বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা বলছে, মহিলাদের উপর সংঘটিত অপরাধ ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তরপ্রদেশে বা যোগী রাজ্যে। এই সময়ে মহিলাদের উপর অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছিল ৫৯ হাজার ৫৮৩টি, যা সারা ভারতের মোট অপরাধের ১৪.৭ শতাংশ। এরপরেই জায়গা করে নিয়েছে রাজস্থান (২০১৮ পর্যন্ত যেখানে বিজেপির বসুন্ধরা রাজের রাজত্ব চলেছে)। রাজস্থানে ২০১৯-এ মহিলাদের উপর অপরাধের সংখ্যা ছিল ৪১ হাজার ৫৫০, সারা ভারতের শতাংশের হিসেবে ১০.২। এ তো সংখ্যার হিসেব। মহিলাদের উপর অপরাধের হারের বিচারেও সবার শীর্ষে আর একটি বিজেপি শাসিত রাজ্য অসম। উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাণকেন্দ্র মনে করা হয় যে রাজ্যটাকে সেখানে ২০১৯ সালে মহিলাদের উপর সংঘটিত অপরাধের হার ছিল ১৭৭.৮ (প্রতি ১ লক্ষে)। অপরাধের হারে তার নীচে ছিল রাজস্থান (১১০.৪) এবং হরিয়ানা (১০৮.৫)। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে রাজস্থানে (৫ হাজার ৯৯৭)। তারপরেই জ্বলজ্বল করছে উত্তরপ্রদেশ, অর্থাৎ যোগী রাজ্যের নাম (৩ হাজার ৬৫)। পসকো আইনে শিশুকন্যাদের উপর অপরাধ সংঘটনে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে নিন্দিত রাজ্যের নামও উত্তরপ্রদেশ (৭ হাজার ৪৪৪)। পণের দাবিতে বধূ নির্যাতনের প্রশ্নেও উত্তরপ্রদেশ বহু নিন্দিত রাজ্য (২ হাজার ৪১০)। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এনসিআরবি যে বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল তাতে উত্তরপ্রদেশের ভয়াবহ অপরাধ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ওই রিপোর্ট বলছে, উত্তরপ্রদেশে প্রতি ২ ঘণ্টায় একজন নারীকে ধর্ষণের মামলা রুজু হয়। আর প্রতি দেড় ঘণ্টায় নথিভুক্ত হয় একজন করে শিশুর উপর সংঘটিত অপরাধের ঘটনা। ২০১৮ সালের হিসেবে, দৈনিক গড়ে ১২ জন মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনা সরকারিভাবে নথিভুক্ত হয় যোগী রাজ্যে। মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অন্যসব অপরাধের কথা ধরলে ওই রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ১৬২টি অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়। ২০১৭ সালের সঙ্গে তুলনা করলে মহিলাদের উপর অপরাধের সংখ্যা উত্তরপ্রদেশে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। আর ২০১৮-এর সঙ্গে ২০১৯-এর হিসেবের তুলনা করলে যোগী রাজ্যে মহিলাদের উপর অপরাধ বৃদ্ধির হার আরও ০.৩ শতাংশ বেশি।
এর থেকে স্বতঃসিদ্ধান্তে আসা যায় যে যোগী রাজ্যে মহিলাদের উপর অপরাধে লাগাম পরাবার কোনও চেষ্টাই নেই। বিজেপির এহেন মুখ বাংলায় ভোট প্রচারে এসে দাবি করে গেলেন, বাংলাকে উত্তরপ্রদেশ বানাবেন। বলিহারি দাবি! নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ বা জে পি নাড্ডা তবু ‘সোনার বাংলা’ নির্মাণের স্বপ্ন ফেরি করছেন। তার ভিতরে খেমটা নাচের আয়োজন থাকলেও বাইরে তবু একটা ঘোমটা রয়েছে। যোগী আদিত্যনাথ এসে সেই ঘোমটাও একটানে খুলে ফেলে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন তাঁদের আসল মতলবটা—ক্ষমতায় আসার একমাসের ভিতরেই তাঁরা খেল দেখাবার জন্য হাঁকপাক করছেন। বাংলারও কোণে কোণে তাঁরা হাতরাস, উন্নাও, শাজাহানপুর, হাপুর, মউ, ভাদোহি, ফতেপুর, বদাউন, ... ক্রমাগত উপহার দিতে থাকবেন! যোগীকে ধন্যবাদ, উপযুক্ত সময়ে তিনি বাংলার মানুষকে সতর্ক, সজাগ করে দিয়ে গেলেন। মানুষই ঠিক করবেন মহিলাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতা ও বাংলাকে তাঁরা আবার বেছে নেবেন, নাকি মোদি-শাহ-নাড্ডা-যোগীদের সাধের রামরাজ্য গড়ার পক্ষে মত দেবেন।