বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা আমাদের অধ্যাত্মশাস্ত্রে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। প্রথমে নামটির দিকেই আমাদের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’—এমন জিনিস আর দ্বিতীয় কিছু নেই। অনেকে আমরা ভুল করি, অনেক জায়গায় লেখার মধ্যেও ভুল করা হয়, উচ্চারণেও ভুল করে বলা হয় শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতা; কিন্তু শব্দটি হল ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’। ভাগবতগীতা আর ভাগবদ্গীতা ভাগ্বদ্ গীতায় আকাশ-পাতাল তফাৎ। কেননা ‘ভাগবত’ শব্দটি ভগবান থেকে এসেছে, অর্থাৎ ভগবান সম্বন্ধীয় যা তাই হল ভাগবত। যেমন আমাদের ‘শ্রীমদ্ভাগবত’ নামে একটি পুরাণ আছে। শ্রীমদ্ভাগবতে ভাগবানেরই সম্বন্ধে বা তাঁর সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত ভক্তজনের বিষয়ে কথা, সেজন্য বলা হয় শ্রীমদ্ভাগবত। ‘শ্রীমদ্ভাগবতগীতা’ যদি হত তাহলে এর মর্যাদা, এর মূল্য অনেকখানি কমে যেত। তার কারণ হচ্ছে, ভগবান সম্বন্ধে কিছু গান, কীর্তন, স্তুতি হয়তো থাকত শ্রীমদ্ভাগবতগীতার মধ্যে। কিন্তু এখানে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার মধ্যে শ্রীমদ্ভগবান স্বয়ং সেই গান করেছেন, এটি স্বয়ং ভগবান কর্তৃক গীত। ‘সাক্ষাৎ কথয়তঃ স্বয়ং ভগবান স্বয়ং’ যে গান রচনা করেছেন, তাই হল ভগবদ্গীতা, ‘যা স্বয়ং পদ্মনাভস্য মুখপদ্মবিনিঃসৃতা’। মহাকবি দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর একটি গানে তাই বলেছেন: ‘ভগবদ্গীতা’ গাইল স্বয়ং ভগবান সেই জাতির সঙ্গে’। ভগবান স্বয়ং পাঞ্চজন্য শঙ্খেতে যেমন কুরুক্ষেত্রের সমরাঙ্গনে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন অর্জুনকে, তেমনি তাঁর এই গানের বাণীর দ্বারাও তিনি অর্জুনকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, আত্মবিস্মৃত অর্জুনকে আবার আত্মজ্ঞান ফিরিয়ে এনে দিয়েছিলেন। সুতরাং এটা শ্রীভগবানের সাক্ষাৎ শ্রীমুখনিঃসৃত বাণী। এইখানেই এর অনুপম মহিমা—‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’ এই গ্রন্থের।