শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
এদিন বিকেল ৩টে নাগাদ পেট্রকেমে পৌঁছন জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হলদিয়ার মহকুমা শাসক আর লক্ষ্মণ পেরুমল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব ফ্যাক্টরিজ দেবায়ন দে এবং ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আগুনের উৎসস্থল নিকাশি ড্রেনের এলাকা তাঁরা ঘুরে দেখেন। ওই ড্রেনের মধ্যে জমে থাকা অতি দাহ্য তরলে ওয়েল্ডিংয়ের ফুলকি ছিটকেই আগুন লাগে। সেখানে জমে থাকা প্রচুর পরিমাণ অতিদাহ্য তরলই বিপত্তির কারণ বলে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে জানিয়েছেন ফ্যাক্টরি ইনসপেক্টর। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফের সেই ড্রেনে জমতে শুরু করেছে অতিদাহ্য তরল। এনিয়ে রীতিমতো উষ্মাপ্রকাশ করেন জেলাশাসক। এতবড় দুর্ঘটনার পরও কোন ত্রুটির কারণে ওই তরলের লিকেজ হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে পেট্রকেমের ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
জেলাশাসক বলেন, পেট্রকেম কর্তৃপক্ষকে সেফটি নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে প্রতিমাসে পেট্রকেম ও রাজ্য সরকারের দমকল বিভাগের যৌথ সার্ভে করা হবে কারখানায়। কারখানার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা যথাযথ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এক্সপার্ট সংস্থাকে দিয়ে থার্ড পার্টি অডিট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলা বা আপৎকালীন ব্যবস্থা ঠিক রয়েছে কি না, সেজন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর মকড্রিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই বিষয়টি নজরদারি করবেন মহকুমা শাসক।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার পেট্রকেমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হলেও কোনও প্রাণহানি বা জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কিছুদিন আগে প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ মকড্রিল হয়েছিল, তার সুফল হিসেবে গতকাল দ্রুত আগুন আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়েছে। বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে পেট্রকেম রেহাই পেয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০০৯সাল থেকে ২০২১সাল পর্যন্ত পেট্রকেমে ৭-৮টি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে ১৫-১৬জনের বেশি শ্রমিক ও কর্মী মারা গিয়েছেন। মঙ্গলবার অগ্নিকাণ্ডের পর পেট্রকেমের কাছে দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট এবং ঘটনার সময়কালীন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত রিপোর্ট চাইলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব ফ্যাক্টরিজ। সেজন্য আপাতত পেট্রকেমের নতুন পাওয়ার প্ল্যান্টের কনভেয়ার সিস্টেমের কাজকর্ম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিকাশি ড্রেনে কীভাবে এত পরিমাণ অতিদাহ্য তরল জমা হল, সবার অলক্ষ্যে কিংবা কোথা থেকে তা এল, বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে পেট্রকেমকে। ফ্যাক্টরি ইন্সপেক্টর দেবায়ন দে বলেন, অতিদাহ্য ওই তরলের চরিত্র ‘পাইরোফোরিক’ অর্থাৎ বাতাসের সংস্পর্শে এলেই জ্বলে ওঠে। ফলে এত বিপজ্জনক তরল একটি ড্রেনের মধ্যে জমা হওয়ার ঘটনা সাধারণ বিষয় নয়। ওই তরলের কেমিক্যাল অ্যানালিসিস রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। একটি ২০০মিটার দৈর্ঘ্যের চওড়া ড্রেনের মধ্যে তা দীর্ঘদিন ধরে জমা হয়েছিল, কিন্তু কেউ খেয়াল করেনি।