বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মেনোপজ কোনও সাধারণ অসুখ নয়। এর থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়াও অত্যন্ত স্বাভাবিক। আর যাঁরা ভাবেন মেয়েরা যৌবন চলে যাওয়ার কারণেই রোগগ্রস্ত হয়ে পড়েন তাঁরাও ভুল ভাবেন। রিপ্রোডাকশন নারীর ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। সন্তানধারণের ক্ষমতা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে মনের ওপর যে সেই প্রক্রিয়ার প্রভাব ফেলবে তা তো বলাই বাহুল্য। কেউ তা সহজে মেনে নিতে পারেন, কেউ বেশি ভেঙে পড়েন। এটা সম্পূর্ণই নারীর মানসিক গঠনের ওপর নির্ভর করে। ফলে নারীর মানসিক অবস্থা অনুযায়ী তাঁকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত। মেনোপজের সঙ্গে সঙ্গেই যে নারীর শরীর ও মনের সমস্যা মিটে যায় তাও নয়। মেনোপজের পরেও সমস্যা লেগেই থাকে। ওভারিতে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমতে থাকে চল্লিশের শুরু থেকেই। কারও আবার তিরিশের শেষ দিকেও তা হয়। ফলে মুড ফ্লাকচুয়েট করে, রাগ বাড়তে থাকে। ক্রমশ এগিয়ে আসতে থাকে মেনোপজের সময়। একজন নারী ভাবতে থাকেন, মেনোপজ মানে তাঁর রিপ্রোডাক্টিভ পাওয়ারটাই চলে গেল, নারীত্বের পূর্ণতা শেষ। তখন তিনি একটা ক্রাইসিসের মধ্যে পড়েন। মানসিক সংকটের শিকার হয়ে দাম্পত্য সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়ে। শরীরে গরমভাব (হট ফ্লাশ) অনুভূত হয়, হাড়ের ভিতর ক্ষয় হতে শুরু হয়, হার্ট ডিজিজ বাড়তে থাকে, রাতে ঘাম হয় খুব, কারও আবার রাতে শীত করে। কারও আবার মনঃসংযোগ ক্ষমতা কমে, মাইগ্রেন দেখা যায়, কোমরে ব্যথা, শরীরে জ্বালা ভাব, পিন ফোটানোর মতো অনুভূতি, ত্বক শুষ্ক ভাব আসে। সেই কারণেও ডিপ্রেশন হয়। সব মিলিয়ে নানা সমস্যায় জেরবার হতে হয় একজন নারীকে। মনোচিকিৎসকরা বলেন, নিজেকে এই সময় একাকী না ভেবে বরং নিজেকে নিয়ে সচেতন হোন। অনেক সময়ই হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির মাধ্যমে এই সমস্যা কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে এখন আবার এরও নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে বাস্তবটাকে মেনে নেওয়াই ভালো। অলস, কর্মহীন জীবন থেকে বেরিয়ে মেলামেশা বাড়ান, নানা সমাজসেবার কাজ, মহিলা সমিতিতে যোগ দিন, নানান অ্যাকটিভিটিতে যুক্ত থাকুন। নিজের যত্ন নিন। মেনোপজকে জীবনের নিয়ম বলে মেনে নিন। নিজের ব্যক্তিত্বই আসল। ব্যক্তিত্বের আলোতেই একজন মানুষ আলোকিত হন। বয়স বাড়লেও এই সৌম্য সৌন্দর্যই আসল। ফলে আত্মবিশ্বাস বজায় রেখে জীবনকে উপভোগ করুন। জীবনে মনের সুস্থতার বড় ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না। তাই জীবনটাকে গ্রহণ করুন। সুস্থ মন ও সুস্থ শরীরে বাঁচুন।