অংশীদারি কারবারে মন্দার সম্ভাবনা। যে কোনও কাজকর্মে বাধার মধ্যে উন্নতি। বৃত্তিগত শিক্ষা লাভে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ
বস্তুত নরেন্দ্র মোদির জমানায় ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ, বিভেদ-বৈষম্য, ঘৃণাভাষণ থামার কোনও লক্ষণই নেই। দেশে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের এই ন্যক্কারজনক ছবি ধরা পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থার রিপোর্টে। ‘ইন্ডিয়া হেডল্যাপ’ নামে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২৩ সালে এই প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে সংখ্যালঘুদের প্রতি নথিভুক্ত ঘৃণাভাষণের সংখ্যা ছিল ৬৬৮টি। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে। এই তিনটি রাজ্য থেকেই ঘৃণাভাষণের ৪৩ শতাংশ অভিযোগ উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে ৭৫ শতাংশ অভিযোগই উঠেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে। এই বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে মার্কিন সংস্থাটি জানিয়েছে, ইজরায়েলের সঙ্গে হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জেরেই এ দেশে ঘৃণাভাষণ বেড়ে গিয়েছে। প্রায় একই ছবি এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশকে নিয়ে। পড়শি রাষ্ট্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এই কারণে এ দেশের সংখ্যালঘুদের টার্গেট করছে হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ। দেশের গেরুয়া শাসক অবশ্য এসব রিপোর্টে আমল দিতে নারাজ।
দেশজুড়ে এমন বিভাজন-বিদ্বেষের রাজনীতি মাথাচাড়া দিলেও জনসমক্ষে উল্টো সুর গেয়ে চলেছেন মোদি। মাত্র দু’দিন আগে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের ঐক্য নিয়ে তাঁকে লম্বা-চওড়া কথা বলতে শোনা গিয়েছে। একইরকম নির্বিকারভাবে লোকসভা নির্বাচনের আগেও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমি হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করি না। যেদিন করব, সেদিন রাজনীতি ছেড়ে দেব।’ যদিও এই মোদিকেই আবার দেখা গিয়েছে, গত লোকসভা ভোটের প্রচারে কংগ্রেসের ইস্তাহারকে ‘মুসলিম লিগের দলিল’ বলে দেগে দিতে। কখনও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ওরা (বিরোধীরা) ক্ষমতায় এলে মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের (সংখ্যালঘু) হাতে তুলে দেবে। ওবিসি, এসসি-এসটিদের সংরক্ষণ কোটা কেড়ে নিয়ে তা মুসলিমদের দিয়ে দেবে। আসলে এভাবে বিভাজনই আরএসএস-বিজেপির মূল মন্ত্র। সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটি মুছে দেওয়ার চেষ্টাও হচ্ছে। এ দেশের যারা নাগরিক তারা সকলেই যেন হিন্দু—সুকৌশলে এমন প্রচারই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, ঘৃণাভাষণ, বিভাজন-বিদ্বেষকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটা চলতে থাকলে এই আগুন নেভার নয়।