বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শান্তিনিকেতন থানার গোয়ালপাড়ায় তৎপরতার সঙ্গে চলছে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ। সকাল-বিকেল চলছে গুড় তৈরির কাজ। স্বাদে এবং গন্ধে বরাবরই জনপ্রিয় এখানকার গুড়। তাই প্রতিবছর শীতের মরশুমে চাহিদা থাকে তুঙ্গে। বিয়ের মরশুমে মিষ্টির দোকানদারদের ভিড় জমে যায়। কিন্তু, এবছর চিত্রটা একেবারেই আলাদা। করোনার আবহে খেজুর গুড়ের বিক্রি নেই বললেই চলে। লকডাউনের শুরু থেকেই শান্তিনিকেতন প্রায় পর্যটকশূন্য। গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসও। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সবে শুরু হয়েছে শনিবারের হাট। কিন্তু পর্যটক সেভাবে আসছে না এখনও।
নদীয়া থেকে এসে এখানে খেজুর গুড় তৈরি করেন আসমত শেখ। গোয়ালপাড়া এলাকাতেই ১৬০টি খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন তিনি। মরশুমের জন্য গাছপ্রতি দিতে হয়েছে ১৫০টাকা। শীতে তিনি প্রায় ১০ কুইন্টাল গুড় তৈরি করেন। আসমত জানালেন, অক্টোবর মাসেই শান্তিনিকেতনে চলে আসি। এরপর শুরু হয় গাছ পরিচর্যা। শুকনো পাতাই রস থেকে গুড় তৈরির জ্বালানি। নভেম্বরের শেষে শীত পড়তেই পাওয়া যায় উৎকৃষ্ট মানের খেজুর রস। সেই রস সংগ্রহের জন্য দুপুরবেলায় প্রতিটি গাছে একটি করে হাঁড়ি টাঙানো হয়। প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে ভোর ৪টে থেকে শুরু হয় রস সংগ্রহের কাজ। সাতসকালেই খেজুরের রস ফুটিয়ে গুড় এবং পাটালি তৈরি হয়। এবছর ঝোলাগুড় বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৯০ টাকা কেজি দরে। পাটালি বিকচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা কেজি। যদিও বিক্রিবাটা বেশ কম। তবে, তার জন্য দাম কমানো সম্ভব নয়। কারণ খরচ উঠবে না।
গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ হাজরাও খেজুরগুড় তৈরি করেন। তিনি এবার মোট ২০০টি খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন। রস নামছে, গুড়ও হচ্ছে। কিন্তু খদ্দেরের দেখা নেই। কোপাই নদী সংলগ্ন শিহালাই গ্রামেও রয়েছে বহু খেজুর গাছ। অন্যান্য বছর শীতের সকালে পর্যটকরা বেড়াতে এসে অন্তত একবার রস, গুড় কিংবা পাটালির সন্ধানে ঢুঁ মারেন এখানে। অনেকেই বাড়ির জন্য সংগ্রহ করে নিয়ে যান টাটকা খাঁটি গুড়। কিন্তু করোনা এসে পুরো ছবিটাই বদলে দিয়েছে। বাজার মন্দা। একমাত্র ভরসা স্থানীয়রাই। কিন্তু তাঁরা আর কত গুড় কিনবেন! তবু আশা ছাড়ছেন না ব্যবসায়ীরা। আপাতত তাঁরা তাকিয়ে আছেন বর্ধমান-রামপুরহাট শাখায় ট্রেন চলাচলের দিকে। তাঁদের আশা, বুধবার থেকে ট্রেন চললেই চেনা ছন্দে ফিরবে শান্তিনিকেতন। অচেনা রসিকের দেখা মিলবে ‘গুড়পাড়া’য়।