বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনীরা এখন আর শুধুই ধ্যানমগ্ন নন, হাত পা ছুঁড়ে তাঁরা কুংফু বিদ্যাতেও পারদর্শী। বৌদ্ধ ধর্মে দ্রোকপা সমন্বয়ের সন্ন্যাসিনীরা নেপালে হিমালয়ের আনাচেকানাচে ঘুরে বেড়ান আর ধর্ম প্রচার করেন। তাঁরা মূলত নারী উন্নয়নের কথাই বলেন। বুদ্ধদেবের বাণী অনুযায়ী কীভাবে মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও উন্নতির কথা বলা হয়েছে, সেই প্রচারই এই সন্ন্যাসিনীদের লক্ষ্য। আর এ যুগে নারী উন্নয়নের প্রচার করতে গিয়ে তাঁরা কুংফু বিদ্যা শেখার কথাও বলেন। এখন মেয়েরা অনেকাংশেই বিপন্ন। কিন্তু নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে পুরুষের দ্বারস্থ হলে চলবে না। বরং নিজেরাই কুংফু শিখে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন মেয়েরা, এই কথাই শেখান হিমালয়ের দ্রোকপা সন্ন্যাসিনীরা। তাঁরা নিজেরাও এই বিদ্যায় সিদ্ধহস্ত। ফলে নিজেদের শিক্ষার প্রচার অনায়াসেই হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল ও  নেপালের বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে পারেন। দ্রোকপা সমন্বয়ের সন্ন্যাসিনীদের বয়স ৯ থেকে ৬০ বছর। এঁরা সকলেই কুংফু বিদ্যায় সমান পারদর্শী। হিমালয়ের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে মেয়েরা যেখানে সম্পূর্ণ রূপে পুরুষের অধীন, সেখানে গিয়ে তাঁদের মানসিকতা বদলানোর চেষ্টা  করছেন এই সন্ন্যাসিনীরা। এঁদের কাজ এতটাই ফল দিয়েছে যে তার চর্চা সুদূর ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়েছে। এবং সমাজ কল্যাণমূলক কাজের জন্য এই সন্ন্যাসিনীদের ‘ভাকলাভ হ্যাভেল হিউম্যান রাইটস’ পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাবও উঠেছে। তাঁদের কথায়, ‘প্রথমে মহিলাদের সামাজিক অবস্থান বিষয়ে শিক্ষিত করতে হয়েছে। তারপর তাঁদের বোঝাতে হয়েছে নিজেদের রক্ষার বিভিন্ন উপায়। তারও পরে তাঁদের কুংফু বিদ্যায় শিক্ষিত করে তুলতে হয়েছে। এই কাজ হয়তো খুব একটা সহজে হয়নি। তবু ক্রমাগত প্রশিক্ষণ ও প্রচারের মাধ্যমে মেয়েরা এখন অনেকেই আত্মরক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পারছেন। আর সেটাই সবচেয়ে আশার কথা।’