বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ বিশাল কিছু। নিশ্চয়ই প্যাকেজের প্রয়োজন আছে। তাই লকডাউন শুরুর আগে কেন্দ্রের কাছে প্যাকেজের দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সিদ্ধান্ত নিতে মোদি সরকার প্রায় পঞ্চাশ দিন পার করে দিল! যেখানে দেশের বহু গরিব মানুষ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন, হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে অভুক্ত কিশোরীর পথেই মৃত্যু হচ্ছে, রেলের চাকায় পিষ্ট হয়ে চরম দুর্দশায় ভোগা ১৬ পরিযায়ী শ্রমিকের মর্মান্তিক পরিণতি হচ্ছে সেখানে প্যাকেজ ঘোষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্র এত দেরি করল কেন? দুঃখজনক যে, একবারের জন্যও উল্লেখ করা হল না পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গে একটি বাক্য। এমনটা নয় এই প্যাকেজের সুফল আজ থেকেই মানুষ পাবে অর্থাৎ হাতে টাকা পেয়ে যাবে। প্যাকেজ পুরোপুরি কার্যকর হতে কতদিন সময় লাগে সেটাই দেখার। আর অপেক্ষায় থাকতে হবে অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপের জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই প্যাকেজে সবাই উপকৃত হবে। যা নিয়ে ধন্দ আছে। কারণ চলতি অর্থ বছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্রায় সাড়ে তিরিশ লক্ষ কোটি টাকা খরচের কথা বলেছিলেন। ২০ লক্ষ কোটি টাকা তার বাইরে কি না, সেটা স্পষ্ট করেননি মোদি। বরং টাকার অঙ্ক বড় করে দেখাতে এর মধ্যেই রয়েছে কেন্দ্রের আগে ঘোষিত গরিব কল্যাণ প্রকল্পের এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ত্রাণের টাকাও। তাই নয়া এই আর্থিক দাওয়াইয়ের পরিমাণ বারো থেকে সাড়ে বারো লক্ষ কোটি টাকার বেশি নয়। করোনা আবহে আগেই প্যাকেজের জন্য জিডিপি’র ১০ শতাংশ ধার্য করার দাবি তুলেছিল অনেক রাজ্য। যার সামনের সারিতে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ। বহু দেশে জিডিপি’র ১০ শতাংশ বা তার বেশি ধার্য করার ঘোষণা হয়েছে আগেই। তবে তারা সরকারের প্যাকেজ ও ব্যাঙ্কের ত্রাণ একসঙ্গে মিলিয়ে ঘোষণা করেনি। যে প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর স্বাবলম্বী হওয়ার কথা বলছেন, তিনি অদ্ভুতভাবে রাজ্যগুলির আর্থিক ভিত মজবুত করার জন্য বাড়তি বরাদ্দের কোনও কথা বলেননি। রাজ্যের বকেয়া পাওনা মেটানোর ব্যাপারে তাঁর নীরবতা এই দু’র্দিনে অদ্ভুতই ঠেকে। করোনা মোকাবিলায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি করেছিলেন। সে পথে না হেঁটে প্যাকেজের ঘোষণা করে তিনি কৌশলী পদক্ষেপই নিলেন। রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে তাদের পাওনা আছে ৫২ হাজার কোটি টাকা। প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে না দিয়ে এভাবে বঞ্চনা চালালে রাজ্য ঘুরে দাঁড়াবে কী করে? একবিংশ শতককে ভারতের করতে হলে রাজ্যগুলির আর্থিক ভিতও মজবুত করতে হবে। শুধু ভোকাল টনিকে সে কাজ হবে না। এখন দেখার, কেন্দ্রের এই প্যাকেজ আত্মনির্ভর ভারত গঠনের পক্ষে কতটা সহায়ক হয়।