বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এসএমপিআই-এর কর্ণধার সম্রাট মুখোপাধ্যায় একজন ফিটনেস ফ্রিক মানুষ। তাঁর বাড়িতে রয়েছে ৪৫০ স্কোয়্যার ফুট জায়গা জুড়ে নিজস্ব অত্যাধুনিক সুদৃশ্য জিম। করোনা আতঙ্কে আজ মানুষ গৃহবন্দি। লকডাউন চলছে। ফলে এখন জিম বন্ধ। তাই কীভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাড়িতেই শরীরচর্চা করতে পারেন তাই নিয়ে তিনি নানা সহজ টিপস দিলেন। এটি ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
১. বাড়িতে যদি যোগা ম্যাট না থাকে তবে শতরঞ্জি বা পাতলা কার্পেট মাটিতে বিছিয়ে নিন। প্রথমে চিৎ হয়ে সোজা শুয়ে পড়ুন। দু’ পাশে দুটি হাত সমান ভাবে রেখে দুটি পা একসঙ্গে ৪৫ ডিগ্রিতে সোজাসুজি করে ওপরে তুলুন। যদি সেটি না পারেন তবে আগে একটি পা সোজা করে তুলে এবং নামিয়ে একই ভাবে দ্বিতীয় পাটি করুন। এটিকে লেগ রেসেস এক্সারসাইজ বলে।
২. এরপর সোজা ভাবে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবারে মাটিতে কনুইকে রেখে এবং ভর করে পাকে সোজা রেখে পায়ের টো-এর ওপর ভর করে শরীরকে সোজাসুজি রাখুন। যাতে শরীর, বুক, পেট মাটিতে না লাগে। মাথা কিন্তু সোজা সামনের দিক করে রাখতে হবে। এটিকে প্লাঙ্ক এক্সারসাইজ বলা হয়। এটি আন্তর্জাতিক একটি ব্যায়ম। হালফিলে এটি খুব জনপ্রিয় হয়েছে।
৩. উপুড় হয়ে শুয়ে কপালে হাত দুটিকে ভাঁজ করে রাখুন। এবারে প্রথমে একটি পাকে পেছন দিকে সোজা করে তুলুন। এই পাটিকে নামিয়ে আবার দ্বিতীয় পাটি একই ভাবে করুন। এটিকে রিভার্স লেগ রেসেস বলে।
৪. এটি বিশ্বখ্যাত একটি ব্যায়ম। হাঁটু ভাঁজ করে চিৎ হয়ে শুয়ে হাত দুটিকে একসঙ্গে করে মাথার পেছনে রাখতে হবে। এবারে ধীরে ধীরে নাক বা মাথাকে হাঁটু পর্যন্ত স্পর্শ করাতে হবে, যাতে পেটে চাপ পড়ে। এতে পেটের মেদ কমবে। একে ক্রানচেস এক্সারসাইজ বলে।
৫. ইনডোর এক্সারসাইজ ছাড়াও এই সময়ে আউটডোর এক্সারসাইজ মনকে প্রফুল্ল রাখে। সূর্যাস্তের পর বাড়ির ছাদে হাঁটুন। ছাদের আয়তন মোটামুটি আন্দাজ করে মনে অংক কষুন। পঞ্চাশ বছরের নীচে বয়স হলে ২কিমি হাঁটা উপকারী। তার ওপর বয়স হলে যতটা সম্ভব ছাদকে প্রদক্ষিণ করুন।
৬. ছাদের মধ্যে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে স্পট জগিং করুন। দৌড়ানোর অঙ্গ ভঙ্গিমায় হাঁটু যাতে নাভির ওপর পর্যন্ত ওঠে সেই চেষ্টা করুন।
৭. মোবাইলে ফিটনেস অ্যাপ ডাউনলোড করুন। আপনার বয়স, উচ্চতা ওজন, শারীরিক কোনও অসুবিধা আছে কি না ইত্যাদি ওই অ্যাপে দিন। হাঁটার সময় মোবাইল সঙ্গে রাখুন। সারাদিনে আপনি কতটা মেদ ঝরালেন সেটি এই অ্যাপ বলে দেবে।
৮. আপনার বাড়িতে যদি দশটি স্লেপের সিঁড়ি থাকে তবে দশ বার ওঠা নামা করুন।
৯. উল্লিখিত ব্যায়ম একের পর এক করতে হয়। সেইসময় মনকে চনমনে রাখতে কানে হেডফোন দিয়ে ভালো ভালো গান শুনুন। এতে মোটিভেশন হয়। ব্যায়মের জন্য মনোরঞ্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই ব্যায়ম অত্যন্ত কার্যকরী।
১০. শরীরচর্চার পাশাপাশি ব্যালেন্স ডায়েটের দিকে নজর দিন। অর্থাৎ এই সময়ে ভরপুর মিল খান, যাতে এনার্জি লেবেল হাই থাকে। খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, কার্বাহাইড্রেট, নানা ধরনের ডালকে সঙ্গী করুন। যেহেতু এখন সেভাবে কায়িক পরিশ্রম হচ্ছে না, তাই গরুর দুধের বদলে সয়ামিল্ক খান। ভিটামিন-সি জাতীয় ফলকে সঙ্গী করুন। যাঁদের লেবু খেলে অসুবিধা হয় তাঁরা প্রতিদিন ভিটামিন-সি ট্যাবলেট একটা করে খেতে পারেন। আমিও খাই।
সব শেষে বলি, চাকুরিজীবী মানুষ আজ বেশির ভাগই ওয়ার্ক ফম হোম-এ আছেন। তাঁদের জন্য বলি অবসাদে ভুগবেন না। এটি পরিবারকে সময় দেওয়ার উপযুক্ত সময়। ব্যস্ততার চাপে যা আমরা অনেক সময় পারি না। সময় বের করে ভালো ছবি দেখুন। ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা যদি বাড়িতে না থাকে তবে বাড়ির সকলের সঙ্গে লুডো খেলুন। এটি সকলের বাড়িতে থাকে। আমিও আমার স্ত্রী ময়নার সঙ্গে এখন সময় বের করে লুডো খেলি। খুব নস্টালজিক লাগে। এছাড়া আমার দেড় বছর ছুঁই দুই ছেলে সাগর সমুদ্রকে প্রচুর সময় দিচ্ছি।