বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
জন্ম এবং মৃত্যু সম্বন্ধে অজ্ঞতাই পশু এবং মানুষের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করে থাকে। একজন যথার্থ মানুষ তার নিজের সম্বন্ধে এবং তার স্বরূপ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে। সে প্রশ্ন করে, কোথা থেকে সে এই জীবনে এল এবং মৃত্যুর পর সে কোথায় যাবে। সে প্রশ্ন করে, যদিও সে দুঃখ চায় না, তবুও কেন সে ত্রিতাপ দুঃখের দ্বারা র্জজরিত হচ্ছে। জীবনের শুরু থেকে মানুষ তার জীবনের কত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে, কিন্তু জীবনের যথার্থ তত্ত্ব সম্বন্ধে সে কখনই কোন প্রশ্ন করে না। এটিই হচ্ছে পাশবিকতা। চারটি পশুপ্রবৃত্তি মানুষের মধ্যেও দেখা যায়। সে ব্যাপারে মানুষ এবং পশুর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। প্রতিটি জীবই আহার, নিদ্রা, ভয় এবং মৈথুনকে কেন্দ্র করে জীবন যাপন করে, কিন্তু মনুষ্য-জীবনেই কেবল নিত্য অস্তিত্ব এবং চিন্ময় সত্ত্বা সম্বন্ধে অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়। তাই মনুষ্য-জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে তার নিত্য অস্তিত্ব সম্বন্ধে অনুসন্ধান করা। বেদান্ত-সূত্র উপদেশ দিচ্ছে যে, সেই অনুসন্ধান এখনই করতে হবে। তা না হলে কখনই তা সম্ভব হবে না। মনুষ্য-জীবন পাওয়া সত্ত্বেও আমরা যদি আমাদের প্রকৃত স্বরূপ সম্বন্ধে অনুসন্ধান না করি, তা হলে প্রকৃতির নিয়মে আমাদের অবশ্যই আবার পশুজীবন প্রাপ্ত হতে হবে। তখন আর আমরা প্রশ্ন করতে পারব না, “আমি কে? আমি কোথা থেকে এলাম? আমি কেন এখানে কষ্ট পাচ্ছি?” তাই, জড়-জাগতিক বিষয়ে অনেক মূর্খ লোকদের যথেষ্ট উন্নত বলে মনে হলেও—অর্থাৎ আহার, নিদ্রা, ভয়, মৈথুন ইত্যাদি বিষয়ে তাদের খুব উন্নত বলে মনে হলেও প্রকৃতির নিয়মে মৃত্যুর হাত থেকে তারা কখনওই নিস্তার পেতে পারে না। জড়া প্রকৃতি সত্ত্ব, রজ এবং তম—এই তিনটি গুণের দ্বারা সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। যারা সত্ত্বগুণে জীবন যাপন করে, তারা উচ্চতর ধার্মিক জীবন প্রাপ্ত হয়; যারা রজোগুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জীবন যাপন করে, তারা জড় জগতে যেখানে রয়েছে সেখানেই আবদ্ধ হয়ে থাকে; আর যারা তামসিক জীবন যাপন করে, তারা অবশ্যই অধঃপতিত হয়ে নিম্নতর জীবন লাভ করে।