শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক : ‘আত্মশাসন’ পর্বের মধ্যেই অনেকে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছটফট করছেন। তাঁদের কথা ভেবেই দীঘায় বেশকিছু হোটেলে বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। গত ২৬ মে সাইক্লোনের ধাক্কায় দীঘা তছনছ হয়ে গিয়েছে। টিভিতে দীঘার দৃশ্য অনেকেই দেখেছেন। তাই বদলে যাওয়া দীঘাকে দেখার জন্য অনেকেই অস্থির। সেই সুযোগকে হাতছাড়া করতে চাইছেন না কিছু হোটেল মালিক।এই মুহূর্তে ২০ শতাংশ হোটেলে বুকিং শুরু হয়েছে বলে দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন। যদিও প্রকৃত সংখ্যাটা আরও বেশি।ওল্ড দীঘার একটি গেস্ট হাউসের নাম করেই সেখানে বুকিং শুরু হয়েছে বলে ফেসবুকের বর্ধমান(পূর্ব ও পশ্চিম) পেজে পোস্ট করা হয়েছে। নন এসি রুম ভাড়া ৫০০ টাকা। ওই গেস্ট হাউসের কর্ণধার হরিপদ দেবনাথ বলেন, আমাদের গেস্ট হাউসে এখনও পর্যটকরা আছেন। ১৬ জুনের পরও আসা যাওয়া করবেন। দীঘায় আসা এবং যাওয়াটা এই মুহূর্তে নিজের দায়িত্বে। এখানে সমুদ্রস্নান ছাড়া বিনোদনের সমস্ত উপকরণ আছে। সারাদিন ঘুরে বেড়াতে পারবেন। লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া নতুন দীঘাকে দেখার সুযোগ পাবেন।স্টেশন লাগোয়া নিউ দীঘার এক হোটেলের কর্ণধার অশোক চন্দ বলেন, ১৩ জুন থেকে বুকিং শুরু করেছি। দু’-তিনজন করে পর্যটক আসছেন। তবে, এখনও কেউ বুকিং করেনি। আসা যাওয়া নিয়ে সমস্যার কারণে পর্যটকরা দ্বিধায় আছেন। বিধিনিষেধ ১ জুলাই পর্যন্ত না বাড়ালে হয়তো বুকিংয়ে ব্যাপক সাড়া মিলত। তবে, আমরা পর্যটকের অপেক্ষায় আছি।২৬ মে সাইক্লোনের পর দীঘার চেহারা বদলে গিয়েছে। চারিদিকে ধ্বংসের চিত্র। শ্রীহীন দীঘার টানেই পর্যটকরা আসছেন। হোটেল মালিকরাও বুকিং শুরু করে পর্যটকদের সুবিধা করে দিতে চান। ওল্ড দীঘা এবং নিউ দীঘায় অনেক হোটেলে বুকিং শুরু হয়েছে। নিয়মিত প্রাইভেট গাড়িতে পর্যটকরা আসছেন। বেশিরভাগ পর্যটকই সারাদিন ঘুরে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ থেকেও যাচ্ছেন। এই মুহূর্তে সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা আছে। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সমুদ্রস্নান করায় দিন তিনেক আগে তাজপুরে কয়েকজন পর্যটককে আটক করা হয়। ১ জুন ওল্ড দীঘায় সি-হক ঘোলা ঘাটে সমুদ্রস্নানের সময় ডুবে দু’জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, কিছু হোটেলে বুকিং শুরু হয়েছে। তবে, পরিবহণ স্বাভাবিক না হলে পর্যটকদের আসার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। সাইক্লোনে মন্দারমণি, শঙ্করপুর ও তাজপুর একেবারে লণ্ডভণ্ড। রাজ্যের নানা প্রান্তের বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন এবং দল ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এই এলাকার দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। একটু সময় বের করে তাঁরা দীঘা, তাজপুর ও শঙ্করপুরে ঘুরে যাচ্ছেন। সোমবার কৃষ্ণনগর থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী বিবেকানন্দ পণ্ডা ত্রাণসামগ্রী বিলি বণ্টনের কাজে দীঘায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দীঘার এতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটা চোখে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।