বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে নবাবি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন মোতিঝিল মসজিদ। মসজিদের সামনে প্রায় সাড়ে ছ’শো বিঘা জায়গাজুড়ে অশ্বক্ষুরাকৃতি ঝিল রয়েছে। নবাব আলিবর্দির খাঁর জামাই নওয়াজেস খাঁ এই ঝিলটি খনন করান। নবাবি আমলে মোতি অর্থাৎ মুক্তো চাষ হতো বলে ঝিলটি মোতিঝিল নামে পরিচিত হয়। নবাবি শাসনের অবসানের পর থেকে ঝিলটি পরিচর্চাহীন হয়ে পড়ে ছিল। পানায় ভর্তি থাকত ঝিলটি। বাম জমানা পর্যন্ত ঝিলটির কোনও পরিচর্যা হয়নি। সংস্কার এবং অবহেলায় বিশালাকার ঝিলটি বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হওয়ায় শীতে পরিযায়ী পাখিদের দেখা মিলত না। কোনও বছরে পাখিদের দল এলেও দু’-একদিন পরেই অন্যত্র চলে যেত। বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ঝিল সংলগ্ন জমিতে অত্যাধুনিক পার্ক প্রকৃতিতীর্থ গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর দেশ-বিদেশের পর্যটক মিলিয়ে ১৫লক্ষাধিক পর্যটক প্রকৃতি তীর্থে ঘুরতে আসেন। পাশাপাশি ঝিলটিরও সংস্কার করা হয়। ঝিল আগাছা ও কচুরিপানা মুক্ত হতেই গত কয়েক বছর ধরে শীতের মরশুমে পরিযায়ী পাখির দল ঝিলে আসতে শুরু করেছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি সংখ্যায় পরিযায়ী পাখি এসেছে। প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন দল ঝিলে নামছে। কখনও ঝিলের জলে আবার কখনও পাড়ে রোদে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত পাঁচ-ছ’বছর ধরে শীতের সময় পাখি আসছে। তবে সংখ্যাটা অনেক কম থাকায় এত বড় ঝিলে পাখিদের সেভাবে বোঝা যেত না। পাখির দল নামলে বা উড়লেই বোঝা যেত। এবছর অনেক পাখি এসেছে। ঝিলের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পাড়ে দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পাখি দেখতে কচিকাঁচারা সকাল থেকেই ঝিলের পাড়ে ভিড় জমাচ্ছে। তবে পাখি শিকারিরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। হাজার হাজার মাইল দূর থেকে আসা পাখিদের একটা অংশ চোরা শিকারিদের হাতে মারা পড়ে। তাই পাখি শিকারিদের হাত থেকে শীতের অতিথিদের রক্ষা করতে নজরদারি শুরু করেছে স্থানীয় যুবকরা। স্থানীয় যুবক সেলিম খান বলেন, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঝিলের চারপাশে নজরদারি চালাচ্ছি। ঝিলের আশপাশে কোনও অপরিচিতকে দেখতে পেলেই জেরা পর্ব চলছে। একটি পাখিকেও চোরা শিকারিদের হাতে মরতে দেব না, এই প্রতিজ্ঞা নিয়েছি। পরিবেশবিদ তথা জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক অনুপ সেনগুপ্ত বলেন, এবছর লকডাউনের ফলে অনেকদিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবেশের দূষণ মাত্রা অনেকটাই কম। ঝিলের কিছুটা দূর দিয়েই লালগোলা-শিয়ালদহ শাখার রেল লাইন গিয়েছে। সাড়ে সাত মাস ধরে ট্রেন বন্ধ ছিল। উপযুক্ত পরিবেশের জন্য দলে দলে পরিযায়ী পাখি আসছে।