বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
দুর্গাপুজোয় যেসব সামগ্রী লাগে, তার মধ্যে অন্যতম দেবী ঘট। এছাড়াও আই ভাঁড়, জাগ প্রদীপ, মাটির প্রদীপ, ধুনুচি সহ বিভিন্ন মাটির সামগ্রী পুজোর অন্যতম অঙ্গ। যদিও মাটির জিনিসের চাহিদা আগের তুলনায় অনকটাই কমেছে, দাবি মৃৎশিল্পীদের। বিশেষ করে পুজো কমিটিগুলি এখন তামা-পিতলের দেবী ঘটের দিকে ঝুঁকেছে। উলুবেড়িয়ার যেসব জায়গায় মাটির সামগ্রী তৈরি হয়, তার মধ্যে বাগান্ডা অন্যতম। এই এলাকার একাধিক পরিবার শুধু পুজোর সামগ্রী নয়, সারা বছরই মাটির বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে। এটাই এদের জীবিকা। মাটির জিনিসের ব্যবসা করেন উত্তম পাল। কথা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, কয়েক বছর আগেও দুর্গাপুজোর আগে দিনরাত এক করে কাজ করতে হতো। এখন সেইসব অতীত। আগে প্রতিটি পুজো কমিটি মাটির তৈরি দেবী ঘট ব্যবহার করত। এখন অনেকেই তামা বা পিতলের দেবী ঘট ব্যবহার করায় মাটির ঘটের চাহিদা কমছে। তিনি জানান, সাধারণত সাইজ অনুযায়ী ১০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় দেবী ঘট বিক্রি হলেও, মাটির ঘট যেহেতু একবার ব্যবহার করা যায়, সেই কারণে অনেকেই তামা বা পিতলের দিকে ঝুঁকছে। তাঁর মতে, একবার একটু বেশি দাম দিয়ে তামা বা পিতলের ঘট কিনে নিলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। সেকারণে অনেকেই মাটির ঘট থেকে সরে আসছেন। শুধু মাটির ঘট নয়, প্রদীপ থেকে রান্নাপুজোর হাঁড়িতেও থাবা বসাচ্ছে পিতল-তামা। ফলে আগামীদিনে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখাই দায়। তিনি বলেন, শুধু পুজোর সামগ্রী নয়, আগে মণ্ডপসজ্জায় মাটির সামগ্রী ব্যবহার হলেও বর্তমানে তার চাহিদাও তলানিতে ঠেকেছে।
অন্যদিকে, পুজোয় মাটির সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকা প্রসঙ্গে প্রতিমা পাল বলেন, বংশ পরম্পরায় এই কারবার চলে এলেও বর্তমানে মাটির দাম বেড়ে যাওয়ায় জিনিসের দামও বাড়ছে। ফলে ক্রেতারা দাম দিয়ে ক্ষণস্থায়ী জিনিসের পরিবর্তে স্থায়ী জিনিসের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে আমাদের বাজার কমছে।
অন্যদিকে মাটির জিনিস তৈরির কারিগর পালপাড়ার বাসিন্দা নিরাপদ পাল বলেন, বিভিন্ন জিনিসের পারিশ্রমিক আলাদা। তবে একটি দেবী ঘট বানালে মজুরি মেলে তিন টাকা। আগে সারাদিনে ১০০-১৫০ দেবী ঘট বানালে কোনওক্রমে সংসার চলে যেত। এখন চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমেছে। ফলে আমাদের আয়ও পড়তির দিকে। ফলে বাধ্য হয়েই আমাদের অন্য জিনিস বানানোর দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পরিশ্রম বেশি হলেও আয় সেভাবে হচ্ছে না।