বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রানাঘাটের বাসিন্দা রবীন্দ্র গবেষক শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিষ্ণু চক্রবর্তী নিঃসন্দেহে বৃহত্তর অর্থে রানাঘাটের গর্ব। তাঁর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক আজ কারও অজানা নয়। কিন্তু এই মহান মানুষটিকে নিয়ে তেমন চর্চা তেমন হয়নি। বিস্মৃতির অনেকটাই অতলে তিনি। তাঁর স্মৃতি রক্ষার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন। এবারও করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্ধ রয়েছে গ্রন্থাগার। অনেকেই বলেন, ইচ্ছে থাকলেও বিষ্ণু চক্রবর্তীকে নিয়ে রবীন্দ্র জয়ন্তীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, বিষ্ণুবাবু বাবার অকাল মৃত্যুর পর বড় ভাই কালীপ্রসাদের সঙ্গে কলকাতায় গিয়ে সঙ্গীতকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি হসলু খাঁ ও দেলওয়ার খাঁয়ের কাছ থেকে ধ্রুপদ এবং মিঞা মিরনের কাছে খেয়াল শেখেন। কলকাতাতেই তাঁর সঙ্গে রাজা রামমোহন রায়ের পরিচয় হয়। সেই সময় রামমোহনের ব্রাহ্মসমাজ স্থাপনের পর ‘সমাজ মন্দির’এর নিয়মিত গায়ক হয়ে উঠেছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের। পরবর্তী সময়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির সঙ্গীতাচার্য হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন।
ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গীত শিক্ষা দিতেন বিষ্ণুবাবু। তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সঙ্গীত শিখিয়েছিলেন রানাঘাটের ভূমিপুত্র এই সঙ্গীত সাধক। যদিও শিক্ষক হিসেবে তাঁকে কখনোই স্বীকৃতি দেননি বিশ্বকবি। তবে বিষ্ণুবাবু দ্বারা কবিগুরু নিজে প্রভাবিত হয়েছিলেন একথা তাঁর বিভিন্ন লেখনীতে প্রকাশ পেয়েছে।
১৯২১সালে একটি সভায় রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘বাল্যকালে স্বভাব দোষে আমি যথারীতি গান শিখিনি বটে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে গানের রসে আমার মন রসিয়ে উঠেছিল। তখন আমাদের বাড়িতে গানের চর্চার বিরাম ছিল না। বিষ্ণু চক্রবর্তী ছিলেন, সঙ্গীতাচার্য। হিন্দুস্তানি সঙ্গীতে তিনি ওস্তাদ ছিলেন। অতএব ছোটবেলায় যেসব গান সর্বদা আমার শোনা অভ্যাস ছিল, সে শখের দলের গান নয়, তাই আমার মনের কালোয়াতি গানের ঠাঁই আপনাআপনি জমে উঠেছিল’। বলার অপেক্ষা রাখে না এই স্বীকারোক্তি বিষ্ণু চক্রবর্তীর প্রতি রবীন্দ্রশ্রদ্ধা অর্পণ।
বিষ্ণু চক্রবর্তীর স্মৃতি রক্ষার্থে গ্রামের সংস্কৃতিপ্রেমী অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে মিউজিয়ামের দাবি জানিয়েছেন। নবনির্বাচিত রানাঘাটের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী বলেন, বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতি চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের দাবি পূরণের চেষ্টা করব। বিষ্ণু চক্রবর্তীর পটচিত্র। -নিজস্ব চিত্র