে নয়, দেশের অনেক জায়গাতেও। আজ থেকে ৬০ বছর আগেকার কথা। তখন সবে ‘মহানগর’ ছবির শ্যুটিং শেষ হচ্ছে।
বিশদ

21st  April, 2024
অমলকে দেওয়া চারুর খাতাটা বাবা বাড়িতে বসেই ডিজাইন করেছিলেন

তখন আমার বয়স খুবই কম। ১৯৬৪ সালে ‘চারুলতা’ হয়েছিল। আমার বয়স তখন ১১ বছর। তাই স্মৃতি যে খুব একটা টাটকা, এমনটাও নয়। বাড়িতে ‘চারুলতা’ নিয়ে বাবাকে খুবই পরিশ্রম করতে দেখেছি।
বিশদ

21st  April, 2024
আমরি বাংলা ভাষা
অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়

রোজকার মতো প্রাতঃভ্রমণ সেরে চায়ের দোকানে এসে বসলেন চণ্ডীবাবু। কাগজের দিকে হাত বাড়াতে যাচ্ছিলেন। আর মধ্যেই আমাকে দেখে বলে উঠলেন—
গুড মর্নিং স্যর, হ্যাপি বেঙ্গলি নিউ ইয়ার। বিশদ

14th  April, 2024
রহস্যময় গম্ভীরা

পুরীর গম্ভীরায় জীবনের শেষ আঠারোটা বছর কাটিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। অন্তর্ধানের আগে মহাপ্রভু অন্তিমবারের মতো বের হয়েছিলেন সেখান থেকেই। সেই গম্ভীরা ঘুরে ইতিহাস-রহস্যের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার। বিশদ

07th  April, 2024
জিপিও ২৫০

বুধবারের দুপুরবেলা। দোল-হোলি পর্বের টানা ছুটি কাটিয়ে এবার ছন্দে ফেরার পালা। কিন্তু একটু বড় ছুটি পেলেই মানুষের মতো শহরটাকেও জড়িয়ে ধরে আলস্য। অফিস-কাছারি খুলতেই আড়মোড়া ভাঙছে শহর। রাস্তাঘাটে অবশ্য তেমন ভিড় নেই। বিশদ

31st  March, 2024
অন্ধকূপেই ডাকঘরের জন্ম

শহরের বুক থেকে ইংরেজদের পুরনো কেল্লার সীমানা মুছে গিয়েছে কবেই। ফিকে হয়ে এসেছে নবাব সিরাজদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ, প্রথম যুদ্ধজয় এবং অন্ধকূপ হত্যার স্মৃতি। এমনটাই যে হবে, আগেই অনুমান করতে পেরেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ইংরেজরা।
বিশদ

31st  March, 2024
নানা রঙের দোল

বারসানায় এখন পা-টুকু নিশ্চিন্তে রাখার জো নেই! দেহাতি, দক্ষিণ ভারতীয়, বাঙালি, বিদেশি কে নেই সেই বিখ্যাত ভিড়ে। প্রায় সবার মাথায় রংবেরঙের পাগড়ি। কারও হাতে আবির, তো কারও ক্যামেরা। একসপ্তাহ ধরে চলছে রঙখেলা। হোলি... লাঠমার।
বিশদ

24th  March, 2024
 ‘যত মত তত পথ’
পূর্বা সেনগুপ্ত

দক্ষিণেশ্বরের দেবালয়। বিরাট বারান্দার এক কোণের ঘরে বসে ভক্তসঙ্গে ধর্মপ্রসঙ্গ করছেন শ্রীরামকৃষ্ণ। দেবালয়ের পাঁচ টাকা মাইনের পুরোহিত হলে কি হবে...মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাণী রাসমণি থেকে তাঁর জামাই মথুরবাবু, সকলেই তাঁকে সমীহ করে চলেন। বিশদ

17th  March, 2024
ওপেনহাইমার ও যুদ্ধবাণিজ্য

কয়েক ঘণ্টার মাত্র অপেক্ষা। লস এঞ্জেলসের আলো ঝলমলে ডলবি থিয়েটারে শুরু হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফিল্মি শোবিজ—অস্কার। এবারের অস্কার হুজুগে সারা পৃথিবীর সংবাদ শিরোনামে ‘ওপেনহাইমার’। ক্রিস্টোফার নোলানের এই সিনেমার সঙ্গেই অতীতকে ফিরে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ।
বিশদ

10th  March, 2024
এলিট ইতিহাস
কলহার মুখোপাধ্যায়

সে নিজেই একটা ইতিহাস! তবু বেলা না যেতে খেলা তব গেল ঘুচে। তখন নাইট ক্লাব, হুক্কা বার, হ্যাং আউট, শপিং মলের কথা শোনালে মানুষ ভাবতো তামাশা করছে।
বিশদ

03rd  March, 2024
স্বেচ্ছামৃত্যু
 

গ্রিক ভাষায় ‘ইউ’ মানে ভালো আর ‘থ্যানেটোজ’ মানে মৃত্যু। দুইয়ে মিলে ইউথ্যানেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যু। গত বছর ভারতে আইনসিদ্ধ হয় প্যাসিভ ইউথ্যানেশিয়া। আইনত বৈধ হলেও, সেই পদক্ষেপকে ঘিরে দানা বাঁধছে সংশয়। স্বেচ্ছামৃত্যুর ইতিবৃত্ত খতিয়ে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ
বিশদ

25th  February, 2024
আ’মরি বাংলা ভাষা

আসছে আরও একটা একুশে ফেব্রুয়ারি। হোয়াটসঅ্যাপ যুগে ক্রমে গুরুত্ব হারাচ্ছে দিনটি। তবুও বাংলা ভাষা বেঁচে আছে। থাকবেও। অসম ও বাংলাদেশ ঘুরে এসে লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস। বিশদ

18th  February, 2024
সরস্বত্যৈ নমো নমঃ
কৌশিক মজুমদার

আমাদের নয়ের দশকের মফস্বলে উত্তেজনার খোরাক বলতে খুব বেশি কিছু ছিল না। বিশেষ করে আমরা যারা সেকালে ছাত্র ছিলাম, তাদের জন্য। মাস্টারমশাই আর অভিভাবকদের গণ ছাতাপেটাইয়ের ফাঁকে বুধবার সন্ধ্যায় টিভিতে চিত্রহার আর রবিবার সকালের রঙ্গোলিতে কিছু বস্তাপচা গান বাদে গোটা হপ্তাটাই কৃষিকথার আসর আর ‘খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’-এর মতো নেহাত নিরেস ছিল। বিশদ

11th  February, 2024
একনজরে
ভোট মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরম। আজ, শুক্রবার, লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। বৃহস্পতিবার আগামী পাঁচদিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের ...

লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত। ধৃতের নাম ইন্দরপাল সিং গাবা। তিনি ব্রিটেনের হাউন্সলোরের বাসিন্দা। দিল্লি থেকে ...

মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধর সংক্রান্ত মামলায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর পরিবারকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতে নির্দেশ, তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিস। ...

কথা ছিল বাড়ি ফিরে পাকা বাড়ি দেওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে আর ফেরা হল না। কফিনবন্দি হয়ে ফিরছে পরিযায়ী কিশোর শ্রমিক। কর্মরত অবস্থায় বহুতল ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট প্রভসিমরন, পাঞ্জাব ১০৭/১ (৭.৫ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:29:44 PM