বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এই পুজো শুরুর ইতিহাস আজও অমলিন। জমিদার পরিবারে কোনও পুত্রসন্তান ছিল না। ব্রজেন্দ্রলাল দাস অনেক সাধনা করে মা দুর্গার স্বপ্নাদেশে পুত্র সন্তানলাভ করে। মহালয়ার দিন দাস বাড়ি আলো করে ভূমিষ্ঠ হন ব্রজেন্দ্রলাল দাসের পুত্রসন্তান দুর্গাচরণ দাস। সেই থেকেই পুজোর শুরু। ব্রজেন্দ্রবাবুর হাতেই বাড়িতে শিব পার্বতীর সপরিবারে পুজো শুরু হয়। তারপর তাঁর পুত্র দুর্গাচরণ দাস ও বর্তমান বংশধররা দুর্গামন্দিরে পুজোর আয়োজন করেন। জমিদারি না থাকলেও এখনও নিয়ম-নীতি মেনেই পুজো হয়ে আসছে। ছ’দিন ব্যাপী এই পুজোয় অষ্টমীর দিন বিশেষ বলি প্রথার প্রচলন রয়েছে। মহাপঞ্চমীতে পুজো শুরু হয়। ষষ্ঠীর দিন ঘট বসে। সপ্তমীতে দামোদরের ঘাট থেকে কলাবউ স্নান করিয়ে নিয়ে আসা হয়। পুজোর দিনগুলিতে রোজই চণ্ডীপাঠ করা হয়। তবে অষ্টমীর দিন প্রথা মেনে পুজো ও বলির প্রথা চালু রয়েছে। দাস পরিবারে প্রথম থেকেই মণ্ডা বলির প্রচলন রয়েছে। প্রতিবার অষ্টমীর পুজোর সময় দুর্গামন্দিরের উপর শঙ্খচিল উড়ে বেড়ায়। দশমীর দিন রীতি মেনেই উমাকে বিসর্জন দিয়ে বিদায় জানানো হয়। একসময় বর্ধমান রাজ পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় দাসবাড়ির এই পুজো মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হতো। তবে কালের নিয়মে রাজার আমল শেষ হয়েছে। অবলুপ্তি ঘটেছে জমিদারি প্রথারও। এই অবস্থায় পুজোর আয়োজনেও কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে এই পুজোর টানে ভিনরাজ্যে বা বিদেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা প্রতিবছরই আসেন। তবে করোনা আবহে কেউই আসতে পারেননি। রাজ আমলের পুজোর ধুমধামের কথা স্মৃতিচারণ করলেন এখনকার পরিবারের সদস্যরা।এই পরিবারের বর্তমান বংশধর শিবশঙ্কর দাস বলেন, বর্ধমান রাজ পরিবারের অধীনে আমাদের জমিদারি ছিল। আমার দাদু ব্রজেন্দ্রলাল দাসের সঙ্গে রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। পুজোর সময় আমাদের বাড়িতে তোসাখানাতে তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজ বিজয়চাঁদ বেশ কয়েকবার এসেছেন। পুজোর দু’মাস আগে থেকেই বাড়িতে শিবদুর্গার মূর্তি গড়ার কাজ শুরু হয়। আগে কৃষ্ণনগর থেকে কারিগর আসতেন। এখন বর্ধমানের কারিগর দিয়েই মূর্তি গড়া হয়। ১৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। নিয়ম করে ১০৮টি পদ্ম দিয়ে মায়ের পুজো ও ১০৮ টি প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করা হয়। অষ্টমীর দিন মণ্ডা বলি দেওয়ার রীতি আজও চালু রয়েছে। জৌলুস অনেক কমলেও পুজোর কোনও প্রথার অবলুপ্তি হয়নি।