নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর ও সংবাদদাতা, রানাঘাট: এবার করোনা আক্রান্ত হয়ে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর মৃত্যু হল। রানাঘাট শহরের ১১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর নাম শ্যামলী বসু(৫৯)। তিনি স্থানীয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বেশকিছু সামাজিক কাজেও যুক্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছনোর পরই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নদীয়া জেলায় এদিন আরও ১৫৯জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কৃষ্ণনগর শহরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গেল। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত শহরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৫১৩। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন নার্স রয়েছেন। বিজেপির নদীয়া জেলা সভাপতি আশুতোষ পালও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রানাঘাটের মৃত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় ১০-১২দিন ধরে তিনি শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দিনচারেক আগে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে রানাঘাটের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে সোমবার সকালে কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন রাতেই সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতার স্বামী এবং ছোট মেয়েও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা রানাঘাট পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য পবিত্রকুমার ব্রহ্ম সহ মৃতার সংস্পর্শে আসা বেশ কয়েকজনের সোয়াব টেস্ট করানো হয়েছে। যদিও এখনও তাঁদের রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে কৃষ্ণনগর-১ ও কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের ১৮জন করে, শান্তিপুর ব্লকের ১৩জন, কৃষ্ণনগর পুরসভার ১২জন, কালীগঞ্জ ব্লকের ১১জন, নাকাশিপাড়া ব্লকের ন’জন, শান্তিপুর পুরসভা, কুপার্স ক্যাম্প এলাকা, চাকদহ ও চাপড়া ব্লকের সাতজন করে রয়েছেন। এছাড়া কৃষ্ণনগর-২ ও হরিণঘাটা ব্লকের ছ’জন করে, হরিণঘাটা পুরসভার পাঁচজন, নবদ্বীপ পুরসভা ও নবদ্বীপ ব্লকের চারজন করে, কল্যাণী ও রানাঘাট পুরসভা, তাহেরপুর নোটিফায়েড এলাকা ও রানাঘাট-১ ব্লকের তিনজন করে, চাকদহ পুরসভা ও করিমপুর-১ ব্লকের দু’জন করে এবং বীরনগর পুরসভা, রানাঘাট-২, হাঁসখালি, করিমপুর-২ ও তেহট্ট-২ ব্লকের একজন করে রয়েছেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর পক্ষে অসীম সাহা বলেন, অবস্থা অনেকটাই সংবেদনশীল। অনেকের মধ্যে এবার ভয় ঢুকতে শুরু করেছে। এদিন বড় দোকানগুলি অনেকাংশে ফাঁকা ছিল। এখনও মানুষ সচেতন হলে অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। এদিন রানাঘাট শহরের ১৭নম্বর ওয়ার্ডের এক প্রসূতি এবং ১৬নম্বর ওয়ার্ডের একই পরিবারের দু’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রানাঘাটের চৌরঙ্গী এলাকার সমবায় ব্যাঙ্কের সমস্ত কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গত ১২ অক্টোবর থেকে ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। অবশেষে বুধবার থেকে ব্যাঙ্কের সুস্থ হওয়া কর্মীদের নিয়ে শাখাটি খোলা হচ্ছে। শুক্রবার প্রথমার্ধ পর্যন্ত ব্যাঙ্কের ওই শাখা খোলা থাকবে। এরপর পুজোর ছুটির পর পুনরায় ব্যাঙ্কের পরিষেবা স্বাভাবিক হবে। রানাঘাট-১ ব্লকের আনুলিয়া, পায়রাডাঙা ও হবিবপুর এবং রানাঘাট-২ ব্লকের দত্তপুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার একজন করে বাসিন্দার সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। শান্তিপুর শহরের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন।