বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
হে দুঃখকষ্টদায়িনি! তোমার অত্যাচারে সংসারের এত হাহাকার, এত মর্ম্মভেদী করুণ আর্ত্তনাদ, শান্তির নন্দনকাননে অশান্তি রাক্ষসীর উন্মাদ তাণ্ডব নর্ত্তন, ধর্ম্মের পুণ্যবেদী অধর্ম্মের ক্রীড়াভূমিতে পরিণত হইয়াছে। তোমার অত্যাচারে এ পুণ্যময়, শান্তিময়, সুখময়, সংসার অধর্ম্ম, অশান্তি, অসুখরূপ বৃশ্চিকের ভীষণ দংশন যন্ত্রণায় ‘পরিত্রাহি’ রবে চীৎকার করিতেছে। তুমি তৃষ্ণা যদি না থাকিতে, তাহা হইলে ধনবান্ই কে—আর দরিদ্রই বা কে? তুমি আছ বলিয়াই ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য আছে, তাহা না হইলে সকলেই নিজ নিজ অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকিতে পারিত। রূপপিপাসু আর রূপের তৃষ্ণায় দিগ্বিদিগ্ জ্ঞানশূন্য হইয়া ধর্ম্মের মস্তকে পদাঘাত করিয়া নরকের দ্বার উন্মুক্ত করিত না। অর্থার্থী আর অর্থের জন্য আকুল হইয়া চুরি, ডাকাতি, মিথ্যাকথা, প্রপঞ্চনারূপ বাড়বাগ্নি হৃদয়ে জ্বালিয়া দিবারাত্র দগ্ধ হইত না। রোগী আর নীরোগ হইবার তৃষ্ণায় অহরহঃ মনাগুনে দীর্ঘশ্বাসে আত্মীয়বৃন্দের সুখশান্তি হরণ করিত না। তোমার গুণের কথা কত বলিব! জগতের ইতিহাস তন্ন তন্ন করিয়া অনুসন্ধান করিলে পত্রে-পত্রে, ছত্রে-ছত্রে, তোমার গুণের কথা জ্বলন্ত অক্ষরে অঙ্কিত দেখিতে পাওয়া যায়। দেবাসুর-সংগ্রাম স্বর্গ তৃষ্ণায়, অমৃতমন্থন অমরত্বের তৃষ্ণায়, দজ্ঞযজ্ঞ শিবের অপমান তৃষ্ণায়, সুন্দোপসুন্দ ও শুম্ভ-নিশুম্ভের পতন রূপতৃষ্ণায়, রামের বনগমন কৈকেয়ীর রাজমাতা হইবার তৃষ্ণায়, রাবণ সবংশে নির্বংশ হইল রূপ-তৃষ্ণায়, ভারত-সমর রাজ্য-তৃষ্ণায়, সর্ব্বত্রই তৃষ্ণা। হে মহৈশ্বর্য্যশালিনি অনন্ত শক্তিময়ি তৃষ্ণে! তোমার প্রবল প্রতাপে ত্রিলোকের লোক কম্পিত।