বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
গত ৪ মে বর্ধমান শহরের সুভাষপল্লিতে একজন নার্স করোনায় আক্রান্ত হন। তিনিই শহরের প্রথম করোনা আক্রান্ত। তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাসে বর্ধমান শহরে মাত্র চার জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। জুন মাসে ছ’জন। কিন্তু, জুলাইয়ে রেকর্ডহারে সংক্রমণ বেড়েছে। জুলাইয়ে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে বর্ধমান শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা ১৪০ জন। আগস্ট মাসের শুরু থেকে বর্ধমান শহরে করোনা সংক্রমণ আরও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আগস্ট মাসের ১ তারিখ ৪ তারিখ পর্যন্ত মাত্র চারদিনে ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, শহরে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৪টি ওয়ার্ড সংক্রামিত। তাই আক্রান্তের সংখ্যাও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।
গত ২১ জুলাই সরকারিভাবে বর্ধমান শহরে প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। ২১ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত এই ১৫ দিনে বর্ধমান শহরে ১৫ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৬ জন। অর্থাৎ প্রায় ২০০ জন। এই ১৫ দিনে বর্ধমান শহরে গড়ে প্রতিদিন ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে। যা গোটা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। মঙ্গলবার পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট ২৫ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ জনই বর্ধমান শহরের। বাকি ১০ জন জেলার অন্যান্য জায়গার বাসিন্দা। তাই শহর নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
সংক্রমণ রুখতে বর্ধমান শহর সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ৫ আগস্ট থেকে সাতদিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন করার পরিকল্পনা করেছিল জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সেই ভাবনার কথা জানিয়েও ছিলেন। কিন্তু, সেই ভাবনা শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। বুধবার জেলার এক আধিকারিক বলেন, আপাতত জেলায় স্থানীয়ভাবে কোনও লকডাউন হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের ঘোষিত লকডাউনগুলি হবে। আগামী সপ্তাহে জেলার লকডাউন নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও বর্ধমান শহরে এখনও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। বাজারে ভিড় উপচে পড়ছে। সামাজিক দূরত্বও উধাও। স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি, গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে সকলকেই সতর্ক হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। তা না হলে বিপদ এড়ানো সম্ভব নয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) রজত নন্দা বলেন, বর্ধমান শহরের সংক্রমণ রুখতে আমরা একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছি। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা শহরের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন। সংক্রামিত এলাকায় আরও বেশি করে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বাড়ানো হচ্ছে। শহরের কোথায় কোথায় বেশি প্রকোপ হচ্ছে, স্বাস্থ্যদপ্তর তার তালিকাও তৈরি করছে। আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।