পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ
তথ্যটি নিয়ে মিডিয়া চেপে ধরে নীতি আয়োগকে। সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার এনএসএসও’র তথ্য সরাসরি অস্বীকার না করে সরকারের মুখ বাঁচাতে মন্তব্য করেন যে, তথ্যটি ‘নট ভেরিফায়েড’! কিন্তু ভোটের বাজার বলে কথা। সরকারের পোড়া মুখে প্রসাধন মাখাতে কসুর করেনি মোদির পার্টি। বিজেপি প্রবল আক্রমণাত্মক ভূমিকায় নেমে রাহুলকে ‘ক্ষীণদৃষ্টি’ দেগে দিয়ে সামনে আনে ইপিএফও’র ‘জব ক্রিয়েশন ডেটা’। তার ভিত্তিতে গেরুয়া নেতৃত্ব দাবি করে, মোদির শাসনে বেকার যুবদের কর্মসংস্থানের গতি অব্যাহত। এনএসএসও’র রিপোর্টকে তারা ‘ফেক নিউজ’ বলতেও কুণ্ঠিত হয়নি! ওইসঙ্গে রাহুল সম্পর্কে বিজেপি আরও মন্তব্য করে যে, তিনি তো উত্তরাধিকার সূত্রে মুসোলিনির (ইতালির একদা একনায়ক ও ন্যাশনাল ফ্যাসিস্ত পার্টির প্রতিষ্ঠাতা) ক্ষীণদৃষ্টি পেয়েছেন। তাই ইপিএফও’র অত সুন্দর তথ্যে নজর করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
বুদ্ধি-বিবেক দিয়ে সবকিছু বিবেচনা করতে যাঁরা অভ্যস্ত, তাঁরা ভুল বা বিচ্যুতি থেকে কিছু শিক্ষা নেন। কিন্তু মোদির পার্টি ও সরকার ওই পাঠশালার ছায়াও মাড়ায়নি যে! এজন্যই তো প্রায়শ্চিত্ত দূর, দশ বছরে একটি ভুলও শুধরাবার চেষ্টা দেখা যায়নি তাদের মধ্যে। প্রকৃত পণ্ডিতদের নিরপেক্ষ পরামর্শও তারা প্রত্যাখ্যান করেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। তাই তো বেড়ে চলেছে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি, সংখ্যালঘু শ্রেণির উপর নিপীড়ন, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ভয়াবহ বৈষম্য, বিরোধীদের দুরমুশ করার জন্য কেন্দ্রের এজেন্সিরাজ এবং ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলির বুলডোজ কারবার। ইলেক্টোরাল বন্ডের মতো সর্ববৃহৎ আর্থিক কেলেঙ্কারি করেও বাহু ফুলিয়ে চলেছে পদ্ম শিবির। এত অনাচারের পরিণাম বিকাশের উপর পড়তে বাধ্য—কমে যাবে জিডিপি গ্রোথ ও মাথাপিছু আয় এবং অন্যদিকে বাড়বে বেকারত্ব। বাস্তবে সেটাই ঘটে চলেছে। সরকার হাজার চেষ্টা করেও শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারছে না। সরকারের যাবতীয় প্রচার ও পরিসংখ্যানে জল ঢেলে দিয়েছে আইএলও এবং ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের যৌথ সমীক্ষা রিপোর্ট। ‘দি ইন্ডিয়া এমপ্লয়মেন্ট রিপোর্ট ২০২৪’ বলছে, ভারতের যুবদের মধ্যে বেকারত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশে মোট কর্মহীন মানুষের মধ্যে ৮৩ শতাংশই যুব। ২০০০ সালে দেশে শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীর হার ছিল ৩৫ শতাংশ। ২২ বছরে সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ—২০২২ সালে ৬৬ শতাংশ! উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, এর মধ্যে আট বছরই গিয়েছে মোদিবাবুর ‘অমৃতকাল’। আরও ভয়াবহ খবর হল—ভারতে যত মানুষের জীবিকা রয়েছে, তার মধ্যে ৯০ শতাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রে। অথচ, ২০০০ সালের পর থেকে সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়ছিল। ২০১৮-র পর থেকে ফের উলটপুরাণের শুরু! এই রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে সার কথাটিই অবশ্য বেরিয়ে এসেছে মোদি সরকারেরই মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অনন্ত নাগেশ্বরণের মুখ থেকে, ‘সরকার হস্তক্ষেপ করলেই যে সব সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এমনটা নয়। বেকারত্ব দূর করা কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব নয়।’ সরকার বাহাদুর কালহরণ ইতিমধ্যেই যা করার করেছেন, তা কি যথেষ্ট নয়? এটাই উপযুক্ত সময়, এবার মানে মানে ‘সারেন্ডার’ করুন।